আরাফাত রহমান কোকোর তৃতীয় মৃত্যুবার্ষিকী আজ

আরাফাত রহমান কোকোর তৃতীয় মৃত্যুবার্ষিকী আজ

ঢাকা, ২৪ জানুয়ারি (জাস্ট নিউজ) : মহান স্বাধীনতার ঘোষক, বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান এবং বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর তৃতীয় মৃত্যুবার্ষিকী আজ ২৪ জানুয়ারি, বুধবার। এই উপলক্ষে দলটির পক্ষ থেকে পবিত্র কোরআন খতম, মিলাদ মাহফিল ও দোয়া অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।

আরাফাত রহমান কোকোর তৃতীয় মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে বুধবার বাদ আসর বনানীস্থ কবরস্থানে মরহুমের কবরে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া আত্মীয়স্বজন ও দলের জ্যেষ্ঠ নেতাদের নিয়ে ফাতেহা পাঠ করবেন ও দোয়া মাহফিলে শরিক হবেন। এ ছাড়া মরহুমের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে ওইদিন বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয়ে বাদ মাগরিব দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে। বিএনপি চেয়ারপারসনের বাসায় দিনব্যাপী কোরআন খতম ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে।

২০১৫ সালের ২৪ জানুয়ারি হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুরে ইন্তেকাল করেন বিশিষ্ট ক্রীড়া সংগঠক আরাফাত রহমান কোকো। দিবসটি উপলক্ষে বিএনপির উদ্যোগে দেশব্যাপী আলোচনা সভা ও তার রুহের মাগফিরাত কামনায় দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে। দেশব্যাপী বিএনপি এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের সব পর্যায়ের নেতা-কর্মী, গুণগ্রাহী ও শুভানুধ্যায়ীদের উক্ত আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে শরিক হওয়ার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।

১/১১ এর জরুরী অবস্থার সময় অসুস্থ অবস্থায় গ্রেফতার হওয়া আরাফাত রহমান কোকো ২০০৮ সালের ১৭ জুলাই তৎকালীন সেনা নিয়ন্ত্রিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের নির্বাহী আদেশে মুক্তি পাওয়ার পর চিকিৎসার জন্য থাইল্যান্ড যান। পরে সেখান থেকে মালেয়শিয়া যান তিনি। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত স্ত্রী সৈয়দ শর্মিলা রহমান সিঁথি, দুই মেয়ে জাফিয়া রহমান ও জাহিয়া রহমানকে নিয়ে সেখানেই ছিলেন তিনি।

২০১৩ সালের জুন মাসে যুক্তরাষ্ট্র সফরের সময়ে খালেদা জিয়া ব্যাংককে যাত্রাবিরতি দিয়ে ছোট ছেলেকে দেখতে গিয়েছিলেন। সেটাই ছিল মায়ের সঙ্গে তার শেষ সাক্ষাৎ।

ছোট ছেলে এমন সময়ে মারা যান যখন মা খালেদা জিয়া দেশের গণতন্ত্র ও ভোটাধিককার রক্ষার আন্দোলন করতে গিয়ে গুলশানের কার্যালয়ে ২০১৫ সালের ৩ জানুয়ারি থেকে অবরুদ্ধ ছিলেন। সরকার তার বাসার সামনে বালুর ট্রাক দিয়ে এবং বাসার গেটে তালা লাগিয়ে রাখে। ছেলের মৃত্যুর সংবাদে অচেতন হয়ে পড়েন খালেদা জিয়া। বারবার মূর্চ্ছা যান তিনি। বিদেশে ছয় বছরেরও বেশি সময় ধরে চিকিৎসার জন্য অবস্থান করলেও আদরের ছোট ছেলে এভাবে মারা যাবেন এমনটি বেগম খালেদা জিয়ার কল্পনাতেও ছিল না। পাশে থাকা পরিবারের স্বজনরা সান্ত্বনা দিতে গেলেও তাকে থামানো যায়নি। ছেলের মৃত্যুতেও তিনি জনগণের ভোটের অধিকার রক্ষায় আন্দোলন অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিয়েছিলেন।

উল্লেখ্য, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বীর উত্তম ও বেগম খালেদা জিয়ার ঘর আলোকিত করে ১৯৭০ সালের ১২ আগস্ট আরাফাত রহমান কোকো জন্মগ্রহণ করেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় শিশু কোকো মা ও বড় ভাই তারেক রহমানের সঙ্গে বন্দি ছিলেন ঢাকা ক্যান্টনমেন্টে। রাজনৈতিক পরিবারে তার জন্ম হলেও তিনি রাজনীতিক হিসেবে নয়, একজন ব্যবসায়ী ও ক্রীড়া সংগঠক হিসেবেই বেশি পরিচিত ছিলেন। ব্যবসা, ক্রীড়া ও সামাজিক সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডেই নিজেকে সর্বদা নিয়োজিত রেখেছিলেন। ক্রিকেটপ্রেমী হিসেবে বাংলাদেশের ক্রিকেটের উন্নয়নে এ ক্রিকেটপ্রেমী ছুটে বেড়িয়েছিলেন শহর থেকে গ্রামে। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য হিসেবে ২০০৩ সালে কাজ শুরু করেছিলেন তিনি। সেই সঙ্গে বিসিবির একজন সদস্যও ছিলেন তিনি। ডেভেলপমেন্ট কমিটির চেয়ারম্যান হিসেবে ক্রিকেটের উন্নয়নের জন্য যে কর্মসূচি শুরু করেছিলেন তিনি বর্তমানে তার সুফল পাচ্ছে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। এছাড়া তিনি মোহামেডান ক্লাবের এক্সিকিউটিভ কমিটির কালচারাল সেক্রেটারি ছিলেন।

(জাস্ট নিউজ/ওটি/একে/১০৩৭ঘ.)