রাজশাহীতে ঐক্যফ্রন্টের সমাবেশে জনতার ঢল

রাজশাহীতে ঐক্যফ্রন্টের সমাবেশে জনতার ঢল

রাজশাহী, ৯ নভেম্বর (জাস্ট নিউজ) : নানা বাধা-বিপত্তি উপেক্ষা করে রাজশাহীতে ঐক্যফ্রন্টের সমাবেশে হাজির হয়েছেন হাজার হাজার নেতাকর্মী। তিল ধারণের ঠাঁই নেই আলিয়া মাদরাসা মাঠে। এরই মধ্যে মঞ্চে উপস্থিত হয়েছেন ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতারা। সমাবেশে কেন্দ্রীয় ও বিভাগীয় নেতারা একে একে বক্তব্য দিচ্ছেন।

শুক্রবার বিকাল ৩টার দিকে সমাবেশ স্থলে আসেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, কৃষক-শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী, বিএনপি নেতা ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেনসহ অন্যরা। তবে অসুস্থতার কারণে সমাবেশে হাজির হতে পারেননি বাংলাদেশের সংবিধান প্রণেতা, গণফোরামের সভাপতি ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ড. কামাল হোসেন।

মাদ্রাসায় জেডিসি পরীক্ষা চলায় আগে থেকে সমাবেশস্থলে যেতে পারেননি সমাবেশে আসা লোকজন। তাই সকাল থেকেই শহরের বিভিন্ন পয়েন্টে জড়ো হন তারা। পরীক্ষা শেষ হলে মিছিল নিয়ে যোগ দেয় জনসভায়। তবে বিভিন্ন জেলা থেকে রাজশাহী অভিমুখে বাস চলাচল বন্ধ করে দেয়ায় সমাবেশে যোগ দিতে বিকল্প পথে বেছে নেন অনেকে। নৌকা, ট্রেন বা ছোট ছোট যানবাহন ব্যবহার করে আসেন অনেকে।

সকাল থেকেই পদ্মার পাড়, চিড়িয়াখানা, ঈদগাহ মাঠ, রেল স্টেশন, রাজশাহী বিশ্ব বিদ্যালয়সহ শহরের বিভিন্ন পয়েন্ট খন্ড খন্ড আকারে নেতাকর্মীদের জড়ো হতে দেখা যায়। রাজশাহী ও আশপাশের জেলায় পরিবহন বন্ধ থাকায় নেতাকর্মীদের আসতে প্রতিবন্ধকতা তৈরি হয়। তবে সব প্রতিবন্ধকতা এড়িয়ে ট্রেন, মাইক্রো এবং নৌকা যোগে চলে আসেন রাজশাহীতে। অনেকে দুই তিনদিন আগেই সমাবেশে যোগ দেয়ার উদ্দেশ্যে শহরে এসে অবস্থান করেন।

বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক আন্দোলনের প্রধাননেত্রী ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে উত্তাল হয়ে উঠে আলিয়া মাদরাসা মাঠে লাখো জনতার জনসমুদ্র। মুহুর্মুহু স্লোগান দিতে থাকে ‘মুক্তি চাই, দিতে হবে।’ সেই সাথে উচ্চারিত হয় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মজলুম জননেতা তারেক রহমানের বিরুদ্ধে মিথ্যা ও ষড়যন্ত্রমূলক মামলা ও রায় বাতিলের দাবি।

সকালে রাজশাহী বিএনপি নেতা ও চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মিজানুর রহমান মিনু জানান, রাজশাহীর মাদ্রাসা মাঠে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সমাবেশ থেকে বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি ও সরকার পতনের গণআন্দোলনের আহ্বান আসবে।

পাবনার ইশ্বরদী থানা বিএনপির সহ সভাপতি আতিয়ার রহমান গণমাধ্যমকে বলেন, আমাদের এলাকায় বাস চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। ট্রেন ছাড়া কোনো পরিবহন চলছে না। আমরা ভোরের ট্রেনে চলে এসেছি।

বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য সাবেক এমপি সিরাজুল ইসলাম সরদার বলেন, গাড়ি না পেয়ে পাবনা থেকে মাইক্রোতে এসেছি। পথে পথে বিভিন্ন জায়গায় ঠেকানো হয়েছে। বিভিন্ন রাস্তা বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।

পূর্বঘোষিত কর্মসূচি হিসাবে রোডমার্চ করার কথা ছিল জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের। পরবর্তীতে রোডমার্চ স্থগিত করে জনসভা করবে বলে জানায়।

সংসদ ভেঙে দিয়ে নিরপেক্ষ সরকারে অধীনে নির্বাচন, বেগম খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি, নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন, ইভিএম বাতিল, মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার, গ্রেপ্তার বন্ধ করা, নির্বাচনে ম্যাজিট্রেসি পাওয়ার দিয়ে সেনাবাহিনী মোতায়েনসহ ৭ দফা দাবিতে ঐক্যফ্রন্টের এ সমাবেশ।

নতুন এ রাজনৈতিক জোট আন্দোলনের অংশ হিসেবে বিভাগীয় শহরগুলোতে জনসভা করছে। সিলেট, চট্টগ্রাম, ঢাকার পর চতুর্থ জনসভাটি হচ্ছে আজ রাজশাহীতে। দুপুর ২টায় রাজশাহী মহানগরীর ঐতিহাসিক মাদ্রাসা ময়দানে এই সমাবেশ শুরু হয়।

দুপুর ২টা থেকে ৫টার মধ্যে জনসভা শেষ করতে হবে, মিছিল নিয়ে সভায় যোগ দেয়া যাবে না, মাঠের বাইরে মাইক দেয়া যাবে না, বিশৃঙ্খলা হয় এমন কিছু করা যাবে না, রাষ্ট্রবিরোধী বক্তব্য দেয়া যাবে না প্রভৃতি ১২টি শর্তে এ জনসভা করার অনুমতি মিলেছে ঐক্যফ্রন্টের।

(জাস্ট নিউজ/একে/১৬৪৯ঘ.)