বিতর্কিত রায়ে কারাগারে খালেদা জিয়ার এক বছর

বিতর্কিত রায়ে কারাগারে খালেদা জিয়ার এক বছর

বিতর্কিত রায়ে বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার কারাবাসের এক বছর পূর্ণ হলো আজ। জিয়া অরফানেজ ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় দেয়া ওই বিতর্কিত রায়ে ১৭ বছরের সাজা নিয়ে গত বছরের ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে তিনি কারাগারে আছেন। ৭৩ বছর বয়সী বেগম খালেদা জিয়া হৃদযন্ত্র, চোখ ও হাঁটুর সমস্যায় ভুগছেন।

তার মুক্তির জন্য আজ শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ারস ইনস্টিটিউটে প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করবে দলটি। এ ছাড়া শনিবারও ঢাকা মহানগরী বাদে দেশজুড়ে প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করবে তারা।

জানা গেছে, তার বিরুদ্ধে করা ৩৬টি মামলার মধ্যে চারটির জামিন এখনও বাকি।

তার আইনজীবীরা জানিয়েছেন, কারাগারে বেগম খালেদা জিয়া সকালে ঘুম থেকে উঠে ইবাদত-বন্দেগি করেন ও পত্রিকা পড়েন। মূলত: ইবাদত-বন্দেগি ও বই পড়ে দিনের বেশিরভাগ সময় কাটান।

গত বছর ৩০ অক্টোবর অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় হাইকোর্ট বিতর্কিত রায়ে বেগম খালেদা জিয়ার নিম্ন আদালতের দেয়া ৫ বছরের সাজা বাড়িয়ে ১০ বছর করেন। সম্প্রতি এ মামলার পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়েছে। আর ২৯ অক্টোবর চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় বেগম খালেদা জিয়াকে ৭ বছরের কারাদণ্ড দেন বিচারিক আদালত। এ মামলায় বেগম খালেদা জিয়ার খালাস চেয়ে হাইকোর্টে আপিল আবেদন করেন আইনজীবীরা। আপিলটি এখনও হাইকোর্টের কোনো বেঞ্চে উপস্থাপন করা হয়নি।

নথিপত্র পর্যালোচনায় দেখা যায়, বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে ৩৬টি মামলার মধ্যে দুর্নীতির মামলা ৫টি। এগুলো হলো- জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট, জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট, নাইকো, গ্যাটকো ও বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি দুর্নীতি মামলা। পাঁচটি মামলাই এক-এগারোর সময়ে করা। বাকি ৩১টি ২০১৪ সালের পর করা। মূলত: এসব মামলা হয় রাষ্ট্রদ্রোহ, হত্যা, ইতিহাস বিকৃতি, বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কটূক্তি, ভুয়া জন্মদিন পালন ও ঋণখেলাপির অভিযোগে।

গত বছরের ৮ ফেব্রুয়ারি বকশীবাজারে কারা অধিদফতরের প্যারেড গ্রাউন্ডে ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫-এর বিচারক ড. মো. আখতারুজ্জামান জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় এক বিতর্কিত রায়ে বেগম খালেদা জিয়াকে ৫ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেন।

ওই দিন থেকেই কারাগারে আছেন সাবেক এ প্রধানমন্ত্রী।

বেগম খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা জানিয়েছেন, এখন বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তি পেতে হলে কুমিল্লায় হত্যা, জিয়া অরফানেজ, জিয়া চ্যারিটেবল ও ঢাকার মানহানির মামলায় জামিন পেতে হবে।

এ বিষয়ে আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন জানান, একের পর এক মামলায় জড়ানো হচ্ছে বেগম খালেদা জিয়াকে। সরকারের সদিচ্ছা না থাকলে কোনোভাবেই তাকে মুক্ত করা সম্ভব নয়। তবে আমরা আইনি লড়াই চালিয়ে যাব।

বেগম খালেদা জিয়ার আরেক আইনজীবী ব্যারিস্টার এম মাহবুব উদ্দিন খোকন বলেন, যে মামলায় বেগম খালেদা জিয়াকে সাজা দেয়া হয়েছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট। এর কোনো ভিত্তি নেই। আপিলে বেগম খালেদা জিয়া খালাস পাবেন।

এদিকে, আইনি প্রক্রিয়া ও তার মুক্তি নিয়ে পক্ষে-বিপক্ষে রয়েছে নানা বিতর্ক। তাই আইনি প্রক্রিয়ার পাশাপাশি রাজপথের আন্দোলনেই বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির পথ খুঁজছেন তার আইনজীবীরা।

এমজে/