ধানমণ্ডি ও জিগাতলা জনশূন্য, দোকানপাট বন্ধ

ধানমণ্ডি ও জিগাতলা জনশূন্য, দোকানপাট বন্ধ

ঢাকা, ৫ মার্চ (জাস্ট নিউজ) : নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার পর নীরব হয়ে গেছে রাজধানীর ধানমণ্ডি এলাকা। জিগাতলা ও সায়েন্সল্যাব এলাকায় বন্ধ আছে সব মার্কেট ও দোকানপাট। বন্ধ আছে ওষুধের দোকানও।

ওই এলাকায় কিছু হাসপাতালের প্রধান গেট বন্ধ করে প্রবেশপথ সংকুচিত করা হয়েছে। আতঙ্ক ও ভীতিকর পরিবেশে রাস্তায় সাধারণ মানুষের চলাচল নেই বললেই চলে।

শনিবার জিগাতলায় কয়েক দফা সংঘর্ষের পর আজ রবিবার দুপুর থেকে আবারো ঢাকার বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা জড়ো হয়ে মিছিল নিয়ে যায় জিগাতলা। সেখানে পুলিশ তাদের সরিয়ে দিতে চাইলে আবারো বাধে সংঘর্ষ। বেশ কিছু সময় সংঘর্ষের পর কাঁদানে গ্যাসের শেল ছুড়ে ছাত্রছাত্রীদের ছত্রভঙ্গ করে দিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, পুলিশের পাশাপাশি অজ্ঞাত যুবকরা ধানমণ্ডির জিগাতলা, সায়েন্সল্যাব, বাটা সিগন্যাল, শাহবাগ মোড়সহ প্রত্যেক এলাকায় অবস্থান করছে। প্রত্যেক গলির মুখে দলবদ্ধ হয়ে অবস্থান করছে ওই সব যুবক। তবে টানা ৮ দিনের এ আন্দোলন শনিবার থেকে সহিংসতায় রূপ নিলে অনেকটা নীরব হয়ে যায় রাজধানী। বিশেষ করে আন্দোলনের মূল কেন্দ্রবিন্দু ঝিগাতলা, নিউমার্কেট, এলিফ্যান্ট রোড এলাকার কোনো দোকানপাট খোলা ছিল না।

ধানমণ্ডির পপুলার মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, ল্যাবএইড হাসাপতাল, আনোয়ার খান মেডিকেল কলেজসহ চিকিৎসাসেবা কেন্দ্রগুলোর ফটক ছিল বন্ধ। তবে অন্যান্য প্রবেশপথ খোলা ছিল।

বিকাল ৩টার পর দেখা গেছে, এসব এলাকার মোড়ে মোড়ে পুলিশ অবস্থান নিয়েছে। তবে কোথাও কোনো আন্দোলনকারীকে চোখে পড়েনি।

রাজধানীর সবচেয়ে ব্যস্ততম নিউমার্কেট, চন্দ্রিমা, চাঁদনীচকের মতো মার্কেটগুলো ছিল বন্ধ। ফুটপাতের দোকানিদেরও চোখে পড়েনি। ফাঁকা মার্কেটের সামনে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে কিছু রিকশা। থেমে থেমে চলছে কিছু সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও ব্যক্তিগত গাড়ি।

এলিফ্যান্ট রোড এলাকায় কম্পিউটারের দোকান, জুতার দোকান, বিভিন্ন কার্পেটের দোকান ছিল বন্ধ। তেমন মানুষজনও ছিল না। কয়েকটি রিকশাকে বিভিন্ন মোড়ে দেখা যায়।

ধানমণ্ডির ২ নম্বর সড়কের পপুলার মেডিকেল কলেজের ফটক ছিল বন্ধ। হাসপাতালটির ফার্মেসিতেও ছিল তালা। রোগী ও তাদের স্বজন ছাড়া এলাকায় কাউকে দেখা যায়নি। সিটি কলেজ, ইয়োলো সীমান্ত স্কয়ার, ধানমণ্ডির ৩-এ আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয় ও আশপাশের এলাকায় ছিল প্রচুর পুলিশ।

এদিকে নিরাপদ সড়কের দাবিতে চলমান ছাত্র আন্দোলনে সহিংসতার অভিযোগে রাজধানীর ধানমণ্ডি থানা এলাকা থেকে আটক শিক্ষার্থীদের মুচলেকা দিয়ে ছাড়িয়ে নিয়ে গেছেন অভিভাবকরা। আরো যাদের থানায় নিয়ে আসা হয়েছে, তাদেরও পরিচয়পত্র (আইডি কার্ড) পরীক্ষা করে অভিভাবকদের কাছে বুঝিয়ে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন, ধানমণ্ডি থানার উপপরিদর্শক (এসআই) শফিউল ইসলাম।

রবিবার দুপুরে শিক্ষার্থীরা সায়েন্সল্যাব ও জিগাতলা এলাকায় জড়ো হতে চাইলে ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতাকর্মীরা তাদের ধাওয়া করে। এ সময় শিক্ষার্থীরাও সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। পরে জিগাতলা, সায়েন্সল্যাব, ল্যাব এইডের আশপাশ এলাকা থেকে বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থীকে আটক করে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ।

পুলিশের গাড়ি থেকে এ সময় চিৎকার করে শিক্ষার্থীরা জানায়, ‘আমরা সবাই ইনোসেন্ট, আমরা কিচ্ছু করি নাই।’

এসআই শফিউল বলেন, দুপুর পর্যন্ত আটকদের থানায় আনার পর তাদের আইডি কার্ড চেক করা হয়েছে এবং অভিভাবকদের কাছ থেকে মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। আর বিকেলে যাদের আনা হয়েছে তাদেরও আইডি কার্ড চেক করা হচ্ছে এবং অভিভাবকদের সঙ্গে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা কথা বলছেন।

(জাস্ট নিউজ/একে/২২৪৬ঘ.)