ঈদ শেষে স্বস্তিতে ফিরছেন মানুষ

ঈদ শেষে স্বস্তিতে ফিরছেন মানুষ

ঢাকা, ১৯ জুন (জাস্ট নিউজ) : ঈদের ছুটি শেষে ঢাকায় ফিরতে শুরু করেছেন কর্মজীবী মানুষ। সোমবার বাস, লঞ্চ ও ট্রেনে চড়ে বিপুলসংখ্যক মানুষ রাজধানীতে পৌঁছেছেন। তবে যাত্রা ছিল স্বস্তির। সড়কপথে তেমন যানজটের খবর পাওয়া যায়নি। বেশিরভাগ ট্রেন নির্ধারিত সময়ে এসে পৌঁছেছে। বাস, লঞ্চ ও ট্রেনে চিরায়ত উপচে পড়া ভিড় দেখা যায়নি। এ কারণে নিরাপদেই মানুষ ঢাকায় ফিরছেন।

পরিবহন সংশ্লিষ্টরা জানান, এখনও অনেক শিল্প-কারখানা, মার্কেট, বিপণিবিতানসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় ঢাকামুখী মানুষের চাপ কম রয়েছে। আগামী দু-এক দিন পর এ চাপ বাড়তে শুরু করবে। বিশেষ করে বৃহস্পতি ও শুক্রবার ঢাকাগামী যাত্রীচাপ বাড়বে।

এদিকে সোমবার রাজধানীর প্রায় সব সড়কে ছিল ফাঁকা। অল্পসংখ্যক যান চলাচল করতে দেখা গেছে। বেশিরভাগই ব্যক্তিগত গাড়ি। নগরীর গণপরিবহনেও তেমন যাত্রী ছিল না। কোথাও কোনো যানজট দেখা যায়নি। সর্বত্রই ঈদের আমেজ বিরাজ করেছে। ফাঁকা ঢাকায় মনের আনন্দে ঘুরেছেন অনেকেই। শহরের চিরচেনা রূপে ফিরতে আরও কয়েকদিন অপেক্ষা করতে হবে।

এছাড়া ঢাকায় ফেরার পাশাপাশি উল্টো চিত্রও আছে। ঈদের পর ছুটিতে অনেকেই গ্রামে যাচ্ছেন।

বরিশাল থেকে ঢাকায় আসা যাত্রী শান্তা ইসলাম বলেন, লঞ্চে যাত্রীচাপ ছিল না। অর্ধেকের মতো কেবিনে (প্রথম শ্রেণী) যাত্রী ছিল না। তবে মাঝরাতে চাঁদপুরে ঝড়োবৃষ্টিতে আতঙ্কে ছিলাম। ঢাকায় এসে খুব সহজেই সিএনজি পেয়েছি। ভাড়া চেয়েছে সহনীয়। তিনি বলেন, ঈদের পরপরই যাত্রীচাপ কম থাকায় এমন স্বস্তিতে আসতে পেরেছি।

তবে উত্তরবঙ্গের কয়েকটি পয়েন্টে যানজটে পড়েছেন বলে জানিয়েছেন যাত্রীরা। ঠাকুরগাঁও থেকে সপরিবারে ঈদের ছুটি কাটিয়ে আসা ব্যাংক কর্মকর্তা আবদুল হাকিম বলেন, অফিস খুলেছে, তাই চলে আসতে হল। রোববার সন্ধ্যা ৭টায় বাসে উঠেছি আর সোমবার বেলা ১০টায় ঢাকায় পৌঁছলাম। তিনি বলেন, টাঙ্গাইলসহ কয়েকটি পয়েন্টে রাস্তা খারাপ হওয়ায় সেসব স্থানে থেমে থেমে যানজট হচ্ছে।

হানিফ পরিবহনের জেনারেল ম্যানেজার মো. মোশাররফ হুসেইন বলেন, সব রুটের বাসই ঢাকায় যাত্রী নিয়ে নির্বিঘ্নে আসছে। এসব গাড়িতে যাত্রী থাকুক বা না থাকুক আবার নিজ নিজ গন্তব্যে পাঠিয়ে দিচ্ছি, যাতে ঢাকামুখী যাত্রীদের নিয়ে আসতে পারে।

ঢাকা নদী বন্দরে (সদরঘাট) কর্মরত বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) উপ-পরিচালক বলেন, সোমবার বিকাল ৪টা পর্যন্ত দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন জেলা থেকে ৭০টি লঞ্চ যাত্রী নিয়ে ঢাকায় এসেছে। একই সময় ৩০টি ছেড়ে গেছে। সোমবার গভীর রাত পর্যন্ত শতাধিক লঞ্চ ছেড়ে যাবে বলে ধারণা তার। তিনি বলেন, এর আগের দিন রোববার ঢাকায় এসেছিল ৬৬টি লঞ্চ। ওই দিন ১০৩টি লঞ্চ ঢাকায় ছেড়ে গিয়েছিল।

তবে ঈদের আগের দিন বাড়ি ফিরতে অনেকেই ভোগান্তির শিকার হয়েছিলেন বলে জানান যাত্রীরা। তারা বলেন, ফেরার সময় তুলনামূলক স্বস্তিতে আসতে পারলেও যাওয়ার সময় বাড়তি ভাড়া গুনতে হয়েছে। বিশেষ করে রাজধানীর হানিফ ফ্লাইওভারের নিচে গুলিস্তানের দুই পাশে সড়ক দিয়ে চলাচলকারী ঢাকা-মাওয়া, ঢাকা-দাউদকান্দি, ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ, ঢাকা-নরসিংদীসহ স্বল্পপাল্লার যাত্রীরা মহাসংকটে পড়েন।

ওইসব গাড়িতে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করা হয়। ঢাকা-দাউদকান্দি-গজারিয়া চলাচলকারী বাসে সাধারণ সময়ে ভাড়া ৮০ টাকা হলেও ওই সময়ে প্রত্যেক যাত্রীর কাছ থেকে আদায় করা হয় ২০০ টাকা করে। যাত্রীরা প্রতিবাদ করলে তাদের নাজেহাল হতে হয়েছে।

মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া উপজেলার বাসিন্দা শাহআলম খান অভিযোগ করেন, ঈদের আগের দিন ঢাকা মেট্রো জ-১৪-২১৭৬ নম্বরের মিনিবাসে দূরের বা কাছের যে কোনো গন্তব্যে ২০০ টাকা ভাড়া আদায় করেছে। এছাড়া দাঁড় করিয়ে অনেক যাত্রী নিয়েছে। যাত্রীরা প্রতিবাদ করলে তাদের মারধরের হুমকি দেয়া হয়।

(জাস্ট নিউজ/জেআর/১০২০ঘ.)