বিএনপির যেসব প্রার্থীর মনোনয়ন আটকে গেল উচ্চ আদালতে

বিএনপির যেসব প্রার্থীর মনোনয়ন আটকে গেল উচ্চ আদালতে

ঢাকা, ১৮ ডিসেম্বর (জাস্ট নিউজ) : আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জামালপুর-১ আসনে বিএনপির প্রার্থী এম রশিদুজ্জামান মিল্লাতের প্রার্থিতা মঙ্গলবার স্থগিত করেছেন আপিল বিভাগ। এর আগে গত বৃহস্পতিবার মিল্লাতের মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশনের দেওয়া সিদ্ধান্ত স্থগিত করেন হাইকোর্ট। এক রিট আবেদনের শুনানি শেষে বিচারপতি জেবিএম হাসান ও বিচারপতি মো. খায়রুল আলমের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

ওই আসনের আওয়ামী লীগ প্রার্থী সাবেক তথ্যমন্ত্রী আবুল কালাম আজাদ রিটটি করেছিলেন। এদিন আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন দুদকের আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোতাহার হোসেন সাজু।

বিএনপির প্রার্থী রশিদুজ্জামান মিল্লাত দুর্নীতির মামলায় দণ্ডিত। রিটার্নিং কর্মকর্তা তার মনোনয়ন বাতিল করেছিলেন। কিন্তু তিনি নির্বাচন কমিশনে (ইসি) আপিল করে প্রার্থিতা ফিরে পান। পরে প্রার্থিতা কেন বাতিল করা হবে না তা জানতে হাইকোর্টে রিট করেন এই আসনে মিল্লাতের প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগ নেতা আবুল কালাম আজাদ।

আদেশের পর দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান বলেন, শুনানি শেষে আদালত নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্ত স্থগিত করে রুল জারি করেছেন। ফলে মিল্লাত আর ভোট করতে পারছেন না।

এদিকে বিএনপির গতকাল সোমবার বিএনপির চার প্রার্থীর মনোনয়নপত্র আটকে দিয়েছেন হাইকোর্টের আপিল বিভাগ। একইসঙ্গে আরেক প্রার্থীর মনোনয়ন স্থগিত করে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। সোমবার পৃথক পৃথক আবেদনের শুনানি নিয়ে আদালত এ আদেশ দেন।

মানিকগঞ্জ-৩ আসনের বিএনপি প্রার্থী আফরোজা খান রিতার মনোনয়ন বৈধ ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশনের দেওয়া সিদ্ধান্ত স্থগিত করে হাইকোর্টের দেওয়া আদেশের ওপর ‘নো অর্ডার’ দিয়েছেন আপিল বিভাগ। ফলে তিনি আর নির্বাচন করতে পারছেন না। প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন নেতৃত্বাধীন আপিল বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

রিতার বিরুদ্ধে ঋণখেলাপির অভিযোগ এনে আদালতে রিট করে সোনালী ব্যাংক। গত ১২ ডিসেম্বর রিটের শুনানি নিয়ে বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি মো. খায়রুল আলমের হাইকোর্ট বেঞ্চ তার মনোনয়নপত্র বৈধ করার ওপর স্থগিতাদেশ দেন। এর বিরুদ্ধে তিনি আপিল বিভাগে আবেদন করেন।

এদিকে, উপজেলা চেয়ারম্যানের পদ থেকে পদত্যাগ সংক্রান্ত নিয়ম লঙ্ঘনের দায়ে বগুড়া-৩ আসনের বিএনপি প্রার্থী আবদুল মুহিত তালুকদার, বগুড়া-৭ আসনের বিএনপি প্রার্থী সরকার বাদল ও ঢাকা-২০ আসনের বিএনপি প্রার্থী তমিজ উদ্দিন নির্বাচন করতে পারবেন না বলে আদেশ দিয়েছেন প্রধান বিচারপতি নেতৃত্বাধীন আপিল বেঞ্চ।

ধামরাই উপজেলা চেয়ারম্যানের পদ থেকে তমিজ উদ্দিনের পদত্যাগপত্র গৃহীত হওয়ার আগেই তিনি মনোনয়নপত্র জমা দেন। এ জন্য রিটার্নিং কর্মকর্তা তা বাতিলের সিদ্ধান্ত নেন। তমিজ উদ্দিনের বিরুদ্ধে আপিল করলে ইসি তাকে বৈধ প্রার্থী ঘোষণা করেন। ইসির সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আদালতে রিট করেন ওই আসনের আওয়ামী লীগ প্রার্থী বেনজীর আহমেদ।

আদমদিঘী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল মুহিত তালুকদার এবং সরকার বাদল উপজেলা চেয়ারম্যান পদ থেকে পদত্যাগ না করায় তাদের মনোনয়নপত্র বাতিল করে নির্বাচন কমিশন। এ সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে তারা হাইকোর্টে পৃথক রিট দায়ের করেন। আদালত রিটের শুনানি নিয়ে নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্ত স্থগিত করেন। পরে এ আদেশের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন করে কমিশন।

অন্যদিকে, ঢাকা-১ আসনের বিএনপি ও ঐক্যফ্রন্ট প্রার্থী নবাবগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান খন্দকার আবু আশফাকের মনোনয়ন বৈধ বলে দেওয়া নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্ত স্থগিত করে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।

ওই আসনের বিকল্প ধারার প্রার্থী জালাল উদ্দিনের করা রিট শুনানি নিয়ে বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি মো. খায়রুল আলমের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

(জাস্ট নিউজ/এমআই/১০৫৫ঘ.)