৬ দিন ধরে বাসায় অবরুদ্ধ বিএনপি প্রার্থী ফজলুল আজিম

৬ দিন ধরে বাসায় অবরুদ্ধ বিএনপি প্রার্থী ফজলুল আজিম

ঢাকা, ২২ ডিসেম্বর (জাস্ট নিউজ) : আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নোয়াখালী-৬ (হাতিয়া) আসনে বিএনপি প্রার্থী প্রকৌশলী মোহাম্মদ ফজলুল আজিম ছয় দিন ধরে অবরুদ্ধ। আওয়ামী লীগ প্রার্থীর সমর্থকদের অস্ত্রের মহড়া ও প্রাণনাশের হমকিতে রবিবার থেকে উপজেলার নিজ বাসায় অবরুদ্ধ রয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন তিনি।

ফজলুল আজিমের অভিযোগ- একই আসনের আওয়ামী লীগ প্রার্থী আয়েশা ফেরদাউস ও তার স্বামী স্বতন্ত্র প্রার্থী মোহাম্মদ আলীর ক্যাডাররা ফজলুল আজিমের বাসার সামনে অস্ত্র নিয়ে মহড়া দিচ্ছে। খণ্ড খণ্ড মিছিল করে তারা উস্কানিমূলক স্লোগান ও হুমকি-ধমকি দিচ্ছে। জীবনের নিরাপত্তা না থাকায় আজিম নির্বাচনী প্রচার, পথসভা ও গণসংযোগ করতে পারছেন না। বিএনপি নেতা-কর্মীদের মারধর, ধানের শীষ প্রতীকের পোস্টার ছিঁড়ে ফেলা, প্রচার কাজে ব্যবহৃত মাইক ও গাড়ি ভাংচুর করা হয়েছে। প্রাণনাশের হুমকি দেয়ায় নেতা-কর্মীরা ভয়ে মাঠে নামতে পারছে না।

বিএনপি প্রার্থী গণমাধ্যমকে জানান, এ আসনে তিনি পর পর তিনবার এমপি নির্বাচিত হয়েছেন। কিন্তু বর্তমানে নির্বাচনের কোনো পরিবেশ নেই। ছয়দিন ধরে সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত তার বাসার সামনে আওয়ামী লীগের ক্যাডাররা অস্ত্রের মহড়া দিচ্ছে, উস্কানিমূলক স্লোগান দিচ্ছে। জীবনের নিরাপত্তা না থাকায় তিনি পৌরসভা, চর কিং, চর ঈশ্বর, সোনাদিয়া, তমরদ্দি, জাহাজমারা, বুড়িরচর ও নিঝুম দ্বীপে গণসংযোগ ও পথসভা করতে পারছেন না। হাতিয়ায় ধানের শীষ প্রতীকের পোস্টার লাগাতে দেয়া হচ্ছে না। ধানের শীষের পক্ষে প্রচার কাজে জাহাজমারা ইউনিয়নে চারটি, চর কিং ইউপিতে দুটি মাইক ছিনিয়ে নেয়া হয়েছে। নিঝুম দ্বীপ ইউনিয়নের নামারচর বাজার, রাস্তার বাজার ও বন্দরটিলা বাজারে বিএনপি অফিস ভাংচুর করা হয়েছে। ছয় দিনে বিএনপি, যুবদল ও ছাত্রদলের ১৫ নেতা-কর্মীকে পিটিয়ে আহত করা হয়েছে।

আজিম বলেন, জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে এবং তার নির্বাচনী প্রচারণায় বাধা না দিতে নির্বাচন কমিশন, জেলা প্রশাসন ও রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয়ে একাধিকবার লিখিত অভিযোগ করলেও আমলে নেয়া হয়নি। তিনি বলেন, সহকারী পুলিশ সুপার (সার্কেল) এবং ওসিকে একাধিকবার সহযোগিতা চেয়ে মোবাইল ফোনে কল করা হলেও তাকে নিরাপত্তা দেয়া হয়নি। তিনি বলেন, এ উপজেলায় ধানের শীষের পক্ষে ৯০ ভাগ জনসমর্থন রয়েছে। সুষ্ঠু পরিবেশে নির্বাচন হলে, এজেন্ট ও ভোটারদের নিরাপত্তা দেয়া হলে ধানের শীষের বিজয় সুনিশ্চিত।

এসব অভিযোগ অস্বীকার করে আওয়ামী লীগ প্রার্থী আয়েশা ফেরদাউস গণমাধ্যমকে জানান, হাতিয়ার মাটি ও মানুষের রাজনীতি করি। তার কোনো সন্ত্রাসী বাহিনী নেই দাবি করে তিনি বলেন, হাতিয়ার সর্বত্র তার কর্মী বাহিনী রয়েছে। তিনি আরো বলেন, তার জনপ্রিয়তায় ঈর্ষান্বিত হয়ে প্রতিপক্ষ তার বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করছেন। বিএনপির গণসংযোগে হামলার সঙ্গে তার নেতা-কর্মীদের কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই।

নোয়াখালী জেলা প্রশাসক তন্ময় দাস গণমাধ্যমকে জানান, প্রকৌশলী ফজলুল আজিমের অবরুদ্ধ হওয়ার ব্যাপারটি তার জানা নেই। বিষয়টি অবহিত করা হলে তিনি আইনগত ব্যবস্থা নেবেন। অপরদিকে উপজেলা নির্বাহী ও সহকারী রিটার্নিং অফিসার নুর আলম মোবাইল গণমাধ্যমকে জানান, ইসির নির্দেশ পেলে প্রকৌশলী আজিমকে নিরাপত্তা দেয়ার ব্যবস্থা করবেন। এ ব্যাপারে তার সঙ্গে কথাও হয়েছে।

(জাস্ট নিউজ/এমআই/০৯৫৬ঘ.)