চাপে আছেন শাজাহান খান !

চাপে আছেন শাজাহান খান !

ঢাকা, ২৯ অক্টোবর (জাস্ট নিউজ) : একদিকে সরকারের মন্ত্রী, অন্যদিকে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের কার্যকরী সভাপতি শাজাহান খান। পরিবহন শ্রমিকরা জাতীয় সংসদে সদ্য পাস হওয়া ‘সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮’-এর কয়েকটি ধারা বাতিলের দাবিতে রাজপথে ৪৮ ঘণ্টার পরিবহন ধর্মঘট করছেন। যাতে জিম্মি হয়ে পড়েছে দেশের প্রায় ১৬ কোটি মানুষ। নির্বাচনকে সামনে রেখে বিষয়টি সরকারকে পুরো মাত্রায় বিব্রত করেছে। এ নিয়ে সন্দেহের তীর তার দিকে। বিষয়টি নিয়ে চাপে আছেন নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান।

পরিবহন ধর্মঘটের বিষয়ে শাহাজান খান সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, তিনি এ বিষয়ে কিছুই জানেন না। অন্যদিকে তার ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক বলেছেন, ‘তার বিষয়টি না জানার কোনও কারণ নেই। আর না জানলে কার কী করার আছে?’

সরকারের একাধিক মন্ত্রী বলেন, শাজাহান খান বার বার শ্রমিকদের ইস্যুতে সরকারকে বিব্রত করছেন। সরকারের মন্ত্রী হয়ে যেখানে সরকারকে বিব্রত হওয়ার হাত থেকে রক্ষা করবেন, তা না করে তার কারণে সরকার বার বার বিব্রত হচ্ছে। বিষয়টি আমাদেরও ভাবিয়ে তুলছে। তাই অনেকে প্রশ্ন করেছেন, তিনি আসলে কার প্রতিনিধিত্ব করছেন? তিনি কোন পদটিকে বড় করে দেখছেন সরকারের ‘মন্ত্রী’, না ‘শ্রমিক নেতা’?

চলমান পরিবহন ধর্মঘট ইস্যুতে শাজাহান খানের ভূমিকা নিয়ে তীব্র সমালোচনা করেছেন সরকারি ও বিরোধীদলীয় সংসদ সদস্যরা। জানা গেছে, সোমবার অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার বৈঠকেও প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে শাজাহান খানের কঠোর সমালোচনা করেছেন মন্ত্রীরা। তারা বলেছেন, অবশ্যই এই ধর্মঘটে শাজাহান খানের ইন্ধন রয়েছে। তিনি বললেই হবে না যে, তিনি কিছু জানেন না। এ দায় তাকে নিতে হবে। বিষয়টি সরকারকে বিব্রত করছে। শ্রমিকরা ধর্মঘটের নামে নৈরাজ্য করছেন। এই নৈরাজ্য থেকে রেহাই পাননি কলেজছাত্রী থেকে শুরু করে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে নিযুক্ত সচিবও।

সরকারের ভেতর ও বাইরে এত আলোচনা-সমালোচনার পরেও মুখ বন্ধ রেখেছেন নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান। ২৮ অক্টোবর সকাল ছয়টায় পরিবহন ধর্মঘট শুরু হওয়ার পর থেকেই তার মুখ বন্ধ। কারও সঙ্গে কথা বলছেন না। রবিবার সকালে সচিবালয়ে সাংবাদিকরা তার সঙ্গে কথা বলতে চাইলে তিনি এড়িয়ে গেছেন। বলেছেন, এ কর্মসূচি সম্পর্কে তিনি ‘কিছুই জানেন না’। আবার বলেছেন, ‘নো কমেন্ট’, ‘আমি কিছু বলবো না’।

এদিকে, সরকারি কাজেও যোগ দিচ্ছেন না তিনি। রবিবার তিনি সংসদের অধিবেশনে যোগ দেননি। অন্যদিকে সোমবার মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকেও তিনি যোগ দেননি।

জানতে চাইলে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা নাম প্রকাশ না করার শর্তে এ প্রতিবেদককে জানিয়েছেন, শাজাহান খানের আপন ভাগিনা, যিনি পেশায় চিকিৎসক ছিলেন, তিনি রবিবার সকালে একটি হাসপাতালে মারা গেছেন। তার মৃত্যুর সংবাদ শুনেই সচিবালয় থেকে বের হয়ে যাওয়ার পথে সাংবাদিকরা শাজাহান খানের কাছে পরিবহন ধর্মঘট প্রসঙ্গে জানতে চেয়েছেন, তখন তার মন খুবই খারাপ ছিল। তাই হয়তো কথা বলেননি।

সোমবার অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার বৈঠকে যোগ দেননি শাজাহান খান। কারণ জানতে চাইলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সোমবার তার ভাগিনার লাশ নিয়ে গোপালগঞ্জে গিয়েছেন বলে মন্ত্রিসভার বৈঠকে অংশ নিতে পারেননি।

এ বিষয়ে জানতে রবিবার (২৮ অক্টোবর) রাত ৮টার কিছু পরে নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খানের মোবাইলে ফোন করলে অন্যপ্রান্ত থেকে জানানো হয়, মন্ত্রী ক্লান্ত, তিনি এখন ঘুমাচ্ছেন। সোমবার (২৯ অক্টোবর) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে পুনরায় কয়েকবার ফোন করলে ফোনটি ব্যস্ত থাকার সংকেত পাওয়া গেছে। সূত্র: বাংলা ট্রিবিউন

(জাস্ট নিউজ/ডেস্ক/একে/২২০৬ঘ.)