কোন বাধায় থামাতে পারেনি ঐক্যফ্রন্টের সিলেটে সমাবেশের জনস্রোত

কোন বাধায় থামাতে পারেনি ঐক্যফ্রন্টের সিলেটে সমাবেশের জনস্রোত

সিলেট, ২৪ অক্টোবর (জাস্ট নিউজ) : কোন বাধায় থামাতে পারেনি জনস্রোত। সিলেট নগরীর ঐতিহাসিক রেজিষ্ট্রারী মাঠে হাজার ছুঁয়ে লাখো প্রতিবাদী মানুষের ঢল নেমেছিল জাতায় ঐক্যফ্রন্টের সমাবেশে। ছোট মাঠে জনসমুদ্রের এ বিশালতা বিস্মৃত করেছে সচেতন মানুষকে। নতুন আশা জাগানিয়ার সৃষ্টি হয়েছে সরকার বিরোধী দল তথা বিএনপির কর্মী সমর্থককে। তারা নব উদ্যমে দীপ্ত শপথ নিয়েছে আন্দোলন সংগ্রামে সর্বোচ্চ ত্যাগের।

শুরু থেকে সংশয় সন্দেহ ছিল সমাবেশ নিয়ে। অনুমতির ঘেরাটোপে ফেলে বাধার দেওয়াল তোলে রাখা হয়েছিল। কি হবে, হচ্ছে এ প্রশ্নের শেষ উত্তর ছিল না স্থানীয় শীর্ষ ঐক্যফ্রন্ট নেতাদের কাছে। আশাবাদি ছিলেন সমাবেশ হবেই। ২৩ অক্টোরব মঙ্গলবারের নির্ধারিত সমাবেশ অনুমতি না দেওয়ায় করতে পারেনি ঐক্যফ্রন্ট। একদিন পর গতকাল অবশেষে লেজেগোবের মিশিয়ে সমাবেশের অনুমতি দেয় প্রশাসন। একদিনের নোটিশে সমাবেশের প্রস্তুতি মুখের কথা নয়। কিন্তু তাই করে যোগ্যতা ও দক্ষতার ইতিহাস স্থাপন করেছে সিলেট জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট তথা বিএনপির নেতৃবৃন্দ। সেই সাথে ত্যাগি তীতিক্ষা তারা দেখিয়েছে সরকারের রক্তচুক্ষুর বিপরীতে।

সমাবেশ নিয়ে প্রকাশ্যে প্রস্তুতি সভায় বাধা দিয়েছে প্রশাসন। জেলা বিএনপির সভাপতি ও স্থানীয় জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট মুখপাত্র আবুল কাহের চৌধুরী শামীমের বাসায় মঙ্গলবার রাতে হানা দেয় পুলিশ। র্শীষ নেতাকর্মীদের আটক করে সাধারন নেতাকর্মীদের মনোবল ভেংগে দেওয়ার আপ্রাণ চেষ্টা করা হয়। এদিকে গ্রেফতার আতংক, অন্যদিকে সমাবেশ। শ্যাম রাখি না কূল রাখি অবস্থা ছিল স্থানীয় ঐক্যফ্রন্ট নেতাদের। কিন্তু তারা দু’দিকইে বজায় রেখে সফল সার্থক সমাবেশের কৃতিত্ব দেখিয়েছে।

গতকাল সমাবেশকে চ্যালেঞ্জ করে রাজপথে কৌশলী কর্মসূচী দেয় স্থানীয় আওয়ামী লীগ। সরকারের উন্নয়ন ফিরিস্থি তুলে ধরতে লিফলেট হাতে নিয়ে ঐক্যবদ্ধ হয়ে মাঠে নামে সকালে দলের নেতৃবৃন্দ। এর মধ্যে দিয়ে নগরীর রাজপথে দখল নেয় তারা। সমাবেশের কিছুক্ষণ আগে তারা ঘরে ফিরে। কিন্তু তাদের অবস্থান নানা মাধ্যমে মুর্হুতে ছড়িয়ে পড়ে সর্বত্র। অজানা আতংক বইতে থাকে আনাচে কানাচে। শংকা, উদ্বেগ ঘিরে ধরে সাধারন মানুষ তথা সমাবেশে যোগ দেওয়া মানুষের মধ্যে। সমাবেশে জনতার যে স্রোত দুর দুরান্ত থেকে সকালে নগরীর অভিমুখে রওয়ানা দেওয়ার পথে ভাটা পড়ে।

সিলেটের আঞ্চলিক সড়কগুলোতে সাধারন যান চলাচল কৌশলে সীমিত করে দেওয়া হয়। যাতে সমাবেশে মানুষের যোগদান বাধাগ্রস্ত হয়। সমাবেশে ঘোষণা করে অভিযোগ তোলা হয়, গাড়ি বহরে বাধা দেওয়া হচ্ছে। বুদ্ধিবৃত্তিক বাধা আপত্তির পাশাপাশি প্রকাশ্যে রাষ্ট্রীয় যন্ত্রের ভীতি প্রদর্শন, গ্রেফতার তোয়াক্কা না করেই সমাবেশে শুরু থেকেই জনসমাগম বাড়তে থাকে। সেই সমাগম সমাবেশ শেষ না হওয়া পর্যন্ত অব্যাহত থাকে। কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে উঠে ঐতিহাসিক রেজিষ্ট্রারী মাঠ।

বিচ্ছিন্ন, বিক্ষিপ্তভাবে মানুষের উপস্থিতির পাশাপাশি মাঝে মধ্যে সিলেটের বিভিন্ন স্থান থেকে ছোট ছোট মিছিল সহকারে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শরীক দল, বিএনপি ও তার অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা সমাবেশ স্থলে জড়ো হয়। জন সমাগমে রেজিষ্ট্রারী মাঠের সীমানা পেরিয়ে গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলোতে একাকার হয়ে পড়ে। বন্ধ হয়ে যায় স্বাভাবিক যান চলাচল। তালতলা থকে সুরমা পয়েন্ট রাস্তার সবদিকে মানুষ আর মানুষ। উচু ভবন, বাসার ছাদ কোথাও বাকী নেই সমাবেশে শরিক হওয়া মানুষের উপস্থিতি। এছাড়া দুরান্তের বিভিন্ন স্থানে মাইকের পাশেও উৎসুক মানুষের জটলা ছিল। মানুষের আচরণ ছিল স্বাভাবিক ও মনোযোগী।

মানুষের মধ্যে ছিল ব্যাপক কৌতুল তাদের ভাবনায় ছিল দেশের সর্বোচ্চ মুরব্বি তথা রাজনীতিকদের এ চেষ্টায় হয়তো বদলাতে পারে বাংলাদেশ। কারণ সমাবেশে আমন্ত্রীত অতিথিদের দৃড়চেতা বক্তব্য তাদের অন্তর কেড়েছে। দৃশমান হয়েছে দেশের চলমান পরিস্থিতি। তাই উত্তরনের অপেক্ষায় সারাদেশের মতো সিলেটবাসী। সব বাধাকে অতিক্রম করে সমাবেশে যোগ দিয়ে তারই প্রমাণ তারা দেখিয়েছে জাতীয় ফ্রন্ট নেতাদের। নেতাদের সামনে রেখে তারাও পথ চলতে প্রস্তুত সেই প্রত্যয়ে তার করেছে দু’হাত তোলে আগামী দিনের আন্দোলন সংগ্রামে রাজপথ কাঁপাতে।

(জাস্ট নিউজ/একে/২৩০৬ঘ.)