নির্বাচনী এলাকায় যেতে পারছি না: মেজর হাফিজ

নির্বাচনী এলাকায় যেতে পারছি না: মেজর হাফিজ

ঢাকা, ১১ ডিসেম্বর (জাস্ট নিউজ) : নিজের নির্বাচনী এলকায় যেতে পারছেন না বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান ও ভোলা-৩ আসনের প্রার্থী মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমদ।

মঙ্গলবার নির্বাচন কমিশনার বিগ্রেডিয়ার জেনারেল(অব.) শাহাদাত হোসেন চৌধুরীর সঙ্গে দেখা করার পর এসব কথা জানান তিনি। বৈঠকে ভোলাসহ সারা দেশের নির্বাচনী পরিস্থিতি তুলে ধরেন হাফিজউদ্দিন আহমদ।

জাতীয় নির্বাচনের আগে, সারা দেশে আইনশৃঙ্খলার ঘোরতর অবনতি হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি। নির্বাচনের আগে, অবৈধ অস্ত্র জমা নেয়া ও এসবের বিরুদ্ধে অভিযান চালানোর কথা থাকলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এ বিষয়ে নিশ্চুপ বলেও অভিযোগ করেন তিনি। অবৈধ অস্ত্রধারীরা ঢাকা ও সারাদেশে ছড়িয়ে পড়েছে বলেও জানান মেজর হাফিজ।

তিনি বলেন, তারা ইতিমধ্যে ভোটারদের ভয়ভীতি দেখাতে শুরু করেছে। বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপরে ক্রমাগত অত্যাচার নির্যাতন বেড়েই চলেছে। ভোলা-৩ আসনের ছয়বারের নির্বাচিত সংসদ সদস্য অভিযোগ করেন, গত ছয় বছরে সন্ত্রাসীদের ভয়ে তিনি এলাকায় যেতে পারেননি। এরমধ্যেই, হাফিজউদ্দিন ও নাজিমউদ্দিন আলমের বাড়িতে হামলা হয়েছে বলেও কমিশনার শাহাদাত হোসেন চৌধুরীকে জানান।

হাফিজউদ্দিন আহমদ বলেন, নিরীহ নেতাকর্মীদের পথে-ঘাটে ধারালো অস্ত্র নিয়ে আঘাত করা হচ্ছে। জেলা যুবদলের সভাপতি জামাল উদ্দিন ও সাধারণ সম্পাদক সেলিমসহ অনেক সিনিয়র নেতাকে মেরে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

এ সময় হাফিজ উদ্দিন আহমদ বলেন, ভোলা-৩ এলাকা বাংলাদেশের সবচেয়ে সন্ত্রাসী কবলিত এলাকা। সেখানে জান-মালের কোন নিরাপত্তা নেই। রাস্তাঘাটে অস্ত্রধারীরা টহল দিয়ে বেড়াচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদের দেখেও দেখছে না। ৩৫ জন যুবদল কর্মী আহত হওয়ার পর উল্টো এসব নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধেই মামলা করা হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন হাফিজউদ্দিন।

তিনি বলেন, রাজধানী থেকে সন্ত্রাসীরা গিয়ে ভোলার সংসদীয় আসনে অবস্থান নিয়েছে। সারা দেশে ভোটাররা যদি কেন্দ্রে যেতে না পারেন সেজন্য ক্ষমতাসীন সরকার দায়ী থাকবে বলেও তিনি জানান। নির্বাচন কমিশনও এই দায়-দায়িত্ব এড়াতে পারে না বলে মন্তব্য করেছেন তিনি। হাফিজউদ্দিন আহমদ বলেন, নির্বাচনী ব্যবস্থা এখন ঋণখেলাপিদের করায়ত্তে চলে গেছে। দেশের সর্বোচ্চ ঋণখেলাপিরা এমপি হিসেবে নির্বাচন করতে যাচ্ছেন। এটি বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত খারাপ ইঙ্গিত। এটি লেভেল প্লেয়িং ফিল্ডকে বিনষ্ট করেছে। এবং এদেশে ব্যাংকের টাকা মেরে দেয়াকে আরো উৎসাহিত করেছে। যারা দেশের অর্থনীতিকে ধ্বংস করেছে, ব্যক্তিগত সম্পদ ক্রমাগত বাড়িয়েছে। একেকজন সরকার দলীয় এমপির, প্রায় একশোগুন পর্যন্ত সম্পদ বৃদ্ধি হয়েছে। ঋণখেলাপিরাও এদের সাথে যুক্ত হয়েছে। সাধারণ মানুষের নির্বাচন করার পথ ক্রমেই রুদ্ধ হয়ে যাচ্ছে বলেও মন্তব্য করেছেন বিএনপির এই নেতা। এসব বিষয়েই নির্বাচন কমিশনার শাহাদাত হোসেন চৌধুরীকে অবহিত করেন। এছাড়া, ভোলা-৩ আসনের অন্তত ৫০০ নেতাকর্মী উচ্চ আদালতে হন্যে হয়ে ঘুরছে বলেও জানান তিনি।

হাফিজউদ্দিন বলেন, আমি আমার নির্বাচনী এলাকায় যেতে পারছি না। অন্য প্রার্থীরা নির্বাচনী এলাকায় যাচ্ছেন এবং প্রচারণা চালাচ্ছেন। নির্বাচনী আচরণবিধি ভঙ্গ করে, এক সপ্তাহ আগ থেকেই প্রচারণা চালাচ্ছেন। আর আমি আদালতের বারান্দায় ঘুরে বেড়াচ্ছি। পুলিশি হয়রানি ও গায়েবি মামলা প্রত্যাহারে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও আদালত-প্রশাসনকে অবহিত করতেও নির্বাচন কমিশনকে অনুরোধ করেন মেজর হাফিজ।

(জাস্ট নিউজ/এমজে/১৪৩৫ঘ.)