৫ জেলায় ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত ৫

৫ জেলায় ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত ৫

ঢাকা, ২০ মে (জাস্ট নিউজ) : বরিশাল, ফেনী ও ময়মনসিংহে পুলিশের সঙ্গে কথিত ‘বন্দুকযুদ্ধে’ ৩ জন নিহত হয়েছে। এ সময় দুই কনস্টেবল আহত হয়েছে। শনিবার দিবাগত রাতে এ বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটে।

বরিশাল
বরিশাল সদর উপজেলায় গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ অজ্ঞাত পরিচয়ে এক যুবক (৩৮) নিহত হয়েছেন। এ সময় ঘটনাস্থল থেকে একটি পাইপগান, একটি রামদা, একটি চাপাতি, ৮ রাউন্ড গুলির খালি কার্তুজ উদ্ধার করা হয়েছে বলে দাবি করেছে পুলিশ।

রবিবার ভোররাতে শায়েস্তাবাদ ইউনিয়নের দক্ষিণ চরআইচা গ্রামের বটতলা বাজার সংলগ্ন এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের কাউনিয়া থানার ওসি নুরুল ইসলাম-পিপিএম জানান, গত কয়েকদিন আগে দক্ষিণ চরআইচা গ্রামের আ. হক হাওলাদারের বাড়িতে ডাকাতির ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় কাউনিয়া থানায় একটি মামলা হয়, যা তদন্ত করছে মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। এছাড়াও ইতিপূর্বে বেশ কিছু ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে শায়েস্তাবাদে।

এলাকায় আরো ডাকাতির ঘটনা ঘটতে পারে এমন গোপন সংবাদের ভিত্তিতে শায়েস্তাবাদ এলাকায় পুলিশি নজরদারী বাড়ানো হয়।

শনিবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে শায়েস্তাবাদ সংলগ্ন নদী থেকে আলো দেখতে পেয়ে ডিবি পুলিশের একটি দলের সন্দেহ হয়। তারা কাছাকাছি এগিয়ে গেলে ডাকাত সদস্যরা ডিবি পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি বর্ষণ করে। এসময় ডিবি পুলিশও পাল্টা গুলি চালায়। কিছু সময় বাদে ডাকাত সদস্যরা পালিয়ে যায়।

পরে ঘটনাস্থলের পাশে একটি লাশ পরে থাকতে দেখা যায়। যার বয়স আনুমানিক ৩৮ বছর হবে।

ওসি বলেন, এ ঘটনায় ডিবি পুলিশের এসআই দেলোয়ার, কনস্টেবল রফিক ও হাফিজ আহত হন। তাদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

এদিকে শায়েস্তাবাদ ইউনিয়ন চেয়ারম্যান আরিফুজ্জামান মুন্না জানান, নিহত ডাকাত সদস্যকে স্থানীয়রা কেউ চিনতে পারেননি। তবে কয়েকদিন আগে আ. হক হাওলাদারের বাসায় যে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে সে সময় এই যুবককে তিনি দেখেছিলেন বলে জানিয়েছেন।

ময়মনসিংহ
ময়মনসিংহে পুলিশের সঙ্গে কথিত ‘বন্দুকযুদ্ধে’ বিপ্লব নামে এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন।

শনিবার দিবাগত রাতে শহরের চরপাড়া এলাকায় গনশার মোড়ে এ ঘটনা ঘটে।

পুলিশের বলছে, বিপ্লব শহরের শীর্ষ সন্ত্রাসী ও মাদক ব্যবসায়ী ছিলেন। তিনি ১০-১২টি মামলার আসামি। বিপ্লবের লাশ তল্লাশি করে ২০০ গ্রাম হেরোইন, ২০০টি ইয়াবা, তিনটি গুলির খোসা এবং ২টি ছুরি উদ্ধার করা হয়।

রবিবার ভোরে ময়মনসিংহ জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আশিকুর রহমান জানান, বন্দুকযুদ্ধের সময় পুলিশ কনস্টেবল রাশেদুল ও কাওছার আহত হন। তাদের ময়মনসিংহ পুলিশ লাইনস হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

ওসি আরো জানান, রমজান মাসে শহরে মাদক ছড়িয়ে দিতে মাদকের চালান ভাগাভাগি করছিলেন বিপ্লব ও তার সহযোগীরা। খবর পেয়ে রাত সোয়া ২টায় জেলা গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল চরপাড়া এলাকার গনশার মোড়ে অভিযান চালায়।

পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে মাদক ব্যবসায়ীরা তাদের লক্ষ্য করে গুলি চালায়। পুলিশও আত্নরক্ষার্থে পাল্টা গুলি ছোড়ে। এ সময় বিপ্লব গুলিবিদ্ধ হন এবং অন্য মাদক ব্যবসায়ীরা পালিয়ে যান। আহত বিপ্লবকে উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

ফেনী
ফেনীর ছাগলনাইয়ায় পুলিশের সঙ্গে কথিত ‘বন্দুকযুদ্ধে’ আলমগীর হোসেন (৩২) নামে এক যুবক নিহত হয়েছেন। নিহত আলমগীর উপজেলার চিহ্নিত মাদক বিক্রেতা বলে দাবি পুলিশের।

নিহত আলমগীর পাঠাননগর ইউনিয়নের পূর্ব পাঠান গড় এলাকার আবদুস সালাম ভূইঁয়ার ছেলে।

শনিবার দিবাগত রাত দেড়টার দিকে উপজেলার পাঠাননগর ইউনিয়নের পশ্চিম পাঠাননগর এলাকায় এ ‘বন্দুকযুদ্ধ’ হয়।

পুলিশ জানায়, গোপন সূত্রে পুলিশের কাছে খবর আসে ওই এলাকায় বড় ধরনের একটি মাদকের চালান রয়েছে। এ সংবাদের ভিত্তিতে রাত ১টার দিকে অভিযান চালানো হয়।

পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে মাদক বিক্রেতা আলমগীর ও তার দল পুলিশকে লক্ষ্য গুলি ছোড়ে। আত্মরক্ষার্থে পুলিশ পাল্টা গুলি ছোড়ে। এক পর্যায়ে মাদক বিক্রেতারা পালিয়ে গেলেও আলমগীরকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় উদ্ধার করে পুলিশ।

পরে ফেনী আধুনিক সদর হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক আলমগীরকে মৃত ঘোষণা করেন।

অভিযানের সময় পুলিশ মাদকের ওই আস্তানা থেকে একটি বন্দুক, ৩ রাউন্ড গুলি, ১শ’ বোতল ফেন্সিডিল ও ১ হাজার পিস ইয়াবা উদ্ধার করেছে।

ছাগলনাইয়া থানার পরিদর্শক (ওসি) এম মোর্শেদ পিপিএম জানান, নিহত আলমগীরের বিরুদ্ধে ছাগলনাইয়া থানায় বিভিন্ন অভিযোগে ৯টি মামলা রয়েছে। তিনি উপজেলার চিহ্নিত ইয়াবার ডিলার ও ফেন্সিডিল ব্যবসায়ী ছিলেন।

দিনাজপুর
দিনাজপুরের বিরলে পুলিশের সাথে কথিত ‘বন্ধুকযুদ্ধে’ মাদক ব্যবসায়ী গাল কাটা বাবু (৪০)নিহত হয়েছে। এ সময় আহত হয়েছে আরিফুল ও শহিদুল ইসলাম নামে পুলিশের দু’সদস্য। তাদের দিনাজপুর এম.আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

নিহত মাদক ব্যবসায়ী গাল কাটা বাবু বিরল উপজেলার তেঘরা নারায়ণপুর গ্রামের মৃত আব্দুল ওহাবের ছেলে।

শনিবার রাত সাড়ে ৩টায় দিনাজপুর-বিরল উপজেলা সড়কের ২ নং ফরক্কাবাদ ইউপি’র সাবদাপাড়া নার্সারী এলাকায় ঘটনাটি ঘটেছে। ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ টু-টু বোর রাইফেল সদৃশ্য একটি বন্ধুক, ৪টি ককটেল, ২টি সামুরাই ও ১৯৩ পিস ফেন্সিডিল উদ্ধার করেছে বলে জানিয়েছে। তার বিরুদ্ধে ৯টি মামলা রয়েছে।

বিরল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল মজিদ সরকার জানায়, ফেন্সিডিলের চালান যাচ্ছে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বিরল থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে মাদক ব্যবসায়ী গাল কাটা বাবু ও তার সহযোগিতা পুলিশের উপর অতর্কিত হামলা চালায়। এ সময় পুলিশ আত্মরক্ষার্থে পাল্টা গুলি চালালে গাল কাটা বাবু (৪০)নিহত হয়। এ সময় আহত হয়েছে, পুলিশের দু’কনস্টেবল আরিফুল ও শহিদুল ইসলাম। তাদের দিনাজপুর এম. আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

নিহত কুখ্যাত মাদক ব্যবসায়ী গাল কাটা বাবু’র লাশ সুরত হাল শেষে ময়না তদন্তের জন্য দিনাজপুর এম.আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে।

যশোর
যশোরে দুই দল সন্ত্রাসীর ‘বন্দুকযুদ্ধে’ অজ্ঞাতপরিচয় (৩৫) এক যুবক নিহত হয়েছেন। শনিবার দিবাগত রাতে যশোর-ছুটিপুর সড়কের সুজলপুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

নিহতের মুখমণ্ডল গুলিতে বীভৎস হওয়ায় চেনার উপায় নেই। তবে তার পরনে একটি সাদা রঙের ওপর স্ট্রাইপ লুঙ্গি রয়েছে।

যশোর কোতয়ালী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আজমল হুদা গণমাধ্যমকে জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে রাতে জানতে পারি, শহরতলীর সুজলপুর এলাকায় মাদক বিক্রেতাদের দু’পক্ষের মধ্যে গোলাগুলি হচ্ছে।

তাৎক্ষণিক পুলিশের একটি টিম ঘটনাস্থলে গেলে তারা পালিয়ে যায়। এ সময় ঘটনাস্থলে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় একজনকে পড়ে থাকতে দেখে তাকে উদ্ধার করে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে নিলে দায়িত্বরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

তিনি আরো জানান, ঘটনাস্থল থেকে ৫০০ পিস ইয়াবা, একটি ওয়ান শ্যুটারগান, এক রাউন্ড গুলি ও ৪ রাউন্ড গুলির খোসা উদ্ধার করা হয়েছে।

 

(জাস্ট নিউজ/এমআই/০৯৪০ঘ.)