কা’বাহ ঘরকে যারা ভাস্কর্য বলবেন তাদের পরিণতি

কা’বাহ ঘরকে যারা ভাস্কর্য বলবেন তাদের পরিণতি

আবু সাঈদ আনসারী

কা’বাহ- পৃথিবীর মানচিত্রে সর্ব প্রথম ঘর যা আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালার নির্দেশে তৈরি করা হয়েছে গোটা মানব জাতির জন্য, কোরআনুল কারিমে আল্লাহ বলছেন,

إِنَّ أَوَّلَ بَيْتٍ وُضِعَ لِلنَّاسِ لَلَّذِي بِبَكَّةَ مُبَارَكًا وَهُدًى لِّلْعَالَمِينَ
নিঃসন্দেহে সর্বপ্রথম ঘর যা মানুষের জন্যে নির্ধারিত হয়েছে, সেটাই হচ্ছে এ ঘর, যা মক্কায় অবস্থিত এবং সারা জাহানের মানুষের জন্য হেদায়েত ও বরকতময়।
সুরাহ আল ইমরান, আয়াত- ৯৬

কা’বাহ ঘরকে বানানো হয়েছে সেখানে এক আল্লাহর উপাসনা করার জন্য। কা’বাহ কোনো মূর্তি কিংবা ভাস্কর্য নয়। কোনো মুসলিম কা’বাহর ইবাদাহ করে না। যেমন আল্লাহ নিজেই বলছেন, فَلْيَعْبُدُوا رَبَّ هَذَا الْبَيْتِ
অতএব তারা যেন এবাদত করে এই ঘরের পালনকর্তার।
সুরাহ কুরাইশ, আয়াত-৩।

এটা অমুসলিমরাও জানেন। আমি পশ্চিম লন্ডনের যে এলাকায় থাকি, যে সমাজে থাকি এখানে অমুসলিমরাই বেশি। আমার প্রতিবেশী খ্রিস্টান, ইয়াহুদী, হিন্দু, শিখ ভাই বোনরা জানেন আমি প্রায়ই কা’বাহতে যাই। এক শিখ মহিলা আমাকে জমজম পানি আনতে বলেন।

ইসরাইলের তেলআবিব এয়ারপোর্টে একবার এক ইয়াহুদী সিকিউরিট অফিসারের সাথে আমার কথা হচ্ছিল - কথা প্রসংগে তিনি বললেন, ছোটবেলা তিনি অসুস্হ হলে তার দাদী মুহাম্মাদের (সাঃ) কথা বলে কা’বাহর মালিকের দোহাই দিয়ে ঝাড় ফুঁক দিতেন।

প্রতিবেশী খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বী মিস বাক সব সময় আমার মাককাহ, মাদীনাহ, জেরুজালেম ও বেথলেহেমের গল্প শুনতে পছন্দ করেন। এক ঘরকে কেন্দ্র করে এত মানুষের সমাগম তাকে বিমোহিত করে!

আর হায় সেই মুসলিম একজন আলিম এ ঘরকে statue করে ফেললো!

তারা জানেন, ইসলামে মূর্তি কিংবা ভাস্কর্যের স্হান নেই। মুহাম্মাদ (সাঃ) এর সাথে তাঁর সমগোত্রীয় আত্নীয় স্বজনদের সাথে বিরোধ লেগেছিলো এই মূর্তিগুলোকে কেন্দ্র করে। লাত, উজজাহ, মানাত, হুবুল নামক দেবতাদেরকে রেখে কেনো মুহাম্মাদ (সাঃ) এক আল্লাহর কথা বলবেন। তাঁর পূর্বপুরুষ আদাম, নূহ, ইব্রাহিম عليهم السلام এর কথা বলবেন? কেনো একশ্বরবাদকে প্রচার করবেন! তাই তারা তাঁকে controversial করে ফেলেন। এমন কোনো অত্যাচার নাই যা তাঁকে কিংবা তাঁর সাথীদের উপর করা হয় নাই তখন।

মূর্তির ব্যাপারে আল্লাহ কি বলছেন, শুনি-

يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُواْ إِنَّمَا الْخَمْرُ وَالْمَيْسِرُ وَالأَنصَابُ وَالأَزْلاَمُ رِجْسٌ مِّنْ عَمَلِ الشَّيْطَانِ فَاجْتَنِبُوهُ لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُونَ
হে মুমিনগণ, এই যে মদ, জুয়া, মূর্তি এবং ভাগ্য-নির্ধারক শরসমূহ এসব শয়তানের অপবিত্র কার্য বৈ তো নয়। অতএব, এগুলো থেকে বেঁচে থাক-যাতে তোমরা কল্যাণপ্রাপ্ত হও।
সুরাহ মায়িদাহ, আয়াত- ৯০।

আপনি বা আপনারা কা’বাহ ঘরকে সে অপবিত্র বানালেন, আসতাগফিরুললাহ। আল্লাহকে challenge করলেন। আল্লাহর আয়াতকে challenge করলেন। যেভাবে আবরাহা কা’বাহকে challenge করেছিলো। কা’বাহকে অসম্মান করেছিলো। ভেঙ্গে চুরে খান খান করতে চেয়েছিলো। আজ আপনারা তাই করলেন। মুমিনের অন্তর ভেঙ্গে দিলেন।

আপনারা হয়তো বলবেন, উনি তো statue বলেছেন, মূর্তি বলেন নি। তাহলে আসুন আমরা জানি statue এর অর্থ কি? Cambridge Dictionary অনুযায়ী statue মানে হলো-
An object made from a hard material, especially stone or metal, to look like a person or animal.

কা’বাহ কি আসলে তাই? আপনি আবরাহার কি পরিণতি হয়েছিলো জানেন? তাহলে শুনুন,
وَأَرْسَلَ عَلَيْهِمْ طَيْرًا أَبَابِيلَ
تَرْمِيهِم بِحِجَارَةٍ مِّن سِجِّيلٍ
فَجَعَلَهُمْ كَعَصْفٍ مَّأْكُولٍ

তিনি তাদের উপর প্রেরণ করেছেন ঝাঁকে ঝাঁকে পাখী
যারা তাদের উপর পাথরের কংকর নিক্ষেপ করছিল
অতঃপর তিনি তাদেরকে ভক্ষিত তৃণসদৃশ করে দেন।
সুরাহ ফিল, আয়াত- ৩-৫।

আপনার পরিণতি হয়তো আবরাহার মতো হবে কি না কে জানে?

আল্লাহ আমাদেরকে হিদায়েতের পথে রাখুন। আমিন।

নভেম্বর ২৮, ২০২০।। লন্ডন, ইংল্যান্ড।