নির্বাচনের আগেই প্রাইমারি শিক্ষকদের আন্দোলনের প্রস্তুতি

নির্বাচনের আগেই প্রাইমারি শিক্ষকদের আন্দোলনের প্রস্তুতি

ঢাকা, ২৭ সেপ্টেম্বর (জাস্ট নিউজ) : প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পর্যায়ে ‘বৈষম্য’ নিরসনের দাবিতে আবারো আন্দোলনে নামার প্রস্তুতি নিচ্ছেন শিক্ষক মহাজোটের একাংশ। সরকারের প্রতিশ্রুতির পরও তা বাস্তবায়ন না হওয়ায় জাতীয় নির্বাচনের আগে আন্দোলনে নেমে সরকারকে দাবি বাস্তবায়নে বাধ্য করতে এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।

তবে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একাধিক কর্মকর্তারা জানান, নির্বাচনের আগে শিক্ষকরা যাতে নতুনভাবে আন্দোলনে নামতে না পারে সে জন্য সব প্রাথমিক জেলা ও উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাদের লিখিতভাবে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এদিকে শিক্ষকদের মধ্যে সরকার সমর্থক বলে চিহ্নিত অংশ নির্বাচনের আগে সরকারকে বিব্রত করতে চাচ্ছে না।

এ প্রসঙ্গে প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক সংগঠনের সভাপতি শাহিনুল আল-আমীন জানান, তারা এ মাসে শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করছেন এবং তিনি শিক্ষকদের দাবির যৌক্তিকতা স্বীকার করেছেন। কিন্তু সরকার তাদের দাবি মানার ব্যাপারে সময় চেয়েছে।

এ বিষয়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান গণমাধ্যমকে বলেছেন, শিক্ষকদের দাবির বিষয়টির যৌক্তিকতা পাওয়া গেছে। আমরা এটিকে গুরুত্ব দিয়ে কাজ শুরু করেছি। বিষয়টি আমাদের একার ওপর নির্ভর করছে না, এখানে অর্থ মন্ত্রণালয় ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় যুক্ত রয়েছে। তাই আমরা জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠিয়েছি। তাদের অনুমোদন হলে এটি অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। সেখান থেকে অনুমোদন হয়ে আসলে পরে তা বাস্তবায়ন করব।

এর আগে সরকার ঘোষিত সর্বশেষ ৮ম পে-স্কেলে প্রধান শিক্ষকরা দ্বিতীয় শ্রেণির সুযোগ-সুবিধা ও সহকারী শিক্ষকরা তৃতীয় শ্রেণির সুযোগ-সুবিধা দেয়া হয়েছে। তবে প্রধান শিক্ষকদের চেয়ে সহকারী শিক্ষকদের মান ৪ ধাপ নিচে নামানো হয়েছে। এ নিয়ে সারা দেশের প্রায় পৌনে চার লাখ সহকারী শিক্ষকের মধ্যে অসন্তোষ সৃষ্টি হয়েছে।

এই অসন্তোষকে কেন্দ্র করে গত বছরের শেষে সারা দেশের প্রায় সব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের ৯টি সংগঠন একযোগে একটি মহাজোট গঠন করে ঢাকার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অবস্থান নিয়ে তীব্র আন্দোলন গড়ে তোলেন। তারা টানা ২০ দিন আন্দোলন ও অনশন পালন করেন। পরে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান আন্দোলনরত শিক্ষকদের মাঝে গিয়ে দাবি-দাওয়া বাস্তাবায়নের আশ্বাস দিলে তারা বাড়ি ফিরে যান। মন্ত্রীর আশ্বাসের পর ৯ মাস কেটে গেলেও এখনো সরকারের সে আশ্বাস পূরণ হয়নি।

এ বিষয়ে প্রাথমিক বিদ্যালয় সহকারী শিক্ষক সমাজের সভাপতি শাহাবুদ্দিন বলেন, আমরা নতুন করে আন্দোলনের প্রস্তুতি নিচ্ছি। তবে তার আগে আমরা ৮ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাৎ পাওয়ার চেষ্টা করছি। তার (প্রধানমন্ত্রী) সঙ্গে সাক্ষাৎ করে বৈষম্যের বিষয়টি তুলে ধরার চেষ্টা করা হবে। এ জন্য শিক্ষকদের গণসাক্ষর সংগ্রহ করা হচ্ছে। শিক্ষকদের গণসাক্ষরসহ প্রধানমন্ত্রীকে একটি স্মারকলিপি দেয়া হবে।

(জাস্ট নিউজ/এমআই/২০০৯ঘ.)