একদলীয় শাসন কায়েমের সব আয়োজন সম্পন্ন করেছে সরকার: মির্জা আলমগীর

একদলীয় শাসন কায়েমের সব আয়োজন সম্পন্ন করেছে সরকার: মির্জা আলমগীর

ঢাকা, ৮ অক্টোবর (জাস্ট নিউজ) : বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধ্বংস করে একদলীয় শাসন কায়েম করতে সব আয়োজন সম্পন্ন করেছে সরকার।

সোমবার রাজধানীর গুলশানে লেকশোর হোটেলের হলরুমে ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন-২০১৮’ শীর্ষক মতবিনিময় সভার স্বাগত বক্তব্যে এ মন্তব্য করেন তিনি।

মির্জা আলমগীর বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন পাস নিয়ে সাংবাদিক থেকে শুরু করে সারাদেশে আলোড়ন তুলেছে করেছে। দেশে যে কর্তৃত্ববাদী শাসন চলছে, তাকে আরো চূড়ান্তভাবে প্রতিষ্ঠার জন্য সকল আয়োজন সম্পন্ন করা হয়েছে।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমরা যে স্বপ্ন দেখেছিলাম মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে সেই মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে সম্পূর্ণভাবে ধূলিসাৎ করে দেয়া হচ্ছে৷ গণতান্ত্রিক, মুক্ত স্বাধীন দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন ভেঙে ফেলা হচ্ছে। আমরা অত্যন্ত ক্ষোভের সঙ্গে লক্ষ্য করছি বহু মত, বহু পথ, ভিন্ন মতের ব্যবস্থাকে পুরোপুরি শেষ করে দিয়ে একটি দলের শাসন বাস্তবায়নের যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। জনগণের আকাঙ্ক্ষাকে ধ্বংস করা হচ্ছে। এভাবে চলতে দেয়া যায় না।

দেশের সকল মানুষকে এর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে বলে মন্তব্য করেন মির্জা আলমগীর।

বিএনপি আয়োজিত সভায় অংশ নেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ভাইস-চেয়ারম্যান শওকত মাহমুদ, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানী, সাংগঠনিক সম্পাদক শ্যামা ওবায়েদ সহ- বিএনপির কেন্দ্রীয় শীর্ষ নেতৃবৃন্দ, গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব, কূটনৈতিক নেতৃবৃন্দ।

এর আগে শনিবার সকালে রাজধানীর নয়াপল্টন দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সরকার চায় না বিএনপি নির্বাচনে আসুক। তাই বিএনপি নেতাকর্মীদেরকে হামলা-মামলা করে নির্বাচন থেকে দূরে সরিয়ে রাখতে চাইছে।

মির্জা আলমগীর বলেন, সরকার যে কোনোভাবে একতরফা নির্বাচন করতে চাইছে। জগণের ভোটের উপর সরকারের কোনো আস্থা নেই। তাই বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রযন্ত্র ব্যবহার করছে।

তিনি বলেন, সরকার সম্ভাব্য সব ধরনের চেষ্টা চালাচ্ছে বিএনপি যাতে করে নির্বাচনে যেতে না পারে। যা আরেকটি ভোটারবিহীন নির্বাচনের কূটকৌশল।

তিনি বলেন, আমি দ্ব্যার্থহীন কণ্ঠে ফের সরকারকে বলতে চাই যদি অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন চান তবে বিএনপির দেওয়া ৭ দফা প্রস্তাব মেনে নিন। নির্বাচনের আগে সংসদ ভেঙে দিন। সহায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন দিন। সবাইকে নিয়ে নির্বাচন করুন। জনগণের রায় মেনে নিন।

তিনি বলেন, ১ সেপ্টেম্বর থেকে ৫ অক্টোবর পর্যন্ত গায়েবি মামলা দেয়া হয়েছে ৪ হাজার ১৪৯ টি। আসামি করা হয়েছে ৮৬ হাজার ১৯২ জনকে। অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে ২ লাখ ৭৬ হাজার ২৭৮ জনকে। ৪ হাজার ৬৮৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। রিমান্ডে নেয়া হয়েছে ২৪৭ জনকে।

এছাড়া ২০০৯ থেকে ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৮ পর্যন্ত ৯০ হাজার ৩৪০ টি মামলায় ২৫ লাখ ৭০ জনকে আসামি করা হয়েছে। ১৫১২ জন নিহত কর্মী, ১২০৪ জন গুম, ৪২৩ জন গুম হয়ে আছে। এসব করা হয়েছে শুধুমাত্র বিএনপিকে নির্বাচন থেকে দূরে সরিয়ে রাখতে বলে জানান মির্জা ফখরুল।

ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, বিএনপিকে নির্বাচনের বাইরে রেখে নির্বাচন করতে সকল আয়োজন করা হয়েছে। সমস্ত গায়েবি মামলা নিয়ে নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করছে।

এসময় উপস্থিত ছিলেন, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আব্দুল মঈন খান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন প্রমুখ।

(জাস্ট নিউজ/একে/১২০০ঘ.)