৭ দফা দাবি থেকে একচুলও সরে আসছি না : ড. কামাল

৭ দফা দাবি থেকে একচুলও সরে আসছি না : ড. কামাল

ঢাকা, ১১ নভেম্বর (জাস্ট নিউজ) : আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে ৭ দফা দাবি থেকে সরে আসেননি বরং আরেকটি নতুন দফা যোগ হয়েছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশের সংবিধান প্রণেতা, গণফোরামের সভাপতি ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের আহ্বায়ক ড. কামাল হোসেন।

ড. কামাল হোসেন বলেছেন, ‘অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের জন্য আমরা যে ৭ দফা দাবি দিয়েছি, আমরা তা থেকে একচুলও সরে আসছি না। ৭ দফার সঙ্গে আমাদের একটি নতুন দাবি যুক্ত হয়েছে, সেটি হচ্ছে, নির্বাচনের তফসিল বাতিল করে নির্বাচনের তারিখ ১ মাস পিছিয়ে নতুন করে তফসিল ঘোষণার দাবি।’

রবিবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে ড. কামাল হোসেন তার লিখিত বক্তব্যে এ কথা বলেন। ওই বক্তব্য পড়ে শোনান বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

ড. কামাল হোসেনের লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, ‘একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের অত্যাবশ্যকীয় লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড পূরণ হয়নি। নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরও সরকারি প্রচার-প্রচারণা একতরফাভাবে চালানো হচ্ছে। এটা নির্বাচনী আচরণবিধির স্পষ্ট লঙ্ঘন। এ রকম পরিস্থিতিতে অংশগ্রহণমূলক, গ্রহণযোগ্য নির্বাচন প্রায় অসম্ভব ব্যাপার।

জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের পক্ষে নির্বাচনে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া খুবই কঠিন। কিন্তু এ রকম একটি ভীষণ ভীষণ প্রতিকূল পরিস্থিতিতেও দেশের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনের অংশ হিসেবে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নির্বাচনে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

৭ দফা আদায়ের সংগ্রাম জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট অব্যাহত রাখবে। সে আন্দোলন সংগ্রামের সঙ্গে নির্বাচনে অংশগ্রহণকেও আন্দোলনের অংশ হিসেবেই বিবেচনা করবে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট।

একটা অংশগ্রহণমূলক এবং গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠানের যাবতীয় দায়িত্ব সরকার এবং নির্বাচন কমিশনের। নির্বাচনে অংশ নেওয়ার প্রস্তুতির পাশাপাশি জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট কড়া নজর রাখবে সরকার এবং নির্বাচন কমিশনের আচরণের প্রতি। জনগণের দাবি মানা না হলে উদ্ভূত পরিস্থিতির দায়দায়িত্ব সরকার এবং নির্বাচন কমিশনকেই নিতে হবে।

আমরা বিশ্বাস করি, ১০ম সংসদ নির্বাচনের পর দেশে গণতন্ত্রের যে গভীর সংকট তৈরি হয়েছে সেই সংকট দূর করে আমাদের ঘোষিত ১১ দফা লক্ষ্যের ভিত্তিতে একটি সুখী, সুন্দর আগামীর বাংলাদেশ গড়ে তোলার সংগ্রামে দেশের জনগণ জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের পাশে থাকবে।

২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির তথাকথিত একতরফা নির্বাচনে মানুষের ন্যূনতম গণতান্ত্রিক অধিকার ও স্বাধীনভাবে ভোট দেওয়ার অধিকার হরণ করা হয়েছিল।’

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পড়া শেষে সাংবাদিকদের উদ্দেশে ড. কামাল হোসেন বলেন, ‘আন্দোলন শুরু হয়ে গেছে, আন্দোলন চলবে।’

সংবিধান পরিপন্থী নির্বাচন হলে সে ব্যাপারে আদালতের শরণাপন্ন কিংবা নির্বাচন বর্জন করবেন কি না, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে ড. কামাল হোসেন বলেন, ‘হুম, প্রয়োজনে আদালতে যাব। আন্দোলন শুরু হয়ে গেছে।’

বেগম খালেদা জিয়াকে কারাগারে রেখে তারেক রহমানকে নির্বাসনে রেখে বিএনপি নির্বাচনে যাচ্ছে সেক্ষেত্রে এ দুজনের সমর্থন রয়েছে কি না, এ বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ড. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‘জেলই বেগম খালেদা জিয়ার শক্তি। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সিদ্ধান্তের প্রতি বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের শ্রদ্ধা রয়েছে। তাদের শতভাগ মত আছে। মির্জা আলমগীরের সিদ্ধান্তে তারা একমত আছেন।’

ডা. জাফরুল্লাহ আরো বলেন, ‘দাবি আদায়ে প্রয়োজনে আমরা মতিঝিল গিয়ে জড়ো হয়ে থাকব। কয়জনকে গ্রেপ্তার করবে? পাঁচ হাজার, ১০ হাজার? মানুষ মাঠে নেমে গেছে। আন্দোলন শুরু হয়ে গেছে এই সরকারের বিরুদ্ধে।’

সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর আবদুল কাদের সিদ্দিকী, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন ও ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, জেএসডির সভাপতি আ স ম আবদুর রব, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, ডাকসুর সাবেক ভিপি সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমেদ, গণফোরামের কার্যকরী সভাপতি সুব্রত রায় চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফা মোহসীন মন্টু, জেএসডির সহসভাপতি তানিয়া রব ও সাধারণ সম্পাদক আবদুল মালেক রতন প্রমুখ।

(জাস্ট নিউজ/একে/২১৩০ঘ.)