যুক্তরাষ্ট্রের মেরিল্যান্ড স্টেটের বাল্টিমোরে সড়কে শোভা পাচ্ছে বাংলাদেশের স্বাধীনতার মহান ঘোষক শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের নাম। বাল্টিমোর সিটির ডিপার্টমেন্ট অব ট্রান্সপোর্ট কর্তৃপক্ষ বাংলাদেশের কালজয়ী এই নেতার নামে সড়কটির নামকরণ করে ‘জিয়াউর রহমান ওয়ে।’
বাংলাদেশী-আমেরিকান কমিউনিটি মেরিল্যান্ড- আয়োজিত বর্ণাঢ্য এই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসাবে লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যোগ দেন প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের জ্যেষ্ঠ সন্তান ও তাঁর প্রতিষ্ঠিত দল, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। রবিবার শতশত প্রবাসী বাংলাদেশীর উপস্হিতিতে সড়কটির আনুষ্ঠানিক ফলক উন্মোচন করেন মেরিল্যাল্ড স্টেট ডেলিগেট রবিন টি লুইস।
বাংলাদেশী-আমেরিকান কমিউনিটি মেরিল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট এবং সড়কটির একমাত্র আবেদনকারি মোহাম্মদ কাজলের সভাপতিত্বে ও মিসেস লিনার পরিচালনায় এতে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন ডেলিগেট হ্যারি ভেন্ডারি, গভর্নর অফিসের কমিশনার ড: স্যাম কারকি, মেয়র অফিসের প্রতিনিধি ড: রবার্ট জ্যাকসন, ওয়াশিংটন ভিত্তিক অধিকার সংগঠন- রাইট টু ফ্রিডমের নির্বাহী পরিচালক ও জাতিসংঘ সংবাদদাতা মুশফিকুল ফজল আনসারী এবং মুলধারার রাজনীতিক গভর্নর অফিসের সাবেক কমিশনার আনিস আহমেদ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে তারেক রহমান বলেন, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান যেমনিভাবে স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়ে সম্মুখ সমরে লড়ে দেশের চুড়ান্ত বিজয় নিশ্চিত করেছিলেন, তেমনি দেশ গড়ার কাজে আত্ননিয়োগ করে বাংলাদেশকে একটি স্বনির্ভর ও আত্নমর্যাদাশীল জাতি হিসাবে বিশ্বের বুকে পরিচিতি করেছিলেন। বহুদলীয় গণতন্ত্র, সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা এবং সাম্য ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় শহীদ প্রেসিডন্ট জিয়াউর রহমানের নাম বিশ্বজুড়ে স্বমহিমায় উদ্ভাসিত। বাল্টিমোর সিটির সড়কটিকে জিয়াউর রহমান ওয়ে নামকরণ করায় সিটি কর্তৃপক্ষের প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বাংলাদেশের এই শীর্ষ রাজনৈতিক নেতা বলেন, জিয়াউর রহমানের সময়ে বাংলাদেশের সাথে যুক্তরাষ্ট্রের কূটনৈতিক সম্পর্ক এক অনন্য উচ্চতায় পৌঁছে। পারস্পরিক সহযোগিতা ছাড়াও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে দুই দেশ সে সময়ে যুগপৎ ভূমিকা পালন করে। বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জিমি কার্টার ও বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান অগ্রণী ভূমিকা আজও সকলে শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করে। এসময় তিনি প্রেসিডেন্ট জিয়ার যুক্তরাষ্ট্রে রাষ্ট্রীয় সফরের কথাও উল্লেখ করেন।
ডেলিগেট রবিন লুইস বলেন, বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানকে সম্মান জানাতে পেরে বাল্টিমোর অত্যন্ত আনন্দিত। শহীদ জিয়াকে আন্তর্জাতিক নায়ক উল্লেখ করে স্থানীয় এই জনপ্রতিনিধি বলেন, তাঁকে সম্মান জানোর অর্থ হচ্ছে গণতন্ত্রের প্রতি, মানুষের অধিকারের প্রতি সম্মান জানানো। প্রেসিডেন্ট জিয়া যেমন দেশ গড়েছেন, তেমনি মানুষের অধিকারকেও সমুন্নত রেখেছেন।
ডেলিগেট হ্যারি বেন্ডারি বলেন, আজকের এই আনন্দ কেবল বাংলাদেশী কমিউনিটির নয়, সমগ্র এশিয়ান কমিউনিটির। তিনি বলেন, এই শহরে প্রেসিডেন্ট জিয়ার নামে যে সড়কের ফলক উন্মোচিত হলো, তা চির অম্লান থাকবে। তিনি মূল ধারার রাজনীতিতে বাংলাদেশী কমিউনিটির আরও ব্যাপক অংশগ্রহণ কামনা করেন।
১৯৮১ সালে প্রকাশিত ওয়াশিংটন পোস্টকে উদৃত করে সাংবাদিক মুশফিকুল ফজল আনসারী বলেন, আজকের অনুষ্ঠানস্থলের খুব কাছ থেকেই বিশ্বের যে প্রভাবশালী পত্রিকাটি প্রকাশিত হয় আমি সরাসরি সেখানেই চলে যাবো। পত্রিকাটি প্রেসিডেন্ট জিয়া সম্পর্কে লিখেছে, “আজ থেকে দশ বছর আগে জিয়াউর রহমান নামে একজন অস্পষ্ট সেনা মেজর একটি রেডিও স্টেশন দখলে নিয়ে বাংলাদেশের স্বাধীনতা বিশ্ববাসীর উদ্দেশে জানান দিয়েছিলেন, সেই অবসরপ্রাপ্ত জেনারেল জিয়া এখন বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট।
দু'জনের ৪৫ বছর বয়সী এই পিতা একটি শক্তিশালী প্রেসিডেন্টের পদে আসীন, যেখানে মাসে কমপক্ষে ২০ দিন হেলিকপ্টার দিয়ে দুর্গম গ্রামে ভ্রমণ করে জনগণকে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ, খামার ফলন এবং সেচ খাল খননের ক্ষেত্রে বিপ্লবের সূচনা করেছেন। তিনি কাজ শেষ করতে ব্যর্থ অলস আমলাদেরও কাজে আত্ননিয়োগে বাধ্য করেন। তিনি খুব সাধারণ পোষাক পরেই গ্রামের পর গ্রাম ছুটে বেড়ান। ক্যারিশম্যাটিক ব্যক্তিত্ব রক্ষণশীলভাবে কাটা স্যুট ( সাফারি) ঝরঝরে স্ট্রিপ শার্ট পরে তিনি বিশ্ব মঞ্চেও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছেন, যেখানে তৃতীয় বিশ্বের উত্পাদনশীলতার উদাহরণ হিসাবে তাকেই ধরে রাখা হয়।
জিয়া ঢাকার সামরিক অঞ্চলে জেনারেল হিসাবে অধিষ্ঠিত থাকাকালীন বাড়িতেই থাকেন। তিনি কঠোর পরিশ্রম করেন। সকাল সাড়ে ৭টা থেকে পরদিন ভোর ১ টা পর্যন্ত তাঁর কাজের ব্যপ্তি। তাঁর রাতের খাবারের তালিকায় থাকে - একটি সাধারণ রুটি এবং সামান্য তরকারী এবং দুপুরের খাবারের জন্য স্যান্ডউইচ।”
শহীদ জিয়ার শাহাদাতের পর প্রেসিডেন্ট রিগান প্রেরিত শোক বার্তাটিও পড়ে শোনান এই সাংবাদিক।
আনিস আহমেদ বলেন, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বাংলাদেশে উন্নয়ন ও উৎপাদনের রাজনীতির সূচনা করেছিলেন। তিনি বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রবর্তনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে সকল দল ও মতের রাজনীতির সুযোগ অবারিত করেছিলেন। বিশ্বসভায় বাংলাদেশে পরিচিতি পেরেছিলো তার কারণে। গোটা বিশ্বে আজও তাঁর অভার তীব্রভাবে অনুভূত হয়। জিয়াউর রহমান ওয়ে তাঁর প্রতি সম্মানের বহি:প্রকাশ বলে উল্লেখ করেন মূলধারার এই রাজনীতিক।
জিয়াউর রহমান ওয়েব ফলক উন্মোচন অনুষ্ঠানে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন স্টেট থেকে বিএনপি সমর্থক নেতাকর্মীরা জড়ো হন বন্দর নগরী বাল্টিমোরের সারাটেগা স্ট্রিটে।
যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপন কমিটির আহবায়ক জিল্লুর রহমান জিল্লু, সদস্য সচিব মিজানুর রহমান ভুইয়া মিল্টন, সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক ও মূলধারার রাজনীতিক গিয়াস আহেমদ এবং শরাফত হোসেন বাবু, যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির সাবেক ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মোস্তফা কামাল পাশা বাবুল, সাবেক কোষাধ্যক্ষ জসিম উদ্দিন ভূঁইয়া, বিএনপির স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপন কমিটির যুগ্ম আহবায়ক আব্দুস সবুর, জসিম উদ্দীন ভুইয়া, যুবদল কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির যুগ্ম সম্পাদক মাসুদ আহমেদ মিলন, স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপন যুগ্ম আহবায়ক ও প্যানসিলভেনিয়ার বিএনপি সভাপতি শাহ ফরিদ, যুগ্ম আহবায়ক ও যুক্তরাষ্ট্র যুবদলের সাধারন সম্পাদক আবু সাইদ আহমদ, যুগ্ম আহবায়ক ও যুক্তরাষ্ট্র স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারন সম্পাদক মাকসুদুল হক চৌধুরী, যুগ্ম আহবায়ক সেলিম রেজা, মোশাররফ সবুজ, ওয়াশিংটন ডিসি বিএনপির মজনু মিয়া, জাকির হোসেইন, তুহিন ইসলাম, আরিফুল ইসলাম, মোখলেসুর রহমান লিটন, ভার্জিনিয়া বিএনপির জহির খান, নেসার আহমেদ, জাহেদ, মেরিল্যান্ড বিএনপির শাহিদ চৌধুরী, ইঞ্জিনিয়ার সেলিম আহমেদ, মিজানুর রহমান, কবিরুল ইসলাম, জাসাস কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ন সম্পাদক গোলাম ফারুক শাহিন, যুক্তরাষ্ট্র জাসাসের সভাপতি আবু তাহের, যুক্তরাষ্ট্র শ্রমিক দলের সভাপতি জাহাঙ্গীর এম আলম, মাহফুজুল মওলা নান্নু , নিউইয়র্ক ষ্টেট বিএনপির সাধারন সম্পাদক সাইদুর রহমান সাইদ, যুক্তরাষ্ট্র জাসাসের সাধারণ সম্পাদক কাউসার আহমেদ, যুক্তরাষ্ট্র শ্রমিক দলের সিনিয়র সহ সভাপতি মোস্তাক আহমেদ, লংআইল্যান্ড বিএনপির উপদেষ্টা রিয়াদ মাহমুদ , শ্রমিক দলের সহ সভাপতি হুমায়ুন কবির, ব্রুকলিন বিএনপির সভাপতি আনোয়ার হোসেন, সালেহ মানিক, স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপন কমিটির যুগ্ম আহবায়ক নাসিম আহমেদ, যুগ্ম আহবায়ক আমানত হোসেন আমান, যুগ্ন আহবায়ক শহিদুল হক শিকদার, সিনিয়র যুগ্ম সদস্য সচিব মোশাররফ হোসেন সবুজ, যুগ্ম সদস্য সচিব এজিএম জাহাঙ্গীর হাসাইন, যুগ্ম সদস্য সচিব মোতাহার হোসেন, যুগ্ম সদস্য সচিব সাইদুর খান ডিউক, যুগ্ম সদস্য সচিব মাইনুদ্দীন আহমেদ, এস এম ফেরদৌস,যুগ্ম সদস্য সচিব কামাল উদ্দীন দিপু, যুগ্ম সদস্য সচিব হাবীবুর রহমান হাবীব, ঊদযাপন কমিটির উপদেষ্টা জামিলুর রহমান চৌধুরী, ড. নুরুল আমীন পলাশ, গোলাম হোসেন, জাতীয়তাবাদী ফোরাম নেতা মাহবুবুর রহমান মুকুল, যুক্তরাষ্ট্র ছাত্রদল নেতা শাহবাজ আহমেদ ফরিদ খোন্দকার, তোফায়েল আহমেদ প্রমুখ ।
এমজে/