শহীদুল আলমকে আটকের কারণ জানে না পরিবার

শহীদুল আলমকে আটকের কারণ জানে না পরিবার

ঢাকা, ৬ আগস্ট (জাস্ট নিউজ) : আন্তর্জাতিকভাবে সুপরিচিত ফটো সাংবাদিক শহীদুল আলমকে কেন বাড়ি থেকে তুলে নেয়া হয়েছে সে বিষয়ে তার পরিবারকে গোয়েন্দা পুলিশের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানানো হয়নি বলে অভিযোগ করেছেন তার স্ত্রী রেহনুমা আহমেদ।

ঢাকার দৃক গ্যালারিতে একটি সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা জানিয়েছেন।

সকালে অনুষ্ঠিত ওই সংবাদ সম্মেলনে রেহনুমা আহমেদ বলেন, শহীদুল আলমকে তুলে নেয়ার ব্যাপারে আমরা অফিশিয়ালি কোন তথ্য পাইনি। আমরা এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে জানি না তিনি কোথায়? সকালে ডিবি অফিসের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা বলেছেন, ভেতরের কারো কোনো তথ্য দেওয়ার নিয়ম নেই। সকালে দেখলাম একটা গাড়িতে করে তাকে বের করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। তবে কোথায় নেওয়া হচ্ছে আমরা এখনও জানি না। আমরা জানতে চাই, তার কী অপরাধ?

তবে পুলিশের পক্ষ থেকে অবশ্য নিশ্চিত করা হয়েছে যে মি. আলমকে গোয়েন্দা পুলিশের হেফাজতে নেয়া হয়েছে।

ফেসবুক লাইভে সরাসরি সম্প্রচারিত সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ, আইনজীবী সারা হোসেন, বেসরকারী সংগঠন নিজেরা করি'র খুশী কবির এবং গণসংহতি আন্দোলনের সমন্বয়ক জুনায়েদ সাকি।

গতরাতে ডিবির অতিরিক্ত কমিশনার আব্দুল বাতেনের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা ইউএনবি জানিয়েছিল, গোয়েন্দা পুলিশের একটি টিম শহীদুল আলমকে চলমান ছাত্র বিক্ষোভের বিষয়ে তাঁর কিছু ফেসবুক পোস্ট নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে।

রেহনুমা আহমেদ এই আটকের বিরুদ্ধে রাতেই ধানমন্ডি থানায় মামলা করতে গেলেও পুলিশ মামলা নেয়নি বলে তিনি অভিযোগ করেন। পরে তিনি একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করে আসেন।

যেকোন নাগরিককে জিজ্ঞাসাবাবাদের জন্য আটক করার আইনী বিধান রয়েছে উল্লেখ করে সারা হোসেন বলেন, বাংলাদেশের সংবিধান অনুযায়ী যদি কাউকে গ্রেফতার করা হয় তাহলে যথাশিঘ্র তার পরিবারকে আটকের কারণ জানাতে হবে। আটক ব্যক্তিকে তার আইনজীবীর সঙ্গে পরামর্শ করা থেকে বঞ্চিত করা যাবে না। এছাড়া বেআইনিভাবে কারো গৃহে জোরপূর্বক অনুপ্রবেশ, সেই সঙ্গে নিজস্ব যোগাযোগ মাধ্যমের গোপনীয়তা রক্ষার ব্যাপারটি সংবিধানে স্পষ্ট উল্লেখ রয়েছে।

পুলিশ যদি এই নির্দেশনা না মানে তাহলে তাদের বিরুদ্ধে ম্যাজিস্ট্রেট ব্যবস্থা নিতে পারবে বলেও সংবাদ সম্মেলনে জানান সারা হোসেন।

এ ব্যাপারে সুপ্রীম কোর্টের আইনজীবী ও আওয়ামী লীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক শ ম রেজাউল করিম বলেন, শহীদুল আলমকে একটি বিষয়ে অনুসন্ধানের জন্য জিজ্ঞাসাবাদের করতে আটক করা হয়েছে। তাকে গ্রেফতার করা হয়নি। গ্রেফতারকৃত ব্যক্তির ক্ষেত্রে, গ্রেফতারের কারণ জানানোর বিধান সংবিধানে আছে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের বিদ্যমান আইনে, ফৌজদারি কার্যবিধিতে কারো বিরুদ্ধে কোন তথ্য আসলে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা যাবে। মামলা হওয়া সাপেক্ষেই জিজ্ঞাসাবাদ করতে হবে এমন নয়। কোন তথ্য জানার ক্ষেত্রে কাউকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে কোন আইনী বাধা নেই।

এদিকে সরকারকে ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হওয়ার মতো কাজ করা থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন আনু মুহাম্মদ। তিনি বলেন, জনগণের কাছে সরকারের জবাবদিহি করতে হবে। সরকার যদি মনে করে যে তারা সঠিক কাজ করছে, তাহলে ভীতি কিসের? ক্রমাগত সংবিধান লঙ্ঘনের কারণে রাষ্ট্রের ভাবমূর্তি কোথায় ঠেকেছে?

এ সময় তিনি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে আইনানুযায়ী কাজ করার আহ্বান জানান। সূত্র: বিবিসি

(জাস্ট নিউজ/ডেস্ক/একে/২০৪৮ঘ.)