অধিকারের প্রতিবেদন

৫ মাসে বিচারবহির্ভূত হত্যা ২২২

৫ মাসে বিচারবহির্ভূত হত্যা ২২২

ঢাকা, ১ জুন (জাস্ট নিউজ) : চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে মে মাস পর্যন্ত বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন ২২২ জন। এর মধ্যে মে মাসেই বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন ১৪৯ জন। মানবাধিকার সংগঠন অধিকার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য প্রকাশ করেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জানুয়ারি মাসে ক্রসফায়ারে নিহত হয়েছেন ১৮ জন। গুলিতে একজন। ফেব্রুয়ারিতে ক্রসফায়ারে ছয় ও গুলিতে একজন।

মার্চে ক্রসফায়ারে ১৭ ও নির্যাতনে একজন। এপ্রিলে ক্রসফায়ারে ২৮ এবং নির্যাতনে একজন। পেছনে তিন মাসের রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে মে মাসে। মে মাসে ক্রসফায়ারে নিহত হয়েছেন ১৪৭ এবং নির্যাতনে মৃত্যুবরণ করেছেন দুজন। ১৫ই থেকে ৩১শে মে পর্যন্ত মাদকবিরোধী অভিযানের নামে ১২৭ জন ব্যক্তিকে বিচারবহির্ভূতভাবে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে।

মাদকবিরোধী অভিযানে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ মৃত্যুর ঘটনা বেড়েই চলেছে বলে দাবি করেছে অধিকার। র‌্যাব ও পুলিশের দাবি নিহতরা সবাই মাদক ব্যবসায়ী। কিন্তু কিছু কিছু নিহতের স্বজনরা বলেছেন যে, নিহত ব্যক্তি মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত নন। কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহতদের মধ্যে চট্টগ্রামে হাবিবুর রহমান নামে এক সবজি বিক্রেতাকে ভুলক্রমে হত্যা করা হয়েছে বলে পরিবারের দাবি। এছাড়া নেত্রকোনায় আমজাদ হোসেন নামে এক ছাত্রদল কর্মীকে ও ঝিনাইদহে রফিকুল ইসলাম নামে এক যুবদল নেতাকে হত্যা করা হয়েছে বলে পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ পাওয়া গেছে। রাজনৈতিক কারণে তাদের হত্যা করা হয়েছে বলে বিএনপি দাবি করেছে।

বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের বিরুদ্ধে মানবাধিকার সংস্থাসমূহের সমালোচনার মধ্যেই কিছু কিছু ক্ষেত্রে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা দাবি করেছে যে, মাদক ব্যবসায়ীদের দুপক্ষের মধ্যে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ কয়েকজন মাদক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছেন। কিন্তু যেখানে মাদকবিরোধী এই অভিযানের নামে হত্যাযজ্ঞ চলছে এবং ১০ হাজারের বেশি মানুষকে আটক করা হয়েছে এবং মাদক ব্যবসায়ীরা নিজ এলাকা থেকে অন্যত্র পালিয়ে যাওয়ার খবর বের হয়েছে, সেখানে মাদক ব্যবসায়ীদের নিজেদের মধ্যে বন্দুকযুদ্ধের মাধ্যমে নিহত হওয়ার বিষয়টি প্রচার করা আইন প্রয়োগকারী সংস্থার একটি নতুন ধরনের কৌশল বলে দাবি অধিকারের।

অধিকারের তথ্যানুযায়ী মে মাসে র‌্যাব, পুলিশ, ডিবি পুলিশ এবং কোস্ট গার্ডের হাতে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন ১৪৯ জন। তাদের মধ্যে ১৪৭ জন ক্রসফায়ারে নিহত হয়েছেন। এছাড়া এসময়ে পুলিশ ও ডিবি পুলিশের নির্যাতনে মারা গেছেন দুজন। নিহত ১৪৯ জনের মধ্যে একজন যুবদল নেতা, একজন ছাত্রদল কর্মী, একজন পূর্ববাংলার কমিউনিস্ট পার্টির (লাল পতাকা)’র নেতা, একজন ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য, একজন ওয়ার্ড কাউন্সিলর, একজন নিরাপত্তাকর্মী, একজন সবজি বিক্রেতা, তিনজন হত্যা মামলার সন্দেহভাজন আসামি, দুজন বিভিন্ন মামলার অভিযুক্ত আসামি এবং ১৩৭ জন কথিত অপরাধী ও মাদক ব্যবসায়ী।

(জাস্ট নিউজ/একে/২৩৪৩ঘ.)