যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সকল সংবাদ, অনুষ্ঠান বর্জনের ঘোষণা নিউইয়র্কের সাংবাদিকদের

যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সকল সংবাদ, অনুষ্ঠান বর্জনের ঘোষণা নিউইয়র্কের সাংবাদিকদের

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিউইয়র্কে অবস্থানকালীন গত ২২ সেপ্টেম্বর বুধবার যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সংবাদিকের উপর হামলার ঘটনা ঘটে। এর প্রতিবাদে নিউইয়র্কে কর্মরত সকল প্রিন্ট ও ইলেক্টনিক মিডিয়ায় সাংবাদিকরা এক প্রতিবাদ সভার আয়োজন করেন।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় নিউইয়র্কের জ্যাকসন হাইটসের ডাইভারসিটি প্লাজায় অনুষ্ঠিত প্রতিবাদ সমাবেশে সাংবাদিকরা এই ন্যাক্কারজনক ঘটনার নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা ও দোষীদের বিরুদ্ধে দলীয় ফোরামে দৃষ্টান্তমলক শাস্তির ব্যবস্হা নেয়ার দাবী জানান। সাংবাদিকদের এ দাবী না মানা পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ ও এর সকল অঙ্গ সংগঠনের সংবাদ ও অনুষ্ঠান বর্জনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার যুক্তরাষ্ট্র সফরের উপর বুধবার নিউইয়র্কের কুইন্স প্যালেসে সাংবাদিক সম্মেলন আহবান করেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আব্দুস সোবহান গোলাপ এমপি ও দফতর সম্পাদক ও প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারি বিপ্লব বড়ুয়া।

সাংবাদিক সম্মেলনে শেখ হাসিনার সফর সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে প্রশ্ন করায় ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের হামলার শিকার হন এনসিএন’র সাংবাদিক ফরিদ আলম।

সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিক ফরিদ আলম জানতে চান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ১৪১ জনের বহর নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে আসা এবং বসার বেঞ্চ উদ্বোধন, বঙ্গবন্ধুর নামে গাছ লাগানো এসব নাম সর্বস্ব কর্মসূচী ছাড়া করোনার মধ্যে এই বিশাল বহর নিয়ে সফরের প্রাপ্তি কী?

এমন প্রশ্নের জবাবে কোন উত্তর না দিয়ে বরং তেলেবেগুনে জ্বলে উঠে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা। অতর্কীত হামলা চালায় ফরিদ আলমের উপর। চারদিক থেকে আক্রমণের জন্য ঘিরে ধরা হয় তাকে। হামলার একপর্যায়ে উপস্থিত অন্য সাংবাদিকরা মানববর্ম রচনা করে তাদের সহকর্মীকে বাঁচানোর চেষ্টা করেন।

হামলার ঘটনায় নেতৃবৃন্দ এবিষয়ে কোন কার্যকর পদক্ষেপ নেননি ও কোন প্রকারের প্রতিক্রিয়া না দেখিয়ে নিরব থাকেন।

সাংবাদিকদের প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সাপ্তাহিক আজকালের প্রধান সম্পাদক মনজুর আহমদ, সাপ্তাহিক পরিচয় সম্পাদক নাজমুল আহসান, সাপ্তাহিক বাঙালী সম্পাদক কৌশিক আহমদ, সাপ্তাহিক বাংলা পত্রিকা সম্পাদক ও টাইম টেলিভিশনের সম্পাদক আবু তাহের, সাপ্তাহিক বাংলাদেশ সম্পাদক ডাঃ ওয়াজেদ এ, খান, সাপ্তাহিক আজকাল সম্পাদক জাকারিয়া মাসুদ, সাপ্তাহিক প্রবাস সম্পাদক মোহাম্মদ সাঈদ, সাপ্তাহিক দেশ সম্পাদক মিজানুর রহমান, সিনিয়র সাংবাদিক শেখ সিরাজুল ইসলাম ও মনোয়ারুল ইসলাম দৈনিক ইত্তেফাকের বিশেষ প্রতিনিধি শহীদুল ইসলাম ও প্রথম আলোর রওশন হক। সাপ্তাহিক নবযুগ সম্পাদক শাহাবুদ্দীন সাগর অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন। অন্যান্যের মধ্যে বীর মুক্তিযোদ্ধা জয়নাল আবেদীন, সিনিয়র সাংবাদিক তাসের মাহমুদ, সাপ্তাহিক দেশ প্রকাশক মনজুর হোসেন, আকবর হায়দার কিরণ, মীর ওয়াজেদ এ শিবলী, সালাহউদ্দিন আহমেদ, সৈয়দ ইলিয়াস খসরু, নীহার সরকার, মনজুরুল হক, এমদাদ হোসেন দীপু, রশীদ আহমদ ও আবুল কাশেম প্রমুখ উপস্হিত ছিলেন। ঘটনার পর বিভিন্ন রাজনৈতিক, সমাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন এবং বিশিষ্ট ব্যক্তি এর তীব্র নিন্দা জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন। এঘটনার প্রতিবাদ এখনো অব্যাহত রয়েছে। এঘটনায় নিউইয়র্ক সহ যুক্তরাষ্ট্রে প্রবাসী বাংলাদেশীদের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। ঘটনার নিন্দা জানিয়ে মিশিগান প্রেসক্লাবের সভাপতি হেলাল উদ্দীন রানা ও সেক্রেটারি ইকবাল ফেরদৌস এক বিবৃতি প্রদান করেন। তারা নিউইয়র্কের সাংবাদিকদের দাবী সাথে একাত্মতা প্রকাশ করেছেন।

এমজে/