বাংলাদেশে স্বাধীন সাংবাদিকতার সীমাবদ্ধতার কারণেই খোলা চিঠি: প্রটেক্ট ইউনূস  

বাংলাদেশে স্বাধীন সাংবাদিকতার সীমাবদ্ধতার কারণেই খোলা চিঠি: প্রটেক্ট ইউনূস   

 

নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে আচরণ নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বরাবর সম্প্রতি খোলা চিঠি লিখেছিলেন ৪০ জন বিশ্বনেতা। যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্রকাশিত প্রভাবশালী ওয়াশিংটন পোস্ট পত্রিকায় (০৭ মার্চ) চিঠিটি প্রায় পূর্ণ-পাতা জুড়ে প্রকাশিত হয়েছিল। এরপর প্রতিবেশী দেশ ভারত সহ নানান দেশের প্রভাবশালী বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন গুরুত্ব দিয়ে প্রকাশ করেছিল।

তবে, বিজ্ঞাপন হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের খ্যাতনামা পত্রিকায় ওই খোলা চিঠি প্রকাশ কিছু সমালোচনারও জন্ম দিয়েছে। বিশেষ করে অনেকেই প্রশ্ন করছেন, ওই খোলা চিঠিটি কেন পত্রিকাতে বিজ্ঞাপন হিসেবে প্রকাশ করা হলো? এমন প্রশ্নের জবাব দেওয়া হয়েছে 'প্রটেক্ট ইউনূস ডট ওয়ার্ড প্রেস ডট কম' ওয়েবসাইট থেকে। 'খোলা চিঠিটি প্রকাশের পর বাংলাদেশ এবং সারা বিশ্ব থেকে অসাধারণ প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করা গেছে' উল্লেখ করে সেখানে লেখা হয়েছেঃ স্বভাবতই এর বিরুদ্ধে কিছু সমালোচনাও হয়েছে। এগুলোর মধ্যে একটি হলো এমন- ওয়াশিংটন পোস্টের কোনো সাংবাদিক রিপোর্ট করার পরিবর্তে কেন চিঠিটি পত্রিকাটিতে টাকা দিয়ে বিজ্ঞাপন হিসেবে প্রকাশের প্রয়োজন পড়লো? ভাবখানা এমন যে, প্রফেসর ইউনূসকে হয়রানি এবং আরও ব্যাপকভাবে বললে বাংলাদেশের মানবাধিকার (পরিস্থিতি) নিয়ে উদ্বেগ সংবাদযোগ্য বা গুরুত্বপূর্ণ নয়।

'এ ধরনের কথা স্পষ্টতই অযৌক্তিক' মন্তব্য করে প্রটেক্ট ইউনূস লিখেছেঃ প্রথমত, ইকোনমিস্ট এবং ফাইন্যান্সিয়াল টাইমস সহ নামকরা সব আন্তর্জাতিক মিডিয়া আউটলেটগুলো এই বিষয়গুলো নিয়ে লিখেছে। দ্বিতীয়ত, ওয়াশিংটন পোস্ট এবং অন্যান্য মিডিয়া কোম্পানিগুলোতে এগুলো ব্যাপকভাবে ছাপা না হওয়ার কারণ হচ্ছে, ভিসার জন্য স্বাধীন বিদেশি সাংবাদিকদের প্রায় সব আবেদনই প্রত্যাখ্যান করছে বাংলাদেশের সরকার। বাংলাদেশ সফর না করে বাংলাদেশ সম্পর্কে রিপোর্ট করাটা সত্যিই চ্যালেঞ্জিং। (দ্য ফাইন্যান্সিয়াল টাইমস এর দিল্লি ব্যুরো প্রধান কোনোভাবে ভিসা পেতে সক্ষম হয়েছিলেন। এই প্রত্যাশা ছিল যে তিনি "মেইড ইন বাংলাদেশ" উইক ২০২২ সম্পর্কে "পজিটিভ" রিপোর্ট করবেন। ভারতে বাংলাদেশ দূতাবাসের একজন কর্মকর্তা স্পষ্টভাবেই এমন অনুরোধ করেছিলেন, যেটি তার আর্টিকেলের অংশ হিসেবে রিপোর্ট করা হয়েছিল।)

প্রটেক্ট ইউনূস মনে করে: বাংলাদেশ যদি বিদেশি সাংবাদিকদের জন্য নিজেকে উন্মুক্ত করে দেয়, সেক্ষেত্রে আর্টিকেলের সংখ্যা অবশ্যই বাড়বে। এভাবে, সম্ভবত তারা স্থানীয় সাংবাদিকদের ভয় দেখানোও বন্ধ করতে পারে। রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডারস এর প্রেস ফ্রিডম ইনডেক্সে ১৮০ টি দেশের মধ্যে ১৬২ তম স্থান অর্জনের চেয়ে আরো ভালো কিছু অর্জনে যা অবদান রাখতে পারে। রোদ হচ্ছে সেরা জীবাণুনাশক এবং এই মুহূর্তে বাংলাদেশের রোদের বেশ প্রয়োজন। বৃহত্তর উন্মুক্ততা ৪০ জন বিশ্বনেতা যে ধরনের খোলা চিঠি লিখেছেন, স্বাক্ষর করেছেন, প্রেরণ করেছেন এবং প্রচার করেছেন তার প্রয়োজনীয়তা কমিয়ে দেবে।-মানবজমিন