জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সমালোচনায় শেখ হাসিনা

ঐক্যফ্রন্ট ছাল-বাকলের তৈরি, তবে সাধুবাদ জানাই

ঐক্যফ্রন্ট ছাল-বাকলের তৈরি, তবে সাধুবাদ জানাই

ঢাকা, ২২ অক্টোবর (জাস্ট নিউজ) : নতুন গঠিত জাতীয় ঐক্যফ্রন্টেকে ‘ছাল-বাকল দিয়ে তৈরি’ জোট বলে আখ্যায়িত করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তবে এই জোটকে তিনি স্বাগত জানিয়েছেন। শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘দেশে রাজনৈতিক স্বাধীনতা আছে। এখানে বিচার বিভাগ স্বাধীন, গণমাধ্যম স্বাধীন। যে কেউ ইচ্ছে করলে রাজনীতি করতে পারে। আমি নতুন জোটকে স্বাগত জানাই।’

সোমবার গণভবনে সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সৌদি আরব সফর নিয়ে প্রধানমন্ত্রী এই সংবাদ সম্মেলন করছেন। গত ১৬ অক্টোবর মঙ্গলবার থেকে ১৯ অক্টোবর শুক্রবার পর্যন্ত সৌদি সফর করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রী জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট প্রসঙ্গে বলেন, খুনি, দুর্নীতিবাজ ও নারী কটূক্তিকারীদের ঐক্য হয়েছে। নতুন জোট সফল হলে অসুবিধা কোথায়?

নির্বাচনকালীন ছোট মন্ত্রিসভা প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সংসদে বিরোধী দলগুলো চাইলে জকে না হলে হবে না। তিনি বলেন, এ নিয়ে বিরোধীদলীয় নেতার সঙ্গে কথা বলেছেন। শেখ হাসিনা বলেন, ২০১৪ সালের নির্বাচনের সময় ছোট মন্ত্রিসভা ও তখনকার বিরোধী দলকে নিয়ে সব দলের সরকার গঠনের কথা বলেছিলাম। এখন এটা দরকার আছে কি না সেটা দেখা যাবে।

সংবাদ সম্মেলনের প্রথমেই প্রধানমন্ত্রী তার লিখিত বক্তব্যে সৌদি আরব সফরের বর্ণনা দেন। তিনি সৌদি বাদশাহ সালমান বিন আবদুল আজিজ আল সৌদের সঙ্গে তার একাধিক বৈঠকে আলোচিত বিষয় নিয়ে কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই সাক্ষাতের সময় বাদশাহ সালমান বিন আবদুল আজিজ সৌদি আরবকে আমার দ্বিতীয় বাড়ি হিসেবে উল্লেখ করেন। এ সময় সৌদি বাদশাহ বাংলাদেশের অগ্রগতির প্রশংসা করেন। আর উন্নয়নের ধারাবাহিকতার প্রয়োজনীয়তার কথা বলেন।

লিখিত বক্তব্যের পর প্রধানমন্ত্রী সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তর দেন। ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে গড়ে ওঠা জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠন নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর মন্তব্য চাওয়া হয়। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি একে স্বাগত জানাই। তবে একটু লক্ষ্য রাখা দরকার, কারা কারা এক হলো। কোন চরিত্রের লোক তারা। এমনকি মেয়েদের প্রতি কার কী মন্তব্য।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ এটা নিয়ে কোনো দুশ্চিন্তায় নেই। শেখ হাসিনা বলেন, এখানে স্বাধীনতা বিরোধী আছে, জঙ্গিবাদ সন্ত্রাস সৃষ্টিকারী আছে। সব মিলেই কিন্তু একটা হয়েছে। এর মধ্যে অনেকেই আওয়ামী লীগে ছিল। তারা এখন আওয়ামী লীগের বিরোধী হয়েছে।

নবগঠিত জোটের সাত দফা দাবি নিয়ে প্রশ্ন করলে শেখ হাসিনা বলেন, ‘সাত দফা আর কত দূর যায় তার জন্য অপেক্ষা করে আছি। তারপর আমি আমার বক্তব্য দেব।’

আগামী নির্বাচনে অঙ্গীকার কী এমন প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষের জন্য কাজ করে যাচ্ছি। বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশে উন্নতি হয়েছে। বাংলাদেশকে দেখতে চাই দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশ গড়াই লক্ষ্য। আমার লক্ষ্য, উন্নয়নের গতিধারা অব্যাহত থাকবে। ২০৪১ সালের মধ্যে বিশ্বের রোল মডেল হিসেবে গড়ে তুলতে চাই।

সৌদি সফরের সময় ১৭ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রিয়াদে বাংলাদেশ দূতাবাসের সদ্য নির্মিত নিজস্ব ভবনের উদ্বোধন করেন। ১৮ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী মহানবীর (সা.) পবিত্র রওজা মোবারক জিয়ারত করেন। ওই দিন তিনি মদিনা থেকে মক্কা যান এবং রাতে পবিত্র ওমরাহ পালন করেন। একই দিনে প্রধানমন্ত্রী জেদ্দায় বাংলাদেশ কনস্যুলেটের জন্য সদ্য কেনা জমিতে নতুন ভবনের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন।

২০১৬ সালের পর রিয়াদে এটি হবে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সৌদি বাদশাহর দ্বিতীয় বৈঠক। এ ছাড়া ২০১৪ সালে ক্ষমতায় আসার পর এটি প্রধানমন্ত্রীর চতুর্থ সৌদি সফর। এ বছরের এপ্রিলে সৌদি নেতৃত্বাধীন ২৩-দেশের যৌথ সামরিক মহড়া ‘গালফ শিল্ড-১ ’এর সমাপনী অনুষ্ঠানে যোগ দিতে তিনি সর্বশেষ সৌদি আরব গিয়েছিলেন। প্রধানমন্ত্রীর ১৯ অক্টোবর দেশে ফেরেন।

বিদেশ সফরের পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংবাদ সম্মেলনে সফর সম্পর্কে অবহিত করেন। তিনি সাংবাদিকদের নানা প্রশ্নেরও জবাব দেন। এসব প্রশ্নে তার সফর, সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও সমসাময়িক ঘটনা স্থান পায়।

প্রধানমন্ত্রী জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে যোগদান শেষে যুক্তরাষ্ট্র থেকে ফিরে এসে সর্বশেষ সংবাদ সম্মেলনটি করেছিলেন।

(জাস্ট নিউজ/একে/১৭৫৯ঘ.)