‘আন্দোলন দমনের পর গ্রেপ্তার চলছে বাংলাদেশে’

‘আন্দোলন দমনের পর গ্রেপ্তার চলছে বাংলাদেশে’

ঢাকা, ১৪ আগস্ট (জাস্ট নিউজ) : বাংলাদেশের সাম্প্রতিক বিক্ষোভে গুরুতর আহত হওয়া ১৮ বছর বয়সী এক শিক্ষার্থী হিউম্যান রাইটস ওয়াচের সঙ্গে যোগাযোগ করে। তার বক্তব্য, সে দেশ নিয়ে উদ্বিগ্ন। তার ইচ্ছা সোচ্চার হওয়ার। তবে তার ভয় কেবল বাছবিচারহীন গ্রেপ্তার নিয়েই নয়; তার আশঙ্কা হামলাকারীরা ফের এসে তাকে স্তব্ধ করে দিয়ে যাবে। এই শিক্ষার্থীর ভাষ্য, ‘আমাদেরকে ভাবতে দিন যে আমরা একা নই। এসব মাত্রাতিরিক্ত হচ্ছে।’

প্রকৃতপক্ষেই, এসব মাত্রাতিরিক্ত।
গত মাসের শেষের দিকে চলন্ত বাসের চাপায় দুই শিক্ষার্থীর মৃত্যুর পর হাজার হাজার শিক্ষার্থী সম্প্রতি রাজপথে নামে সড়ক নিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবিতে। শিক্ষার্থীদের দাবি ছিল অধিকতর নিরাপদ সড়ক। পাশাপাশি, সুশাসন ও আইনের শাসন নিশ্চিতের দাবি ছিল তাদের। প্রতিবাদের শ্লোগানই ছিল ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস।’ তারা বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার রাজপথ কানায় কানায় পরিপূর্ণ করে দেয়। ১.৮ কোটি বাসিন্দার শহরকে স্তবির করে দেয়। কিন্তু শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভে বলপ্রয়োগের মাধ্যমে প্রতিক্রিয়া দেখায় সরকার। টিয়ার গ্যাস ও রাবার বুলেট ব্যবহার করা হয়। শিক্ষার্থী, অভিভাবক, শিক্ষক ও সাধারণ উদ্বিগ্ন নাগরিকেরা বেশ কয়েকদিন ধরে হিউম্যান রাইটস ওয়াচের কাছে ছবি ও ভিডিও পাঠাচ্ছেন। সেখানে শাসক দল আওয়ামী লীগের সমর্থক পরিচয়ধারী অনেককে ইউনিফর্ম পরিহিত স্কুল শিশুসহ প্রতিবাদকারীদের পেটাতে দেখা যাচ্ছে।

১৮ বছর বয়সী ওই শিক্ষার্থী জানায়, ৩রা আগস্ট যখন সে ছবি তুলছিল, তখন আওয়ামী লীগের ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগের সদস্য পরিচয়ধারী একদল লোক তার ওপর হামলা চালায়। তার ভাষ্য, ‘তারা আমার ক্যামেরা চাচ্ছিল।’ তাকে যখন লাঠি, পাইপ ও ছাপাতি দিয়ে মারা হচ্ছিল, তখন পুলিশ নিরবে দাঁড়িয়ে ছিল পাশে। তার ভাষ্য, ‘তারা (পুলিশ) কিছুই করেনি।’

এই হামলাকারীদের বিচারের আওতায় আনার বদলে বাংলাদেশ সরকার সমালোচনা বন্ধ করতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বহুজনের অ্যাকাউন্ট মনিটর করছে। সহিংস দমনপীড়নের বিরুদ্ধে কথা বলায় অন্তত ২০ জনকে আটক করা হয়েছে, এদের মধ্যে আছেন প্রখ্যাত আলোকচিত্রী ও অ্যাক্টিভিস্ট শহীদুল আলম।

এসবের অবসান হওয়া জরুরী। বাংলাদেশ সরকারের উচিৎ শহীদুল আলম ও গ্রেপ্তারকৃতদের মুক্তি দেয়া। সরকার সমর্থকরাসহ যারাই সহিংসতা ঘটিয়েছে তাদের সকলের বিষয়ে পদক্ষেপ নেয়া। শিশুসহ প্রত্যেকের প্রতিবাদ করার অধিকার সমুন্নত রাখা। কারণ, অল্পবয়সী শিক্ষার্থীরা তো না-ই, কারোই সোচ্চার হওয়ার কারণে গ্রেপ্তার বা সহিংসতার ভয়ে থাকা উচিৎ নয়।

(জাস্ট নিউজ/এমআই/১৩৩০ঘ.)