খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে উত্তাল সোহরাওয়ার্দীর জনসমুদ্র

‘আগামীকাল ফয়সালা করুন, নইলে আন্দোলন’

‘আগামীকাল ফয়সালা করুন, নইলে আন্দোলন’

ঢাকা, ৬ নভেম্বর (জাস্ট নিউজ) : আগামীকাল বুধবার গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সংলাপে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের ৭ দফা দাবির ব্যাপারে ফয়সালা না হলে আন্দোলনের মাধ্যমে সেই দাবি আদায় করা হবে। মঙ্গলবার রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের জনসভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন এই কথা বলেন।

সরকারের পদত্যাগ, নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন, বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াসহ সব রাজবন্দির নিঃশর্ত মুক্তিসহ ৭ দফা দাবিতে বাংলাদেশের সংবিধান প্রণেতা, গণফোরামের সভাপতি ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বাধীন নতুন জাতীয় ঐক্য এ জনসভার আয়োজন করে।

খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, আজকের সমাবেশ ৭ দফা দাবির পক্ষের সমাবেশ। এই ৭ দফা এখন দেশের জনগণের দাবিতে পরিণত হয়েছে। দেশের জনগণ ৭ দফা দাবির পক্ষে ঐক্যবদ্ধ। তাই আমরা দাবি আদায় করেই ঘরে ফিরব।

বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক আন্দোলনের প্রধাননেত্রী ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে উত্তাল হয়ে উঠে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের লাখো জনতার জনসমুদ্র। মুহুর্মুহু স্লোগান দিতে থাকে ‘মুক্তি চাই, দিতে হবে।’ সেই সাথে উচ্চারিত হয় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মজলুম জননেতা তারেক রহমানের বিরুদ্ধে মিথ্যা ও ষড়যন্ত্রমূলক মামলা ও রায় বাতিলের দাবি।

জুলুম নির্যাতন বন্ধের আহ্বান জানিয়ে সরকারের উদ্দেশে বাংলাদেশের সংবিধান প্রণেতা, গণফোরামের সভাপতি ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ড. কামাল হোসেন বলেছেন, দেশের মালিক আজ জেগেছে। তারা তাদের অধিকার আদায় করেই ঘরে ফিরবে। তিনি বলেন, ‘এ দেশে কোনো রাজতন্ত্র নেই। এ দেশ কোনো মহারাজা-মহারানির নয়। ১৬ কোটি জনগণের এ দেশে সরকারি দলের জন্য এক আইন আর বিরোধীদের জন্য অন্য আইন, এমনটা চলতে পারে না।’ বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াসহ সব রাজবন্দির মুক্তি দাবি করে ড. কামাল হোসেন বলেন, ‘অবিলম্বে তাদের মুক্তি দিন। অন্যথায় আপনাদের কঠিন জবাব দিতে হবে।’

ড. কামাল হোসেন বলেন, ‘আপনারা পাড়ায় পাড়ায়, মহল্লায় মহল্লায়, জেলায় জেলায় দাঁড়িয়ে যান। দেশ আবার স্বাধীন হবে। জনগণ আবার তাদের মালিকানা ফেরত পাবে।’

ঐক্যফ্যন্টের এই শীর্ষ নেতা বলেন, ‘এ দেশে যা হচ্ছে তা মেনে নেওয়া যায় না। যখন তখন যাকে তাকে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে।’ তিনি বলেন, আমি আজকের জনসভা থেকে বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবি করছি। তাকে নিঃশর্ত মুক্তি দিতে হবে।’

ড. কামাল হোসেন বলেন, ‘যখন তখন যাকে তাকে গ্রেপ্তার করবেন? স্বাধীন দেশে এটা চলতে পারে না। আর ভোটার বিহীন সরকার তো আরো পারে না। নির্বাচিত সরকার হলেও এটি পারে না। এটি সংবিধান সম্মত নয়।’

সরকারের উদ্দেশে ড. কামাল হোসেন বলেন, ‘রাস্তাঘাট বন্ধ করে, বাস লঞ্চ বন্ধ করে জনগণকে নিষ্ক্রিয় করা যাবে না। আজকের জনসভা তারই প্রমাণ। জনগণ তাদের দাবি আদায়ে ঐক্যবদ্ধ। মনে রাখবেন ইতিহাস প্রমাণ কোনো বাধা বিপত্তি এ দেশের জনগণ কখনো মেনে নেয়নি।’

ড. কামাল হোসেন আরো বলেন, ‘আমাদের সবাইকে ভোট কেন্দ্রের পাহারাদার হতে হবে। ভোটের পাহারাদার হলে স্বাধীনতার পাহারাদার হওয়া যাবে। রাষ্ট্রের মালিক হিসেবে এটা আমাদের অধিকার।’ তিনি বলেন, ‘আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। সবার ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টা ছাড়া জনগণের দাবি আদায় সম্ভব হবে না। সবাই এক থাকলে আমাদের অধিকার আদায় হবেই। আমরা দেশের জনগণকে মুক্ত গণতন্ত্র দিব।’

সরকারের উদ্দেশে ড. কামাল হোসেন বলেন, ‘তিন মাসের কথা বলে ভোট ছাড়াই পাঁচ বছর কাটিয়ে দিলেন। এটা ভাবতে অবাক লাগে। জনগণ জেগে উঠেছে- এবার ভোটের অধিকার নিশ্চিত হবেই হবে। গত পাঁচ বছরে প্রমাণ হয়েছে- সরকারের কথার এক পয়সারও দাম নেই।’

সমাবেশে বাধা দেওয়ার অভিযোগ করে ড. কামাল হোসেন বলেন, ‘আজকের এ সমাবেশে যাতে লোকজন আসতে না পারে সেজন্যই সরকার বাস, লঞ্চ বন্ধ করাসহ সব জায়গায় ব্যারিকেড তৈরি করেছে। পুলিশ লেলিয়ে দিয়ে সমাবেশে আগত লোকদের হয়রানি করেছে। এরপরও হেঁটে লোকজন আজকের এ সমাবেশে উপস্থিত হয়ে প্রমাণ করেছে সরকারের প্রতি দেশের মানুষের বিন্দুমাত্র আস্থা নেই।’

জনসভায় সভাপতিত্ব করেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। সঞ্চালনা করেন প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দীন চৌধুরীর এ্যানী। জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের আহ্বায়ক ও গণফোরামের সভাপতি ড. কামাল হোসেন। প্রধান বক্তার বক্তব্য দেন জেএসডির সভাপতি আ স ম আবদুর রব। বক্তব্য দেন কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর আবদুল কাদের সিদ্দিকী, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার সদস্য সুলতান মোহাম্মদ মুনসুর আহমেদ, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ ও মির্জা আব্বাস।

প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সংলাপে দাবি না মানা হলে ৮ নভেম্বর রাজশাহীর উদ্দেশে রোডমার্চ করা হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, ‘সংলাপে দাবি না মানলে ৮ নভেম্বর রোড মার্চ করে রাজশাহীতে যাবো, ৯ নভেম্বর সেখানে সমাবেশ হবে।’

মির্জা আলমগীর বলেন, ‘জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের দাবি না মানার আগেই তফসিল ঘোষণা করা হলে নির্বাচন কমিশনের অভিমুখে পদযাত্রা করা হবে।’ তবে কবে নাগাদ এই পদযাত্রা করা হবে, তা উল্লেখ করেননি তিনি। সমাবেশ থেকে বলা হয়, পরবর্তীতে পদযাত্রার সুনির্দিষ্ট তারিখ জানানো হবে।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আগামীকালের বুধবার সংলাপ হবে। আমরা শান্তি চাই, অশান্তিতে বিশ্বাস করি না। কিন্তু সংলাপ নিয়ে কোনো নাটক করলে হবে না। ’

রাজাকারের গাড়িতে প্রথম পতাকা বিএনপি তুলে দেয়নি বলে মন্তব্য করেছেন কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি কাদের সিদ্দিকী। তিনি বলেন, ‘বিএনপির বিরুদ্ধে অভিযোগ— তারা রাজাকারের গাড়িতে বাংলাদেশের পতাকা তুলে দিয়েছে। এই অভিযোগ সত্য নয়। আওয়ামী লীগই প্রথম রাজাকার নুরুর গাড়িতে পতাকা তুলে দিয়েছে।’

বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বলেন, ‘রাজাকার মহিউদ্দিনের গাড়িতে পতাকা তুলে দিয়েছে আওয়ামী লীগ। আশিকুর রহমানের গাড়িতেও আওয়ামী লীগ পতাকা তুলে দিয়েছে।’

জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নেতাদের উদ্দেশে কাদের সিদ্দিকী বলেন, ‘আমি বিএনপিতে যোগ দেইনি। ড. কামাল হোসেনের ঐক্যফ্রন্টে যোগ দিয়েছি। জিততে হলে জয় আপনাদের হাতে। হারতে চাইলেও তা আপনাদের হাতে। শেখ হাসিনা কিছু করতে পারবেন না। নির্বাচন পর্যন্ত বিএনপিকে ভুলে হিমাদ্রীর মতো সোজা হয়ে দাঁড়ান।’

সমাবেশে আসার সময় জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নেতাকর্মীদের পুলিশি বাধার প্রসঙ্গে টেনে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বলেন, ‘রাস্তায় গাড়ি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। গাবতলী বন্ধ, টঙ্গী বন্ধ। সব বন্ধের পরও আমার বোনকে (শেখ হাসিনা) বলতে চাই, আপনি একটু সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে দেখে যান।’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হেফাজতের দেওয়া সংবর্ধনা ও ৫ মে’র শাপলা চত্বরের ঘটনার প্রসঙ্গে টেনে কাদের সিদ্দিকী বলেন, ‘আল্লামা শফী ভুলে যেতে পারেন, আমি কাদের সিদ্দিকী ভুলে যেতে পারি না। শাপলা চত্বরে ইমানদারের রক্ত ঝরানো হয়েছে। এই রক্তের বদলা না নিলে আমরা বেইমানে পরিণত হবো।’

কাদের সিদ্দিকী বলেন, ‘আমি বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি চাই না। বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তি দেওয়ার দরকার নেই। আমাদের চিন্তা করতে হবে, হাসিনা কবে মুক্তি পাবেন?’ তিনি বলেন, ‘ বেগম খালেদা জিয়া জেলে গিয়ে গণতন্ত্রের প্রতীক হয়েছেন। দেশের প্রতিটি মানুষের হৃদয়ে জায়গা করে নিয়েছেন। আমি জানি, বাংলাদেশকে বন্দি রাখা যায় না। তাই খালেদা জিয়াকে বন্দি রাখা যাবে না।’ চাঁড়ালের কথার মূল্য আছে কাদেরের কথার মূল্য নেই বলেও এ সময় তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

ঐক্যফ্রন্টের এই নেতা বলেন, ’৭১-এর ৭ মার্চ এই সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আহ্বানে আমরা স্বাধীনতা এনেছিলাম। আজকে বলে যাচ্ছি, ড. কামালের নেতৃত্বে গণতন্ত্রকে মুক্ত করবো, বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করবো।’

জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের অন্যতম নেতা ও নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেছেন, আগামীকাল বুধবার যে সংলাপ হবে, সে সংলাপে শুধু মুখে নয়, লিখিত অঙ্গীকার করতে হবে।

মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘কারও নামে মিথ্যে মামলা দেওয়া যাবে না, গ্রেফতার করা যাবেন না, কোনো গায়েবি মামলা দেওয়া যাবে না।’

গত ১ নভেম্বর অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগের সঙ্গে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সংলাপের রাজনৈতিক মামলার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর তালিকা চাওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেই সংলাপে মির্জা আলমগীরের কাছে তালিকা চেয়েছেন, তিনি প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। প্রধানমন্ত্রী আশ্বাস দেন একদিকে, অন্যদিকে নির্বিচারে গ্রেফতার করা হচ্ছে।’

মান্না বলেন, ‘বেগম খালেদা জিয়ার জন্য লড়াই করবো, তার জন্য জীবন দেবো, তাকে মুক্ত করে ছাড়বো।’ এসময় সমাবেশজুড়ে ব্যাপক স্লোগান তোলেন উপস্থিত নেতাকর্মীরা। মান্না তখন বলেন, ‘এই স্লোগানের ভিডিও প্রধানমন্ত্রীর কাছে, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে ও ডিএমপির কমিশনারের কাছে পাঠানো হোক, তারা দেখুক, বেগম খালেদা জিয়া কত জনপ্রিয়।’

মঙ্গলবারের জনসভার পর থেকে পুলিশকে আর সরকারের নির্দেশ না মানার আহ্বান জানান মাহমুদুর রহমান মান্না।

জনসভায় উপস্থিত ছিলেন- বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম, গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি সুব্রত চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফা মোহসীন মন্টু, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় ও ড. আবদুল মঈন খান, ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান, আলতাফ হোসেন, সেলিমা রহমান, বরকত উল্লাহ বুলু, মো. শাজাহান, শামসুজ্জামান দুদু, ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন, অ্যাডভোকেট আহমেদ আযম খান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমানউল্লাহ আমান, জয়নুল আবদীন ফারুক, হাবিবুর রহমান হাবিব, ড. সুকোমল বড়ুয়া, আবদুস সালাম, আতাউর রহমান ঢালী, যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, এমরান সালেহ প্রিন্স ও শামা ওবায়েদ প্রমুখ।

এ ছাড়া বিএনপির সহপ্রচার সম্পাদক কৃষিবিদ শামিমুর রহমান, নির্বাহী কমিটির সদস্য নাজিম উদ্দীন আলম, তকদির হোসেন মো. জসিম, আবু নাসের মোহাম্মাদ রহমাতুল্লাহ, কামরুদ্দিন এহিয়া খান মজলিস, যুবদলের সভাপতি সাইফুল আলম নিরব, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি শফিউল বারী বাবু, সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম ফিরোজ, মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাস, সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহমেদ, সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হেলেন জেরিন খান, ছাত্রদলের সভাপতি রাজিব আহসান, সহসভাপতি আলমগীর হাসান সোহান, নাজমুল হাসান, জহুরুল ইসলাম বিপ্লব, সহসাধারণ সম্পাদক আরিফা সুলতানা রুমা প্রমুখ জনসভায় উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে আজ দুপুর দেড়টায় পবিত্র কোরআন তিলাওয়াতের মধ্য দিয়ে জনসভার আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। এই সভা চলে বিকাল সোয়া ৫টা পর্যন্ত। কোরআন তিলাওয়াত করেন হাফেজ মাওলানা নেসার উদ্দিন। এর পর সদ্য প্রয়াত বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য তরিকুল ইসলামের রুহের মাগফিরাত কামনা করে দোয়া করা হয়।

এদিকে জনসভাকে কেন্দ্র করে জনসমুদ্রে পরিণত হয়েছে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান। সকাল থেকে দলে দলে ঐক্যফ্রন্টের নেতাকর্মীরা মিছিল নিয়ে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে প্রবেশ করেন। বিশেষ করে বিএনপি নেতাকর্মীদের উপস্থিতিতে মুখর হয়ে উঠেছে সোহরাওয়ার্দী এলাকা।

তাদের হাতে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক আন্দোলনের প্রধাননেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মজলুম জননেতা তারেক রহমানের মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবি সহ ছবি সম্বলিত ফেস্টুনও দেখা যায়।

দেখা যায় খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে বিভিন্ন স্লোগানযুক্ত ব্যানারও। রাজধানীসহ ঢাকার আশাপাশের জেলা থেকে আগত নেতাকর্মীরা খন্ড খন্ড মিছিল ও নানা স্লোগানে সমাবেশস্থলে জড়ো হয়েছেন। তারা স্লোগানে স্লোগানে বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবি জানাচ্ছেন। ‘বন্দি আছে আমার মা, ঘরে ফিরে যাবো না’, ‘হামলা করে আন্দোলন- বন্ধ করা যাবে না’- ইত্যাদি স্লোগান দিতে দেখা গেছে বিএনপি নেতাকর্মীদের। এ ছাড়া গণসংগীতও পরিবেশন করা হয়।

জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তিসহ একাধিক দাবিতে আগামীকাল বুধবার দ্বিতীয় দফায় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সংলাপে বসতে যাচ্ছে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। এর আগে গত ১ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে গণভবনে প্রথম দফার বৈঠক শেষ হলেও সংলাপ অব্যাহত রাখার আহ্বান জানিয়ে গত ৩ নভেম্বর ফের প্রধানমন্ত্রী বরাবর চিঠি দেয় ঐক্যফ্রন্ট।

(জাস্ট নিউজ/একে/১৭৫০ঘ.)