সব আসনেই খালেদা জিয়ার মনোনয়নপত্র বাতিল

সব আসনেই খালেদা জিয়ার মনোনয়নপত্র বাতিল

ঢাকা, ২ ডিসেম্বর (জাস্ট নিউজ) : আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনটি আসনেই কারান্তরীণ বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে। আসন তিনটি হচ্ছে ফেনী-১, বগুড়া-৬ (সদর) ও বগুড়া-৭।

এর মধ্যে বগুড়া-৭ আসনে বেগম খালেদা জিয়ার বিকল্প প্রার্থী মোরশেদ মিল্টনেরও মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে। তবে বাকি দুটো আসনে খালেদা জিয়ার বিকল্প প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করেছেন রিটার্নিং কর্মকর্তা।

দুটি মামলায় বেগম খালেদা জিয়ার সাজার কথা উল্লেখ করে ফেনীর রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক মো. ওয়াহিদ উজ জামান রবিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ফেনী-১ আসনে বেগম খালেদা জিয়ার মনোনয়নপত্র বাতিল করেন। বেগম খালেদা জিয়া ছাড়াও ওই আসনে বিএনপির আরেক প্রার্থী ছাগলনাইয়া উপজেলা বিএনপির সভাপতি নূর আহম্মদ মজুমদার এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী মিজানুর রহমান ও আবুল বাশার চৌধুরীর মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে। তবে ওই আসনে বিএনপির বিকল্প প্রার্থী রফিকুল আলম মজনুর মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করা হয়েছে।

একইভাবে মামলায় সাজার বিষয়টি উল্লেখ করে বগুড়া-৬ ও ৭ আসনে বেগম খালেদা জিয়ার মনোনয়নপত্র বাতিল করেন বগুড়ার রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক ফয়েজ আহাম্মদ। বগুড়া-৬ আসনে বগুড়া পৌরসভার মেয়রের পদ থেকে পদত্যাগ না করায় বেগম খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা এ কে এম মাহবুবুর রহমানের মনোনয়নপত্রও বাতিল হয়েছে। তবে ওই আসনে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এবং জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি রেজাউল করিম বাদশার মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করা হয়েছে।

দলীয় চেয়ারপারসনের মনোনয়নপত্র বাতিল প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বেগম খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা ও বগুড়া পৌরসভার মেয়র এ কে এম মাহবুবুর রহমান গণমাধ্যমকে বলেন, বগুড়া-৬ ও ৭ আসন জিয়া পরিবারের। ১৯৯১ থেকে ২০০৮ সালের নির্বাচন পর্যন্ত এসব আসনে বিএনপির সঙ্গে কেউ প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারেনি। এবারো দুটি আসনে ধানের শীষের প্রার্থী হওয়ার জন্য দলের চেয়ারপারসন মনোনয়নপত্র দাখিল করেছিলেন। কিন্তু চেয়ারপারসনকে নির্বাচন থেকে দূরে রাখতে সরকার অনেক আগে থেকেই নানা ষড়যন্ত্র ও কূট কৌশল চালিয়ে আসছে। সেই ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে বেগম খালেদা জিয়াকে সাজানো মামলায় দণ্ড দিয়ে কারাবন্দী করে রাখা হয়েছে।

মাহবুবুর আরো রহমান বলেন, আগামী নির্বাচনে ব্যালটের মাধ্যমেই সরকারের এই ষড়যন্ত্রের দাঁতভাঙা জবাব দেবে জনগণ। চেয়ারপারসনকে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে না দেওয়ায় দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর কিংবা দলের হাইকমান্ড যাকে চাইবে, তিনি ধানের শীষের প্রার্থী হবেন বলে জানান মাহবুবুর রহমান।

বগুড়া-৬ আসনে ১৯৯১ সালের নির্বাচনে বিএনপি থেকে সংসদ সদস্য হন সাবেক অর্থ প্রতিমন্ত্রী মুজিবর রহমান। ১৯৯৬ সাল থেকে প্রতিবারই এখানে বিএনপির প্রার্থী ছিলেন বেগম খালেদা জিয়া। প্রতিবারই বিপুল ভোটে তিনি জয়লাভ করেন। ২০০৮ সালে আসনটি ছেড়ে দেওয়ার পর উপনির্বাচনে প্রার্থী হন সাবেক স্পিকার ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার।

বগুড়া-৭ আসনের গাবতলী উপজেলা বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা, বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের জন্মভিটা। এ আসনে ১৯৯১ থেকে ২০০৮ সালের নির্বাচন পর্যন্ত প্রার্থী ছিলেন খালেদা জিয়া। তবে প্রতিবারই তিনি আসনটি ছেড়ে দিলে উপনির্বাচন হয়েছে। তিনটি উপনির্বাচনে ধানের শীষের প্রার্থী হয়ে সংসদ সদস্য হন বেগম খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা হেলালুজ্জামান তালুকদার। ২০০৮ সালে আসনটি ছেড়ে দেওয়ার পর উপনির্বাচনে প্রার্থী হন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ।

দুটি মামলায় বেগম খালেদা জিয়া কারান্তরীণ থাকায় তাঁকে তিনটি আসনে প্রার্থী করে বিএনপি। আসনগুলো হলো ফেনী-১ এবং বগুড়া-৬ ও ৭।

 

(জাস্ট নিউজ/একে/১৭৫০ঘ.)