নিউইয়র্কে এক দিনে বাংলাদেশি ৩ তরুণের মৃত্যু

নিউইয়র্কে এক দিনে বাংলাদেশি ৩ তরুণের মৃত্যু

স্বপ্নের দেশে এসে স্বপ্ন ভঙ্গ ঘটছে একের পর এক। বাংলাদেশিদের একের পর এক অপমৃত্যু পরিবারগুলোকে ভাবিয়ে তুলেছে। ৫ আগস্ট নিউইয়র্কে এক দিনে তিন বাংলাদেশি তরুণের অপমৃত্যু ঘটেছে। এই তিনজন হলেন তানভীর মিয়া (২২), মারজান রহমান (২৫) ও মহসিন আহমেদ (২৮)। গত মাসে প্রযুক্তি উদ্যোক্তা ফাহিম সালেহর মৃত্যুশোক কাটাতে না কাটাতেই আবারও নিউইয়র্কের বাংলাদেশি কমিউনিটিতে এমন অপঘাতে মৃত্যুতে শোকে বিহ্বল হয়ে পড়েছেন স্বদেশিরা।

৫ আগস্ট বন্ধুদের সঙ্গে লেক জর্জে সাঁতার কাটতে গিয়ে ব্রঙ্কসের বাসিন্দা বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত তরুণ তানভীর মিয়ার মৃত্যু হয়। ব্রঙ্কসের কারি হাউসের বাসিন্দা ইলিয়াস মিয়ার ছেলে তানভীর পানিতে সাঁতার কাটতে নেমেই সাহায্যের জন্য চিৎকার করেন। বন্ধুরা বাঁচাতে এগিয়ে গেলেও ব্যর্থ হয়ে ফিরে আসেন। পরে পানিতে ডুবে তাঁর মৃত্যু হয়। প্রায় ১২ ঘণ্টা পর তাঁর লাশ উদ্ধার করা হয়।

একই দিন রাতে প্রথম আলো উত্তর আমেরিকার সাংবাদিক ও লেখক রহমান মাহবুবের দ্বিতীয় ছেলে মারজান রহমানের মৃত্যু হয়েছে। রাত ১০টার দিকে কুইন্স এলাকার একটি সুইমিং পুল থেকে উদ্ধার করে জরুরি বিভাগের কর্মীরা মারজানকে জ্যামাইকা হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানেই মধ্যরাতে তাঁকে মৃত ঘোষণা করা হয়। ধারণা করা হচ্ছে, কার্ডিয়াক অ্যারেস্টের কারণে মারজানের মৃত্যু হয়েছে।

৫ আগস্ট সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে জামিয়া ইসলামিক সেন্টার উডহ্যাভেনের ইমাম ও খতিব মাওলানা শায়েখ আসাদ আহমেদের বড় ছেলে মহসিন আহমেদের মৃত্যু হয়। ওজোন পার্কের বাসার কাছে পিএস ২১৪-এর সামনে নিজের গাড়ির ভেতরে তাঁকে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। ধারণা করা হচ্ছে, হার্ট অ্যাটাকে তাঁর মৃত্যু হয়েছে।

এর আগে নিউইয়র্কের জার্সি সিটি-সংলগ্ন এলাকায় হাডসন নদী থেকে ৪ জুলাই দুটি লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এর মধ্যে একজন বাংলাদেশি-আমেরিকান তরুণ। তাঁর নাম উমাইর সালেহ (২৩)। ইউনিভার্সিটি থেকে সদ্য স্নাতক করা উমাইর সালেহর মৃত্যুরহস্য এখনো উদঘাটিত হয়নি। এ ছাড়া ১৩ জুলাই খুন হন রাইড শেয়ারিং কোম্পানি পাঠাওয়ের সহপ্রতিষ্ঠাতা ফাহিম সালেহ। ম্যানহাটনের অ্যাপার্টমেন্টে তাঁকে হত্যা করার অভিযোগে তাঁর ব্যক্তিগত সহকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

একের পর এক তরুণ প্রজন্মের বাংলাদেশি-আমেরিকানের অপঘাতে মৃত্যু নিয়ে ঘরে ঘরে আলোচনা চলছে। অপঘাতে মারা যাওয়া সব তরুণই মেধাবী ছিলেন। একের পর এক এমন অপমৃত্যুর কারণ খোঁজার চেষ্টা করছেন সবাই। একরাশ বেদনার আর্তি নিয়ে আহাজারি করলেও উত্তর কারও জানা নেই। শোকে একাত্ম নিউইয়র্কের বাংলাদেশি কমিউনিটি একে অন্যকে সান্ত্বনা দিচ্ছেন। সহমর্মিতা নিয়ে পাশে দাঁড়াচ্ছেন। এ শোক সামাল দেওয়ার শক্তি যেন পায় পরিবারগুলো, এমন কামনাই করছেন তাঁরা।

এমজে/