সর্বোচ্চ দুর্নীতিগ্রস্ত খাত আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থা: টিআইবি

সর্বোচ্চ দুর্নীতিগ্রস্ত খাত আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থা: টিআইবি

ঢাকা, ৩০ আগস্ট (জাস্ট নিউজ) : সেবাখাতে সর্বোচ্চ দুর্নীতিগ্রস্ত খাতের তালিকায় শীর্ষে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থা ও সর্বোচ্চ ঘুষগ্রহণকারী খাতের তালিকায় শীর্ষে রয়েছে বিআরটিএ। ২০১৫ সালের তুলনায় ২০১৭ সালে সেবাখাতে ঘুষের শিকার খানার হার কমলেও ঘুষ আদায়ের পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়েছে।

‘সেবা খাতে দুর্নীতি: জাতীয় খানা জরিপ-২০১৭’ শীর্ষক টিআইবির গবেষণা প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

বৃহস্পতিবার রাজধানীতে টিআইবি মেঘমালা কনফারেন্স রুমে এই প্রতিবেদন প্রকাশ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান ও ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারপারসন সুলতানা কামাল।

প্রকাশিত প্রতিবেদনে জানানো হয়, ২০১৭ সালে সার্বিকভাবে ৬৬.৫% খানা দুর্নীতির শিকার হয়েছে। এক্ষেত্রে সর্বোচ্চ দুর্নীতিগ্রস্ত তিনটি খাত হলো- আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থা (৭২.৫%), পাসপোর্ট (৬৭.৩%) ও বি আরটিএ (৬৫.৪%)। এ বছর সার্বিকভাবে ঘুষের শিকার হওয়া খানার হার ৪৯.৮%। সর্বোচ্চ ঘুষ গ্রহণকারী তিনটি খাত হলো- বি আরটিএ (৬৩.১%), আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থা (৬০.৭%) ও পাসপোর্ট (৫৯.৩%)।

প্রতিবেদনে বলা হয়, জরিপে অন্তর্ভূক্ত ঘুষ প্রদানকারী খানার ৮৯% ঘুষ দেয়ার কারণ হিসেবে বলেছেন, ‘ঘুষ না দিলে সেবা পাওয়া যায় না’। অর্থাৎ ঘুষ আদায়ে প্রাতিষ্ঠানিকীকরণ বৃদ্ধি পেয়েছে।

সার্বিকভাবে খানা প্রতি গড়ে ৫,৯৩০ টাকা ঘুষ দিতে বাধ্য হয়েছে। ২০১৭ সালে জাতীয়ভাবে প্রাক্কলিত মোট ঘুষের পরিমাণ প্রায় ১০,৬৮৮ কোটি টাকা, যা ২০১৬-১৭ অর্থবছরের জাতীয় বাজেটের (সংশোধিত) ৩.৪ % এবং বাংলাদেশের জিডিপি’র ০.৫%।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০১৫ সালের তুলনায় ২০১৭ সালে কোনো কোনো খাতে দুর্নীতি উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে। এগুলো হলো— গ্যাস, কৃষি ও বিচারক সেবা। কমেছেও বেশ কয়েকটি খাতে। এগুলো হলো— শিক্ষা, পাসপোর্ট ও স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান।

২০১৫ সালের তুলনায় ২০১৭ সালে সেবা খাতে ঘুষের শিকার খানার হার কমলেও ঘুষ আদায়ের পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়েছে।

জরিপের উত্তরদাতাদের মতামতের উপর ভিত্তি করে টিআইবি ১২টি সুপারিশ দিয়েছে। এরমধ্যে অন্যতম—

* দুর্নীতি প্রতিরোধে সকাল পর্যায়ে রাজনৈতিক সদিচ্ছা ও তার কার্যকর প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে।

* ‘তথ্য অধিকার আইন ২০০৯’ ও ‘তথ্য প্রকাশকারীর সুরক্ষা আইন ২০১১’ এর কার্যকর বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাসহ সকল অংশীজনের সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে।

* বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে সেবাদানের সাথে জড়িত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কর্মকাণ্ডের মূল্যায়নের ভিত্তিতে পুরস্কার ও তিরস্কার বা শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে।

* সেবাখাতে দুর্নীতি প্রতিরোধে বিভাগীয় পদক্ষেপের পাশাপাশি প্রযোজ্য ক্ষেত্রে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) কর্তৃক আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ কার্যকর করতে হবে।

* প্রতিটি প্রতিষ্ঠানে জাতীয় শুদ্ধাচার কৌশলের সাথে সামজ্ঞস্য রেখে সুদৃঢ় নৈতিক আচরণবিধি প্রণয়ন ও প্রয়োগ করতে হবে। এর ভিত্তিতে জবাবদিহিতার ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে হবে।

* সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে গণশুনানির মতো জনগণের অংশগ্রহণমূলক কার্যক্রম বৃদ্ধি করতে হবে।

(জাস্ট নিউজ/এমআই/১৩০০ঘ.)