সরকার ঐক্যফ্রন্টের শক্তি নিয়ে আতঙ্কিত: মান্না

সরকার ঐক্যফ্রন্টের শক্তি নিয়ে আতঙ্কিত: মান্না

ঢাকা, ২৩ অক্টোবর (জাস্ট নিউজ) : সরকার ঐক্যফ্রন্টের শক্তি নিয়ে আতঙ্কিত বলে মন্তব্য করেছেন নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক এবং জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা মাহমুদুর রহমান মান্না। তিনি বলেন, ঐক্যফ্রন্টের সমাবেশে জনগণের ব্যাপক আগ্রহ রয়েছে। সরকার ঐক্যফ্রন্টের শক্তি নিয়ে আতঙ্কিত।

সোমবার রাতে বেসরকারি একটি টেলিভিশনের টকশোতে তিনি এ মন্তব্য করেন।

টকশোতে অতিথি ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ন সাধারণ সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক, বিএনপির যুগ্ন মহাসচিব মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, নাগরিক ঐক্য’র আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না এবং সাংবাদিক আফসান চৌধুরী।

সরকার চাপে আছে এজন্যেই সমাবেশের অনুমতি দিয়েছে উল্লেখ করে মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, সিলেটে আমরা প্রথম সমাবেশ করতে যাচ্ছি। এ কারণে এটি গুরুত্বপূর্ণ। আমরা যদি ঐক্যবদ্ধ থাকি, গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম চালিয়ে যাই তাহলে বিজয় আসবেই। আর সিলেটের সমাবেশ খুব বিশাল হতে পারে বলে আমরা মানুষের কাছ থেকে সাড়া পাচ্ছি। মানুষের উপস্থিতির মাধ্যমে দেশবাসীকে বার্তা দিতে চাই।

ক্ষমতাসীন জোটের অন্যতম শরিক জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদ বলেছেন যথা সময়ে নির্বাচন হওয়া নিয়ে তিনি সন্দিহান। অন্যদিকে আজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংবাদ সম্মেলনের বলেছেন, নির্বাচন কেউ ঠেকাতে পারবে না, ঠিক সময়েই হবে। সঠিক সময়ে নির্বাচন হওয়া নিয়ে সংশয়ের বিষয়টি কেন আসছে?

উপস্থাপকের এমন প্রশ্নের জবাবে জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, এরশাদ সাহেব নির্বাচন নিয়ে শংকার কথা কোন কারণে বলেছেন আমি জানি না। কিন্তু রাজনীতি স্বাভাবিক গতি অনুযায়ী চলছে, চলবে। সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন হবে। বানচালের কোনো সুযোগ নেই।

এ বিষয়ে বিএনপি নেতা মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেন, আমরা নির্বাচনে অংশ নিতে চাই। বর্তমানের দুঃসহ অবস্থা থেকে মুক্তির জন্যই নির্বাচনে যেতে চাই আমরা। নির্বাচন নিয়ে সংশয়ের কথা বলেছেন ড. কামাল হোসেন, কাদের সিদ্দিকীসহ আরও অনেকে। আমরা এমন কথা বলিনি। আমরা নির্বাচনে যেতে চাই। সুষ্ঠু নির্বাচন চাই। কিন্তু সরকার নতুন করে বিএনপির ওপর নিপীড়ন ও ধরপাকড় শুরু করেছে।

তিনি আরো বলেন, সরকার কোনো লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করছে না। প্রধানমন্ত্রী ২ বছর ধরে রাষ্ট্রীয় খরচে নিজেদের জন্য ভোট চাচ্ছেন। আর অন্যদিকে বিরোধীদলকে হামলা মামলা দিয়ে ব্যস্ত রেখেছেন।

বিএনপির এই নেতা আরও অভিযোগ করেন, বিরোধীদল এখন পর্যন্ত কোনো রাজনৈতিক সমাবেশে সহিংস আচরণ করেনি তারপরও সরকার সহিংসতা ঘটানোর আশঙ্কায় আমাদের সমাবেশের অনুমতি দিচ্ছে না। সমাবেশে করা আমাদের সাংবিধানিক অধিকার।

আলালের বক্তব্যের জবাবে জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, নিরাপত্তার স্বার্থে পুলিশ অনুমতি দেয়নি। সমাবেশের অনুমতি প্রসঙ্গে সরকারের কোনো বিধিনিষেধ ছিলো না। বরং ঐক্যফ্রন্টের সমাবেশের সফলতা কামনা করি। আমাদের প্রধানমন্ত্রীও আজ তাদের সমাবেশের জন্য সফলতা কামনা করেছেন।

তিনি আরও বলেন, লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড বলতে বিএনপি কী বুঝায় আমি জানি না। গণজাগরণই হলো লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড। এটা তৈরিতে সরকারের হাত নেই। জনগণের স্বতঃস্ফুর্তভাবেই সত্যিকারের লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি হয়।

অন্য অতিথি সাংবাদিক আফসান চৌধুরী বিএনপিকে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিয়ে চিন্তা না করে নিজেদের দল গোছানোর পরামর্শ দেন। তিনি বলেন, বিএনপি এক্ষেত্রে যেসব সুবিধা চাইছে তা আসলে সরকার দিতে পারেনা। সেগুলো দেয় নির্বাচন কমিশনা। আমার মনে হয় বিএনপি লেভেল প্লেয়িং ফিল্ডের দাবি করে নিজেদের দলকে গোছালেই ভাল করবে। বর্তমান সরকার তাদেরকে যতটুকু দিচ্ছে তার চেয়ে বেশি দেয়ার কোনো কারণ নেই। আপনারা এমন একটি পরিস্থিতি তৈরি করুন যাতে জনগণ আপনাদেরকে ভোট দেয়।

নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, সরকার চাপে আছে এজন্যেই সমাবেশের অনুমতি দিয়েছে। ঐক্যফ্রন্টের সমাবেশে জনগণের ব্যাপক আগ্রহ রয়েছে। সরকার ঐক্যফ্রন্টের শক্তি নিয়ে আতঙ্কিত।

(জাস্ট নিউজ/এমআই/১০০৫ঘ.)