দলীয় সরকারের অধীনে নিরপেক্ষ নির্বাচনের সুযোগ নেই

দশ দাবিতে নির্বাচন কমিশন ঘেরাওয়ের ঘোষণা

দশ দাবিতে নির্বাচন কমিশন ঘেরাওয়ের  ঘোষণা

ঢাকা, ১৮ সেপ্টেম্বর (জাস্ট নিউজ) : অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের গণতান্ত্রিক পরিবেশ নিশ্চিত করার দাবিতে বৃহস্পতিবার নির্বাচন কমিশন ঘেরাও করবে বাম গণতান্ত্রিক জোট। এর পাশাপাশি তারা জেলায় নির্বাচন কার্যালয়ের সামনেও বিক্ষোভ করবে।

পল্টনস্থ মুক্তিভবনের মৈত্রী মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে সোমবার জোটের পক্ষ থেকে একথা জানান হয়।

সংবাদ সম্মেলন থেকে নেতৃবৃন্দ বলেন, ৪৭ বছরের অভিজ্ঞতা সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ করেছে যে, দলীয় সরকারের অধীনে অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের যেমন কোনো সুযোগ নেই, তেমনি সরকার অনুগত বর্তমান নির্বাচন কমিশন এবং নির্বাচনের যাবতীয় অগণতান্ত্রিক ধারা পদ্ধতি বহাল রেখে সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ, অবাধ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন সম্ভব নয়। এই প্রেক্ষিতে বর্তমান নির্বাচন কমিশনের পুনর্গঠন এবং সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব ব্যবস্থা প্রবর্তনসহ গোটা নির্বাচনী ব্যবস্থার আমূল সংস্কারের প্রস্তাব করা হয়। সংবাদ সম্মেলন থেকে অবাধ ও নির্বাচনের গণতান্ত্রিক পরিবেশ নিশ্চিত করার দাবি পুনর্ব্যক্ত করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন জোটের সমন্বয়ক ও বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক। এসময় উপস্থিত ছিলেন সিপিবি’র সাধারণ সম্পাদক মো. শাহ আলম, বাসদ নেতা বজলুর রশীদ ফিরোজ, ইউনাইটেড কমিউনিস্ট লীগের সাধারণ সম্পাদক মোশাররফ হোসেন নান্নু, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সাধারণ সম্পাদক মোশরেফা মিশু, বাসদ (মার্কসবাদী)’র কেন্দ্রীয় নেতা ফখরুদ্দিন কবির আতিক, গণসংহতির রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য ফিরোজ আহমেদ সমাজতান্ত্রিক আন্দোলনের আহ্বায়ক হামিদুল হক।

লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, গণতান্ত্রিক ও মুক্ত পরিবেশে প্রার্থী হওয়ার ও নিরাপদে ভোট প্রদানের মাধ্যমে নিজেদের প্রতিনিধি নির্বাচনের ন্যূনতম সুযোগও এখন দেশে নেই। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির মতো আরো একটি একতরফা নির্বাচনের ক্ষেত্র প্রস্তুত করা হচ্ছে। সরকার ও নির্বাচন কমিশন মিলে গোটা নির্বাচনী ব্যবস্থাকে ভেঙে দিয়েছে। নির্বাচন কমিশন ও নির্বাচনী ব্যবস্থার ওপর গণঅনাস্থা তৈরি হয়েছে। সরকারের অনুগত ভূমিকা পালনে নিয়োজিত থাকায় সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান হিসাবে নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা ও মর্যাদা ভুলুণ্ঠিত হয়েছে।

‘নিয়ন্ত্রিত নির্বাচনের’ এক অভিনব মডেলও চালু করা হয়েছে। বেশুমার অর্থব্যয় ও নির্বাচন আচরণবিধির বেপরোয়া লংঘনের বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশন কার্যকর কোনো ভূমিকাই গ্রহণ করতে পারেনি। এতে আরো বলা হয়, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে নির্বাচন কমিশন একটা ‘রোডম্যাপ’ ঘোষণা করেছিল এবং সে অনুযায়ী রাজনৈতিক দলসহ গুরুত্বপূর্ণ অংশীজনদের সঙ্গে কয়েকমাস ধরে সংলাপের আয়োজন করেছিল। নির্বাচন ব্যবস্থার আমূল সংস্কারের প্রস্তাব দেয়া হয়েছিল, যার অনেকগুলোর সঙ্গে নির্বাচন কমিশনও একমত হয়েছিলেন।

তখন বলা হয়েছিল, সব মতামতের ভিত্তিতে আরপিও’র সংশোধনীসহ নির্বাচন ব্যবস্থার সংস্কারের লক্ষ্যে পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন। আমরা ক্ষোভের সাথে উল্লেখ করতে চাই যে, সুপারিশসমূহের ভিত্তিতে আরপিও’র অগণতান্ত্রিক ধারাসমূহ বাতিল করে অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য নির্বাচনী ব্যবস্থার গণতান্ত্রিক সংস্কারের উদ্যোগ নেয়া হয়নি।

সংবাদ সম্মেলনের বক্তব্যে অবাধ নিরপেক্ষ অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের জন্য ১১ দফা দাবি জানানো হয়। এই দাবিসমূহ আদায়ের লক্ষ্যে আগামী ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৮ বৃহস্পতিবার নির্বাচন কমিশন ঘেরাও করা হবে। বেলা ১১টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে জমায়েত শেষে নির্বাচন কমিশন অভিমুখে এই ঘেরাও মিছিল শুরু হবে। একই দিন সকালে জেলা পর্যায়ে সকল নির্বাচন কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হবে।

(জাস্ট নিউজ/এমআই/১৯৫১ঘ.)