আজ আমরা সবাই রোহিঙ্গা: বিশ্বব্যাংকপ্রধান

আজ আমরা সবাই রোহিঙ্গা: বিশ্বব্যাংকপ্রধান

ঢাকা, ৩ জুলাই (জাস্ট নিউজ) : রাখাইনে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর জাতিগত নির্মূল অভিযান থেকে বাঁচতে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের দুর্দশার কথা শুনে বিচলিত হয়েছেন বিশ্বব্যাংকের প্রধান জিম ইয়ং কিম।

সোমবার কক্সবাজারের রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবির পরিদর্শন শেষে টুইটারে দেয়া এক বার্তায় তিনি লিখেছেন- আজ আমরা সবাই রোহিঙ্গা।

তিনি বলেন, রোহিঙ্গাদের সাহস দেখে আমি বিমোহিত। তাদের ওপর বর্বর নির্যাতন আমাকে নাড়া দিয়েছে। আমরা তাদের কাছ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিতে পারি না। তাদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করছি- আজ আমরা সবাই রোহিঙ্গা।

এর আগে জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস বলেছেন, কক্সবাজারে আশ্রয় শিবির থেকে রোহিঙ্গাদের হত্যা ও ধর্ষণের যে বিবরণ শুনেছি, তা অকল্পনীয়। তারা ন্যায়বিচার ও নিরাপদে নিজ দেশে ফিরে যেতে চান।

কুতুপালংয়ে রোহিঙ্গা আশ্রয় শিবিরে ঘোরার ফাঁকে টুইটারে দেয়া এক পোস্টে তিনি এ মন্তব্য করেন।

মিয়ানমারের রাখাইনে নতুন করে সেনা অভিযান শুরুর পর গত ১০ মাসে সাড়ে সাত লাখের বেশি রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে এসেছেন।

গ্রামে নির্বিচার হত্যা, ধর্ষণ, জ্বালাও-পোড়াওয়ের ভয়াবহ বিবরণ পাওয়া গেছে তাদের মুখ থেকে।

আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো বলে আসছে, বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া শরণার্থীরা যাতে স্বেচ্ছায়, নিরাপদে ও সম্মানের সঙ্গে নিজেদের দেশে ফিরে যেতে পারেন, সেই ব্যবস্থা করতে হবে মিয়ানমার সরকারকে।

এ ছাড়া এই প্রত্যাবাসন যাতে আন্তর্জাতিক নিয়ম অনুসরণ করে হয়, দেশটিতে তা নিশ্চিত করার পরিবেশ তৈরি করতে হবে।
রোহিঙ্গাদের পরিস্থিতি দেখতে দুদিনের সফরে শনিবার ঢাকায় আসেন জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস ও বিশ্বব্যাংকপ্রধান জিম ইয়ং কিম।

সোমবার সকালে তারা কক্সবাজারের উখিয়ায় গিয়ে কয়েকটি ক্যাম্প ঘুরে দেখেন এবং রোহিঙ্গা নারী-পুরুষ ও শিশুদের সঙ্গে কথা বলেন।
তাদের মুখ থেকেই শোনেন রাখাইনে তাদের ভয়াবহ অভিজ্ঞতার কথা।

গুতেরেস বলেন, বাংলাদেশ রোহিঙ্গাদের যেভাবে আশ্রয় ও জরুরি সহায়তা দিয়েছে, সে জন্য এ দেশের মানুষের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতেই তিনি এ সফরে এসেছেন। জিম ইয়ং কিমও এ বিষয়ে বাংলাদেশ সরকার এবং এ দেশের মানুষের প্রশংসা করেন।

তিনি বলেন, যে মানবিকতা বাংলাদেশ দেখিয়েছে, তা তাকে নাড়িয়ে দিয়েছে।

তিনি বলেন, আজ আমি যা দেখেছি তা হৃদয়বিদারক এবং মর্মস্পর্শী। হত্যা, ধর্ষণ, নির্যাতন ও ঘরবাড়ি পুড়িয়ে দেয়ার যেসব ঘটনা আমরা শুনেছি, তা ভয়াবহ।

(জাস্ট নিউজ/এমআই/১২৪০ঘ.)