‘নিখোঁজ’ ড. মুবাশ্বার ফিরে এসেছেন

‘নিখোঁজ’ ড. মুবাশ্বার ফিরে এসেছেন

ঢাকা, ২২ ডিসেম্বর (জাস্ট নিউজ) : নিখোঁজের দেড় মাস পর অবশেষে বাড়ি ফিরলেন নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান অনুষদের সহকারী অধ্যাপক ড. মুবাশ্বার হাসান সিজার।

বৃহস্পতিবার রাতে তিনি দক্ষিণ বনশ্রীর বাসায় ফিরেন বলে তার পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়।

শুক্রবার সকালে মুবাশ্বারের বোন তামান্না তাসমিন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে লিখেছেন- ‘আল্লাহতাআলার অশেষ রহমতে গতকাল (বৃহস্পতিবার) দিবাগত রাত ১টায় আমার ভাইয়া সুস্থ অবস্থায় বাসায় ফিরেছে’।

এর আগে গত ১৯ ডিসেম্বর রাতে দুই মাস ১০ দিন নিখোঁজ থাকার পর সাংবাদিক উৎপল দাস বাসায় ফিরেন।

এরও কয়েক মাস আগে লেখক ফরহাদ মজহার ভোরে নিখোঁজ হয়ে যাওয়ার পর রাতে তার সন্ধান মেলে।

গত ৭ নভেম্বর বিকালে কর্মস্থল নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বনশ্রীর বাসার উদ্দেশে রওনা হওয়ার পর থেকে ‘নিখোঁজ’ ছিলেন মুবাশ্বার হাসান সিজার।

ওইদিন সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্দেশে বাসা থেকে বের হন তিনি। পরে আর বাসায় ফেরেননি সিজার। এ ঘটনায় সিজারের বাবা মোতাহার হোসেন খিলগাঁও থানায় একটি জিডি করেন।

মুবাশ্বার হাসান তার পরিচিতজনদের কাছে সিজার নামে পরিচিত। গত এক বছর ধরে বেসরকারি নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ে রাষ্ট্রবিজ্ঞান ও সমাজবিজ্ঞান বিভাগে শিক্ষকতা করছিলেন তিনি।

২০০৫ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ থেকে তিনি স্নাতকোত্তর পাস করেন। সেই সময় তিনি বছর তিনেক ঢাকায় সাংবাদিকতা করেছেন।

এর পর তিনি ব্রিটেনের ডান্ডি ইউনির্ভাসিটি থেকে রাজনীতি বিষয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। কয়েক বছর ব্রিটেনে অবস্থানের পর সিজার ঢাকায় ফিরে আন্তর্জাতিক সংস্থা অক্সফামে যোগ দেন।

বছর দেড়েক সেখানে কাজ করার পর অস্ট্রেলিয়ায় চলে যান এবং সেখানে গ্রিফিথ ইউনিভার্সিটি থেকে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন তিনি।

বাংলাদেশের রাজনীতিতে ইসলামের প্রভাব কতটা ভূমিকা রাখছে, সেটি ছিল তার পিএইচডি থিসিসের বিষয়বস্তু।

অস্ট্রেলিয়া থেকে বাংলাদেশে ফিরে সিজার ঢাকার বেসরকারি ইউল্যাব ইউনিভার্সিটিতে মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগে শিক্ষকতা করেন।

প্রায় দুই বছর সেখানে কাজ করার পর তিনি নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগ দেন।

ইসলাম, রাজনীতি এবং জঙ্গিবাদ বিষয়ে সম্প্রতি তিনি দেশে-বিদেশে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম ও জার্নালে গবেষণামূলক প্রবন্ধ লিখেছেন।

সর্বশেষ গত সেপ্টেম্বর মাসে দিল্লিভিত্তিক একটি জার্নালে তার প্রবন্ধ প্রকাশিত হয়েছিল।

বিশ্বায়নের ছায়ায় বাংলাদেশের ভেতরে কীভাবে রাজনৈতিক ইসলাম ও উগ্রবাদী সহিংসতা ছড়াচ্ছে, সে বিষয়টি তুলে ধরেছিলেন তিনি সর্বশেষ লেখায়।

সাম্প্রতিক সময়ে নিজের নিরাপত্তা নিয়ে চিন্তিত ছিলেন সিজার। সে জন্য বাসার সামনে ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরাও স্থাপন করেছিলেন তিনি।

কিছু দিন আগে তার বাসায় একজন অপরিচিত ব্যক্তি এসে তার খোঁজ করেছিলেন বলে সিজারের পরিবারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল।

সিজার তার ফেসবুক পাতায় ৩১ অক্টোবরের একটি পোস্ট দেন। সেখানে তিনি লেখেন- এক-দুই বছর ধরে তিনি বেনামি ফেসবুক ব্যবহারকারীদের কাছ থেকে বিরক্তিকর বার্তা পেয়ে আসছিলেন।

(জাস্ট নিউজ/জেআর/৯২৫ঘ.)