রাজাকারের গাড়িতে প্রথম পতাকা তুলে দিয়েছে আ’লীগ: বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী

রাজাকারের গাড়িতে প্রথম পতাকা তুলে দিয়েছে আ’লীগ: বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী

ঢাকা, ৬ নভেম্বর (জাস্ট নিউজ) : রাজাকারের গাড়িতে প্রথম আওয়ামী লীগই পতাকা তুলে দিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী।

মঙ্গলবার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বাংলাদেশের সংবিধান প্রণেতা, জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের আহ্বায়ক ও গণফোরাম সভাপতি ড. কামালের হোসের নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট আয়োজিত জনসভায় তিনি এ কথা বলেন।

বঙ্গবীর বলেন, বিএনপির বিরুদ্ধে অভিযোগ, তারা রাজাকারের গাড়িতে বাংলাদেশের পতাকা তুলে দিয়েছে। অভিযোগ সত্য নয়। আওয়ামী লীগই প্রথম রাজাকার সরিষা বাড়ির নুরুর গাড়িতে পতাকা তুলে দিয়েছে। রাজাকার মহিউদ্দিনের গাড়িতে পতাকা তুলে দিয়েছে আওয়ামী লীগ। আশিকুর রহমানের গাড়িতেও আওয়ামী লীগ পতাকা তুলে দিয়েছে।

জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নেতাদের উদ্দেশে বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বলেন, আমি বিএনপিতে যোগ দেইনি। ড. কামাল হোসেনের ঐক্যফ্রন্টে যোগ দিয়েছি। আমি বলবো যদি আপনারা জিততে চান, জয় আপনাদের হাতে। আর যদি হারতে চান তাও আপনাদের হাতে। শেখ হাসিনা আপনাদের বিজয়ী করতে পারবে না। আপনাদের পরাজিত করতে পারবে না। যদি বিজয়ী হতে চান নির্বাচন পর্যন্ত বিএনপিকে ভুল যান। জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের পতাকার তলে হিমাদ্রির মতো সোজা হয়ে দাঁড়ান।

কাদের সিদ্দিকী বলেন, ‘আমি বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি চাই না। বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তি দেওয়ার দরকার নেই। আমাদের চিন্তা করতে হবে, হাসিনা কবে মুক্তি পাবে?’

তিনি বলেন, ‘বেগম খালেদা জিয়া জেলে গিয়ে গণতন্ত্রের প্রতীক হয়েছেন। দেশের প্রতিটি মানুষের হৃদয়ে জায়গা করে নিয়েছেন। আমি জানি, বাংলাদেশকে বন্দি রাখা যায় না। তাই বেগম খালেদা জিয়াকে বন্দি রাখা যাবে না।’

চাঁড়ালের কথার মূল্য আছে কাদেরের (ওবায়দুল কাদের) কথার মূল্য নেই বলেও এ সময় তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

বঙ্গবীর আরো বলেন, ‘আপনারা ফখরুল ইসলামকে একটু মান্য কইরেন। যদি জিততে চান। ড. কামাল হোসেনের সাথে না থাকলে সোহরাওয়ার্দী মিটিং করতে পারতেন না। গাবতলীতে রাস্তায় গাড়ি বন্ধ। টঙ্গী বন্ধ। এরপরও আমরা বোনকে (শেখ হাসিনা) বলা উচিত একটু সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে এসে দেখে যান। গত চার তারিখে তিনি এখানে এসেছিলেন। আল্লামা শফীর এক মিটিংয়ে। আল্লামা শফী ভুলে যেতে পারেন, আমি কাদের সিদ্দিকী ভুলি নাই। শাপলা চত্বরে ঈমানদারের রক্ত ঝড়েছে। এই রক্তের বদলা না নিলে আমরা বেঈমানে পরিণত হবো।’

ঐক্যফ্রন্টের এই নেতা বলেন, ‘৭১-এর ৭ মার্চ এই সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আহ্বানে আমরা স্বাধীনতা এনেছিলাম। আজকে বলে যাচ্ছি, ড. কামালের নেতৃত্বে গণতন্ত্রকে মুক্ত করবো, বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করবো।’

এর আগে, রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সমাবেশে যোগ দিয়েছেন ড. কামাল হোসেন। মঙ্গলবার (৬ নভেম্বর) বেলা ৩টার দিকে তিনি সভামঞ্চে এসে উপস্থিত হন। এর আগে আজ দুপুর ২টায় আনুষ্ঠানিকভাবে সমাবেশ শুরু হওয়ার কথা থাকলেও বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বিএনপির জাসাস কর্মীদের সম্মিলিত সঙ্গীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে সমাবেশের কার্যক্রম শুরু হয়।

এর আগে সভামঞ্চে উপস্থিত হন ঐক্যফ্রন্টের মুখপাত্র ও বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, কৃষক জনতা লীগে সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী, গণস্বাস্থ্যের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, আ স ম আবদুর রব, সুলতান মো. মনসুর, মোস্তফা মহসীন মন্টু, আবদুল মালেক রতন, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আবদুল মঈন খান। সমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন। সভাপতিত্ব করবেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। প্রধান বক্তা হিসেবে ছিলেন জেএসডি সভাপতি আ স ম আব্দুর রব।

(জাস্ট নিউজ/এমআই/২০০৪ঘ.)