নির্বাচন কমিশন ‘মারাত্মক বৈশিষ্ট্যপূর্ণ’ যা বিশ্বে বিরল

নির্বাচন কমিশন ‘মারাত্মক বৈশিষ্ট্যপূর্ণ’ যা বিশ্বে বিরল

কেএম নূরুল হুদার নেতৃত্বে নির্বাচন কমিশনের সদস্যরা ২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই বিভিন্নভাবে গুরুতর অসদাচরণে লিপ্ত হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়ে দেশের ৪২ জন বিশিষ্ট নাগরিক রাষ্ট্রপতির কাছে চিঠি দিয়েছেন। দেশে দলীয় অনুগত বুদ্ধিজীবীদের ‘বিস্ময়কর নীরবতা’ এবং ‘অবিশ্বাস্য তোষামোদ’-এর প্রতিযোগিতার মাঝেও নির্বাচন কমিশনের নৈতিক অধপতনের বিরুদ্ধে ৪২ জন নাগরিকের ‘রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার হুমকির ওপর সত্য উচ্চারণ’- দেশবাসীকে শুধু সাহসীই করবে না, তাদের এ অনন্য ভূমিকা দেশবাসীকে ভবিষ্যতের উজ্জ্বল সময়ের স্বপ্ন দেখতে শক্তি যোগান দেবে এবং জনগণের সংগ্রামী প্রতিভাকে উন্মোচিত ও শাণিত করবে।

রাষ্ট্রপতির কাছে আবেদনে দুই ধরনের নয়টি অভিযোগ করা হয়েছে। একটি হচ্ছে আর্থিক অনিয়ম ও দ্বিতীয়টি হচ্ছে নির্বাচনী অনিয়ম। দুর্নীতি ও অর্থসংক্রান্ত তিনটি অভিযোগ হচ্ছে ১. বিশেষ বক্তা হিসেবে বক্তৃতা দেয়ার নামে দুই কোটি টাকা নেয়ার মতো আর্থিক অসদাচরণ ও অনিয়ম ২. নির্বাচন কমিশনের কর্মচারী নিয়োগ প্রক্রিয়ায় ৪ কোটি ৮ লাখ টাকার অসদাচরণ ও অনিয়ম ৩. নিয়ম বহির্ভূতভাবে তিনজন কমিশনারের তিনটি গাড়ি ব্যবহারজনিত আর্থিক অসদাচরণ ও অনিয়ম।

নির্বাচন সংক্রান্ত ৬ অভিযোগ- ১. ইভিএম কেনা ও ব্যবহারে গুরুতর অসদাচরণ ও অনিয়ম ২. একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানে গুরুতর অসদাচরণ ও অনিয়ম ৩. ঢাকা (উত্তর ও দক্ষিণ) সিটি করপোরেশন নির্বাচনগুলোতে গুরুতর অসদাচরণ ও অনিয়ম ৪. খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে গুরুতর অসদাচরণ ও অনিয়ম ৫. গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে গুরুতর অসদাচরণ ও অনিয়ম এবং ৬. সিলেট বরিশাল রাজশাহী সিটি করপোরেশন নির্বাচনের গুরুতর অসদাচরণ ও অনিয়ম।

নির্বাচন কমিশনের ভূলুণ্ঠিত নৈতিকতা আর ভয়াবহ কদর্য অবস্থা মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত রাষ্ট্রের জন্য লজ্জাজনক।

ভোটাধিকার প্রশ্নে নির্বাচন কমিশনের দায় ও দায়িত্ব সবচেয়ে বেশি বিস্তৃত ও সুস্পষ্ট। নির্বাচন কমিশনের মতো সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানের কাজ হচ্ছে- প্রজাতন্ত্রের জনগণের ভোটাধিকার রক্ষা করা ও ভোটাধিকারের সাংবিধানিক ক্ষমতার নিশ্চয়তা প্রদান করা। জনগণের ভোটাধিকার যখন বিপদগ্রস্ত হয়, ভোটাধিকার প্রশ্নে যখন অরাজকতা সৃষ্টি হয় তখন হস্তক্ষেপ করে ভোটাধিকারের সাংবিধানিক ক্ষমতা পুনরুদ্ধার করে দেওয়াই নির্বাচন কমিশনের কর্তব্য।
সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানের উদ্দেশ্য হচ্ছে- প্রজাতন্ত্রের সাংবিধানিক নির্দেশনাকে সুরক্ষা দেয়া, সরকারের আইন বহির্ভূত দুর্বিনীত ক্ষমতা প্রয়োগের প্রবণতা থেকে বিরত রাখা, সর্বোপরি জনগণের সার্বভৌমত্ব প্রতিষ্ঠা করা।

সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলো সরকারের অবৈধ ক্ষমতা প্রয়োগের সহযোগী নয় বরং সাংবিধানিক কর্তৃত্ব প্রয়োগের উৎস। সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান সরকারের প্রতিবিম্ব নয় বরং রাষ্ট্রের প্রতিবিম্ব। গণমুখী ও গণতান্ত্রিক সমাজ বিনির্মাণের প্রয়োজনে সংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলো রাষ্ট্রের অতি প্রয়োজনীয় অনুষঙ্গ।

সরকারি দলকে আইন বহির্ভূতভাবে বৈধতা দেয়া বা সুবিধা বণ্টন করে দেয়া বা সমঝোতা বা মধ্যস্থতা করে দেয়ার কাজ সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানের নয়।

রাতের আঁধারে নির্বাচন সম্পন্ন হলে রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানগুলোই ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়ে পড়ে এবং জনগণের কাছে রাজনৈতিক দলের অস্তিত্ব অপ্রয়োজনীয় হয়ে পড়ে, যা রাষ্ট্রকে অকার্যকর করার পথে ধাবিত করে।

গণতন্ত্র হলো- বহুমুখী প্রক্রিয়া যা মানুষের চিন্তা ও কর্মের সমগ্র দিককে স্পর্শ করে, মনোজগতের মূল্যবোধকে প্রভাবিত করে। গণতন্ত্রের প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকলে মানুষ ক্রমাগত ব্যক্তিস্বার্থের বদলে সর্বজনীন মূল্যবোধের পানে এগিয়ে যায় এবং যোগ্যতা দিয়ে অর্জন করার প্রতিযোগিতায় অভ্যস্ত হয়ে ওঠে। জনগণ ক্রমাগত নাগরিক কর্তব্য পালনে সচেষ্ট হয়। গণতন্ত্রবিহীন রাষ্ট্র সমাজের জন্য অভিশাপস্বরূপ। গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া সচল থাকলে সমাজে দুর্নীতি, শোষণ ও অসাম্যের মূল উৎস উচ্ছেদের সংগ্রামকে বেগবান করা যায়। গণতন্ত্রের মাধ্যমেই মানুষের আকাঙ্ক্ষাসমূহ সার্থক বিকাশ ও চরিতার্থতা লাভ করে।
আমাদের নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে সংবিধানের ১১৮(৪) বলা হয়েছে “নির্বাচন কমিশন দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে স্বাধীন থাকিবেন কেবল এই সংবিধান ও আইনের অধীন হইবেন”।

কিন্তু আমাদের নির্বাচন কমিশন সংবিধান ও আইনের অধীন না থেকে সরকারের ইচ্ছার অধীন হয়েছেন। জনগণকে ভোট প্রদান থেকে বিরত থাকতে উৎসাহী ভূমিকা রেখেছেন।
নির্বাচন কমিশনের সৌজন্যে ভোট এখন আর জনগণের অধিকার নয়। নির্বাচন কমিশন ভোটারবিহীন নির্বাচনে যে নৈতিক সমর্থন যোগায় তাতে মনে হয় নির্বাচন কমিশন সরকারের রাজনৈতিক শাখার ভূমিকায় অবতীর্ণ। নির্বাচন কমিশন ভোটাধিকার প্রশ্নে অভিভাবকত্বের ভূমিকা গ্রহণ করার কথা কিন্তু কার্যত সরকারের ক্ষমতা সংহত করার দায়-দায়িত্ব পালন করছে, যা রাষ্ট্রের জন্য ভয়ঙ্কর খারাপ ফলাফল বয়ে আনবে।

গত কয়েক বছরে নির্বাচন কমিশন সরকারি দলের রাজনৈতিক ক্ষমতা দখল করে দেয়ার ন্যক্কারজনক ভূমিকা পালন করে তার সাংবিধানিক কার্যকারিতা হারিয়ে ফেলেছে। এখন সমাজে নির্বাচন কমিশনের উপযোগিতা একেবারে ভোঁতা হয়ে গেছে। অন্যান্য দেশের নির্বাচন কমিশন জনগণের ভোটাধিকার নিশ্চিত করার জন্য যখন অধিকতর ক্ষমতা সচেষ্ট তখন আমাদের নির্বাচন কমিশন সরকারের কাছে সাংবিধানিক ক্ষমতা হ্রাস করার প্রস্তাব পেশ করে।

আমাদের নির্বাচন কমিশন সংবিধান লঙ্ঘন, আর্থিক অনিয়ম ও অজ্ঞতায় ‘মারাত্মক বৈশিষ্ট্যপূর্ণ’ যা বিশ্বে বিরল। কিছুদিন পূর্বে বাংলা ভাষা থেকে বিদেশি শব্দ বিদায় করার জন্য ভাষাবিজ্ঞানীর দায়িত্ব গ্রহণ করেছিল, স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের নাম ও পদ-পদবি পরিবর্তনের অনধিকার প্রস্তাব উত্থাপন করেছিল। যে নির্বাচন কমিশন তার সাংবিধানিক এখতিয়ার সম্পর্কে অবগত নয়, সে প্রতিষ্ঠান অসদাচরণে অভিযুক্ত হবে না- তা কি করে আশা করা যায়!

একসময়ে ভোট মানে ছিল জনগণের উৎসব। ভোটে প্রতিফলিত হতো সমগ্র সমাজের প্রতিচ্ছবি। সেই বাংলাদেশের নির্বাচন কমিশন যখন বলেন- কে ভোট দিতে এলো কিংবা এলো না সেটা আমাদের দায়িত্ব নয়, তখন মনে হয় নির্বাচন কমিশন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের কোনো সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান নয়, মনে হয় দেশ বিরোধী কোনো অপশক্তির প্রতিষ্ঠান।

জাতীয় সংসদ থেকে ইউনিয়ন পরিষদ পর্যন্ত যে কোনো নির্বাচনে জনগণের ভোটাধিকার প্রয়োগের ন্যূনতম যে ব্যবস্থা পূর্বে ছিল তা বর্তমান কমিশন ধ্বংস করে কার্যত ঝেঁটিয়ে বিদায় করে দিয়েছে। এরপরও নির্বাচন কমিশন গর্ববোধ করে।

স্বৈরশাসক আইয়ুব খান মৌলিক গণতন্ত্র সম্পর্কে বলেছিলেন ‘এটি একটি সহজবোধ্য সাদামাটা ব্যবস্থা, যা নিয়ে কাজ করতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করা যায় সহজে তা বাস্তবায়ন যোগ্য’। আইয়ুব খানের যোগ্য উত্তরসূরি বর্তমান নির্বাচন কমিশনের কাছেও রাতের আঁধারে বা স্বল্প উপস্থিতিতে বা এক পক্ষের উপস্থিতিতে ভোটগ্রহণ ও গণনা করাও সহজবোধ্য সাদামাটা হয়, এ রকম তামাশাপূর্ণ কাজ করতেই নির্বাচন কমিশন স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করছেন এবং সহজে তা বাস্তবায়নযোগ্য করে তুলছেন।

আইয়ুব খান আরও বলেছিলেন মৌলিক গণতন্ত্রের মাধ্যমে সুদক্ষ ও কার্যকরভাবে নাগরিকদের অংশগ্রহণ পরিপূর্ণ ও বুদ্ধিবৃত্তিকভাবে প্রয়োগ করা সম্ভব কিন্তু গণতন্ত্রের প্রশ্নে সর্বোপরি সর্বজনীন ভোটাধিকারের প্রশ্ন আমরা সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমেই মীমাংসা করে ফেলেছি। সত্তরের নির্বাচনে জনগণের ভোটের অধিকারকে অমর্যাদা করার প্রতিবাদে সশস্ত্র প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিল এদেশের জনগণ, অগণিত আত্মদানের মাধ্যমে কাঙ্ক্ষিত গণতন্ত্রকে রাষ্ট্রপরিচালনার মূল ভিত্তি হিসেবে গ্রহণ করা হয়।

আমরা যদি রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় জনগণের অংশগ্রহণকে নিশ্চিত করতে না পারি তাহলে অতি দ্রুত মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত স্বপ্ন নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে। জনগণের অধিকারের স্বীকৃতি ছাড়া স্বাধীনতা অর্থহীন হয়ে পড়বে। আমরা আইয়ুব খানের পুরনো রাজনৈতিক মডেল বুকের রক্ত দিয়ে ছুড়ে ফেলেছি ভোটারবিহীন নির্বাচন প্রতিষ্ঠা করার জন্য নয়।

সুতরাং ভোটারবিহীন রাজনৈতিক সংস্কৃতি থেকে আমাদের অবশ্যই বেরিয়ে আসতে হবে। সামাজিক ও রাজনৈতিক পরিবর্তন আমাদের জন্য জরুরি। এ পরিবর্তনের লক্ষ্য হবে বৃহত্তর সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক ক্ষেত্রে জনগণের অংশগ্রহণের পরিধি বৃদ্ধি করা। রাষ্ট্র পরিচালনায় জনগণের অগ্রাধিকারই চূড়ান্ত।

জনগণের সম্মতিবিহীন রাজনৈতিক ব্যবস্থা জনগণকে ক্ষমতাহীন করে দেয়, রাষ্ট্রের ‘লক্ষ্য’ ও ‘উদ্দেশ্য’ থেকে জনগণকে বিচ্ছিন্ন করে দেয়।

‘চুরি হয়ে যাওয়া’ নির্বাচনী ব্যবস্থা পুনরুদ্ধার না হলে মুক্তিযুদ্ধের স্বপ্নভিত্তিক বাংলাদেশ বিনির্মাণ করা সম্ভব হবে না। গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক সংস্কৃতির অভাবে অধিকতর চরমপন্থার উদ্ভব ঘটবে, রাষ্ট্র এবং সমাজ অনৈতিক ও অমানবিকতা বৈশিষ্ট্যপূর্ণ হয়ে উঠবে এবং সহিংসতায় বিশ্বাসীদের উসকে দেবে। জনগণকে নির্দয় হতে বাধ্য করবে। সর্বক্ষেত্র হতে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে নির্বাসনে পাঠাবে।

সুতরাং গুরুতর অসদাচরণের অভিযোগে অভিযুক্ত নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে সংবিধানের ৯৬ অনুচ্ছেদ মোতাবেক সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল গঠন করে তাদের অপসারণ করা জরুরি। নির্বাচন কমিশন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোটের পূর্বরাতে এবং ভোটের দিন সংঘটিত গুরুতর অনিয়ম ও প্রশ্নবিদ্ধ নির্বাচনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারেনি। এমনকি ২৩১ টি কেন্দ্রে শতভাগ ভোট প্রদানের মতো অলৌকিক ঘটনায়ও নির্বাচন কমিশন একটি তদন্তের প্রয়োজন বোধ করেনি। যে নির্বাচন কমিশন বিশ্বাস করে ভোটার তালিকায় নাম লিপিবদ্ধ হওয়ার পর ভোটারের আর মৃত্যু হতে পারে না। সেজন্য শতভাগ ভোট পড়ার পরেও তারা অবাক হননি বা কোনো অনিয়মের আভাষ পাননি। এই নির্বাচন কমিশন দিয়ে ভিনগ্রহের নির্বাচন সম্পন্ন হলেও হতে পারে কিন্তু বাংলাদেশের নয়। এটা তাঁরা দক্ষতার সঙ্গে প্রমাণ করতে পেরেছেন।

জনগণ এবং রাষ্ট্রের মাঝে কারও হস্তক্ষেপ অনভিপ্রেত। জনগণকে ক্ষমতার কাঁটাস্বরূপ মনে করা কোনো বিবেচনায়ই গ্রহণযোগ্য নয়। দেশটা স্বাধীন হয়েছে জনগণের রক্তে, কারো সাথে কোনো দেনদরবারে নয়।

নির্বাচন কমিশনের অপসারণ প্রক্রিয়া নিয়ে সংবিধানের ১১৮(৫) অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে সুপ্রিম কোর্টের বিচারক যেরূপ পদ্ধতি ও কারণে শত অপসারিত হতে পারেন, সেইরূপ পদ্ধতি ও কারণ ব্যতীত কোনো নির্বাচন কমিশনার অপসারিত হইবেন না। এজন্য সংবিধানের ৯৬ অনুচ্ছেদ মোতাবেক সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের মাধ্যমে তাদের অপসারণ করা রাষ্ট্রের সাংবিধানিক ও নৈতিক কর্তব্য।

বর্তমান নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে সংবিধান লঙ্ঘনসহ আর্থিক অনিয়ম এবং গুরুতর অসদাচরণের যে অভিযোগ উত্থাপিত হচ্ছে তা দ্রুত নিরসন হতে পারে যদি কমিশন সংবিধানের ১১৮(৬) মোতাবেক রাষ্ট্রপতিকে উদ্দেশ করিয়া স্বাক্ষরযুক্ত পত্রযোগে পদত্যাগ করেন, যা হবে সবচেয়ে উত্তম বিকল্প।

কান্টের নীতি দর্শনের বলা হয়েছে মানুষের প্রকৃতি সুমহান; কেননা নৈতিকতা নামক মর্যাদার বস্তুকে নীতিরূপে গ্রহণ করতে মানুষের প্রকৃতি প্রস্তুত; অথচ কার্যক্ষেত্রে সেই নীতিবোধ অনুসরণ করতে সে দুর্বলতার পরিচয় দেয়, যে যুক্তিবৃত্তির কাজ হলো নৈতিক আইন দান করা, সেই যুক্তিকেই স্বার্থসিদ্ধির জন্য ব্যবহার করা হয়।

স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রের সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক সুবিচার প্রতিষ্ঠার দার্শনিক ভিত্তিকে উপেক্ষা করে বাংলাদেশ বিনির্মাণ করা সম্ভব নয়।-মানবজমিন

লেখক: গীতিকার
faraizees@gmail.com