মদ খেয়ে এএসপির মাতলামি, পিটিয়ে পুলিশে দিল জনতা

মদ খেয়ে এএসপির মাতলামি, পিটিয়ে পুলিশে দিল জনতা

রাজশাহী, ৩ জুন (জাস্ট নিউজ) : মদ্যপান করে মাতলামির অভিযোগে রাজশাহী জেলা পুলিশের একজন অতিরিক্ত পুলিশ সুপারকে (এএসপি) গণপিটুনি দিয়ে পুলিশের কাছেই সোপর্দের চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটেছে।

তবে এ ঘটনার পর রাজশাহী মহানগর পুলিশের (আরএমপি) রাজপাড়া থানা থেকে সুমিত চৌধুরী নামের ওই এএসপিকে জেলা পুলিশের কর্মকর্তারা অত্যন্ত গোপনে ছাড়িয়ে নিয়ে যান বলে জানা গেছে।

শুক্রবার দিবাগত রাতে এ ঘটনা ঘটে। তবে খবরটি জানাজানি হয় শনিবার, যখন পুলিশের এই কর্মকর্তাকে শৃঙ্খলা বহির্ভূত আচরণের কারণে তাৎক্ষণিক বরখাস্ত করে বদলি করা হয়েছে নৌ-পুলিশে। তিনি রাজশাহী জেলা পুলিশের বিশেষ শাখার এএসপি হিসেবে কর্মরত ছিলেন।

তার বদলির বিষয়ে রাজশাহীর পুলিশ সুপার (এসপি) মো. শহীদুল্লাহ রবিবার গণমাধ্যমকে বলেন, ‘গত ২৮ মে পুলিশ সদর দপ্তর থেকে এএসপি সুমিত চৌধুরীকে নৌ-পুলিশে বদলির আদেশ আসে। কিন্তু এর মধ্যেই গত কয়েকদিনে শৃঙ্খলাভঙ্গজনিত কিছু অস্বাভাবিক ঘটনা ঘটান তিনি। ফলে শনিবারই তাকে রাজশাহী জেলা থেকে স্ট্যান্ড রিলিজ করা হয়েছে।’

পুলিশের সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানায়, এএসপি সুমিত চৌধুরীর বিরুদ্ধে অফিসে বসে মাদক সেবন, মাদক ব্যবসায়ীদের সঙ্গে নিবিড় যোগাযোগ রক্ষা ও অধীনস্তদের সঙ্গে চরম দুর্ব্যবহার করাসহ আরো কয়েকটি গুরুতর অভিযোগ ছিল। এসব অভিযোগের কারণে তাকে নৌ-পুলিশে বদলি করা হয়। বদলির এই আদেশ হাতে পাওয়ার পর আরো বেপরোয়া হয়ে ওঠেন সুমিত চৌধুরী। এর মধ্যে তিনি এক এসপির সঙ্গে খারাপ আচরণ করেন বলেও অভিযোগ ওঠে।

এদিকে রাজপাড়া থানা পুলিশের একটি সূত্র জানায়, শুক্রবার দিনগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে সুমিত চৌধুরী মদ্যপান করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের সামনে মাতলামি করছিলেন। এ সময় কয়েকজন পথচারী ও স্থানীয় দোকানদারের সঙ্গেও খারাপ আচরণ করেন তিনি। তাই তারা সুমিত চৌধুরীকে গণপিটুনি দিতে শুরু করেন। অবশ্য তারা পুলিশের এই কর্মকর্তাকে তখন চিনতে পারেননি।

গভীর রাতে রাস্তার ওপর হইচয়ের খবর পেয়ে রাজপাড়া থানার দায়িত্বরত কর্মকর্তা ব্রজ গোপাল কর্মকার একদল পুলিশ নিয়ে ঘটনাস্থলে যান এবং জনরোষ থেকে এএসপি সুমিত চৌধুরীকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যান। তখন এ খবর পেয়ে জেলা পুলিশের কর্মকর্তারা রাজপাড়া থানায় গেলে ভোররাতে তাদের হাতে সুমিত চৌধুরীকে হস্তান্তর করা হয়।

রাজপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত ওসি মশিউর রহমান জানান, ওই রাতে কিছু ঝামেলার খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। পরে একজন পুলিশ কর্মকর্তাকে উদ্ধার করে থানায় আনা হয়। ভোররাতের দিকে বিষয়টির নিষ্পত্তি হয়।

এএসপি সুমিত চৌধুরী তার বিরুদ্ধে অভিযোগ অস্বীকার করেন। এমনকি কৌশলে এড়িয়ে যান রাজপাড়া থানায় নিয়ে যাওয়ার বিষয়টি। তার দাবি, তিনি এমন কিছু করেননি যাতে পুলিশের ভাবমূর্তি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তাকে সরাতেই এসব প্রচার করা হয়েছে বলে দাবি এ পুলিশ কর্মকর্তার।

 

(জাস্ট নিউজ/একে/২০৩৩ঘ.)