প্রহসনের নির্বাচনকে বৈধতা দিতেই গণভবনে চা চক্রের আয়োজন: মঈন খান

প্রহসনের নির্বাচনকে বৈধতা দিতেই গণভবনে চা চক্রের আয়োজন: মঈন খান

প্রহসনের নির্বাচনকে বৈধতা দিতে চা চক্রের আয়োজন করেছে সরকার বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান।

রবিবার সন্ধ্যায় জাতীয় প্রেসক্লাবের কনফারেন্স লাউঞ্জে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে আরাফাত রহমানের চতুর্থ মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে এক আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।

মঈন খান বলেন, ৩০ ডিসেম্বরের ভোট ডাকাতির নির্বাচনকে মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্য করার জন্যই সরকার চা চক্রের আয়োজন করেছে। কিন্তু, সরকার যতোই প্রচারণা চালাক, দেশের মানুষকে বোঝানো যাবে না। সবাই দেখেছে নির্বাচনে কী হয়েছে।

“আওয়ামী লীগ বলে, তারা এদেশে গণতন্ত্র কায়েম করেছে। তারা বলে, আওয়ামী লীগের উন্নয়নের জোয়ারে মানুষ তাদের মুরিদ হয়ে এবার নির্বাচনে ৯৫/৯৬ শতাংশ ভোট দিয়েছে। কিন্তু কস্মিনকালেও আওয়ামী লীগের পক্ষে এতো ভোট পাওয়া সম্ভব নয়। আওয়ামী লীগের কর্মকাণ্ডে ১৯৭২/৭৩ সালের প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে। তখন লিখিত বাকশাল প্রতিষ্ঠা করেছিল। এখন অলিখিত বাকশাল চলছে।”

আরাফাত রহমান কোকোর বিষয়ে তিনি বলেন, ‘তিনি এমন একজন মানুষ ছিলেন- শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের সঙ্গে, বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে বা তারেক রহমানের সঙ্গে যার তুলনা হয় না। একটি রাজনৈতিক পরিবারে জন্ম হলেও তিনি সম্পূর্ণ রাজনীতিবিমুখ মানুষ ছিলেন। একজন ক্রীড়ামোদি হিসেবে তিনি বেশি পরিচিত।

অনুষ্ঠানে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেন, ‘একাদশ জাতীয় নির্বাচনের কালো অধ্যায়ের সত্য ইতিহাস আগামী প্রজন্ম একদিন জানবে। সেদিন আওয়ামী লীগকে ইতিহাসের কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে। আওয়ামী লীগ জানে তারা যদি পরাজিত হয়, তাহলে পিলখানা হত্যা মামলা, বাংলাদেশ ব্যাংক লুট, সাগর-রুনি হত্যার মূল কারণ বেরিয়ে আসবে। রমনা বটমূলে বোমা হামলা মামলার আসামি হয়ে কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে। এসব থেকে বাঁচতে এই সরকার যতো নোংরা খেলা আছে, সব খেলছে।’

বাংলাদেশে একটি বিস্ময়কর রাজনৈতিক পরিবর্তন ঘটেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘অনেকেই একাত্তরের কথা, ৮৬’র কথা, ২০০১ এর কথা বলেন, কিন্তু সেসব পরিস্থিতির সঙ্গে বর্তমান পরিস্থিতি মিলবে না। মোটাদাগে যে দুটি বিষয় আমার চিহ্নিত করি তার একটি হচ্ছে নির্বাচন। এই নির্বাচন জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ও ২০ দল বনাম ১৪ দলের সঙ্গে হয়নি। এই নির্বাচনে একদিকে ছিল ২০ দল এবং ঐক্যফ্রন্ট। অন্যদিকে নির্বাচন কমিশন, প্রশাসন, বিচার বিভাগ, আওয়ামী লীগ ও ১৪ দলের ক্যাডার বাহিনী। এ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সমর্থকরাও ভোট দিতে পারেনি।’

একাদশ নির্বাচনে শুধু বিএনপি পরাজিত হয়েছে তা নয়। এই নির্বাচনে পরাজিত হয়েছে দেশের জনগণ ও গণতন্ত্র। এই নির্বাচনে দেশকে একটি অন্ধকারের দিকে ধাবিত করা হয়েছে। দেশে একটি কলঙ্কময় অধ্যায় সৃষ্টি করা হয়েছে। তিনি বলেন, কেউ মারা গেলে যেমন তার দাফনের অনুষ্ঠান করা হয় গত নির্বাচনে গণতন্ত্রকে হত্যা করে সেটাকে দাফনের অনুষ্ঠান হিসেবে প্রধানমন্ত্রী গণভবনে চা চক্রের আয়োজন করেছেন।

একে/