খালেদা জিয়ার রায় ঘোষণার দিন হবে ফয়সালার দিন: দুদু

খালেদা জিয়ার রায় ঘোষণার দিন হবে ফয়সালার দিন: দুদু

ঢাকা, ২৭ জানুয়ারি (জাস্ট নিউজ) : বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার রায় ঘোষণার দিনকে ফয়সালার দিন উল্লেখ করে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেছেন, ওই দিন বিএনপির চেয়ারপারসনের গায়ে যদি ফুলের আঁচড়ও পড়ে বাংলাদেশের মানুষ গর্জে উঠবে।

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী এবং এরশাদ বেগম খোলেদা জিয়াকে জেলে পাঠাতে চান দেশবাসী সেটা জানে। তাদের এই আক্রোশ দেশবাসী মানবে না। রাস্তায় কে নামলো কে নামলো না এটা নিয়ে কিছু বলার নেই। বাংলাদেশের মানুষ কখনো বসে থাকবে না।

শুক্রবার দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে নাগরিক অধিকার আন্দোলন ফোরাম আয়োজিত আরাফাত রহমান কোকোর ৩য় মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা ও স্মরণ সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

দুদু বলেন, আমরা যদি আন্দোলন একবার শুরু করি আপনাকে (শেখ হাসিনা) পরাজিত করার আগে রাস্তা থেকে ঘরে ফেরার কোনো সুযোগ নেই। আমাদের নেত্রী অতীতে এরশাদের পতন না ঘটিয়ে নির্বাচনে যাননি। যদি বিবেচনায় আসেন ভালো আর যদি না আসেন ৮ তারিখ থেকেই বাংলাদেশের মানুষ বিএনপির নেতৃত্বে রাজনৈতিকভাবে অন্যায় অত্যাচার প্রতিরোধে গর্জে উঠবে।

প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে সাবেক এ ছাত্রনেতা বলেন, প্রধানমন্ত্রী আপনাকে বলি একদিন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবেরও পাকিস্তানিরা বিচার করেছিল। তাকে সাজা দিয়েছিল এবং কারাগারেও রেখেছিল। তাতে কি পাকিস্তান রক্ষা পেয়েছিল। শেখ মুজিব কি জাতির কাছে ছোট হয়েছিল? না-কি বীর সন্তান হিসেবে শেখ মুজিব জাতির কাছে আবির্ভূত হয়েছিল। আপনি তার কন্যা হিসেবে একটু ভাবেন, চিন্তা করেন তাহলে বুঝতে পারবেন জেলে ভরলেই সমস্যার সমাধান হয় না। সাজা দিলেই গণতান্ত্রিক আন্দোলন ঠেকানো যায় না।

‘তাই আমি প্রধানমন্ত্রীকে বলবো সময় থাকতে সাবধান হোন। আমরা আপনাকে পরাজিত করতে চাই নির্বাচনের মধ্য দিয়ে। গণতান্ত্রিক বিধি ব্যবস্থা রক্ষা করতে চাই প্রতিযোগিতার মাধ্যমে।’

বিএনপির এই নেতা বলেন, বিএনপির জন্মই হয়েছে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা এবং রক্ষা করার জন্য। বিএনপি যদি ওই ধরনের নির্বাচনে যায় ওই দিনই তো আমাদের মৃত্যু হবে। জেনে শুনে আমরা তা করবো এটা যদি আপনারা প্রত্যাশা করেন তাহলে বুঝবো বোকার স্বর্গে বাস করছেন।।

শপথ নেওয়ার তিন মাস আগেই খালেদা জিয়া প্রধানমন্ত্রী!
১৯৬১ সালের ৬ আগস্ট সংবিধানের দ্বাদশ সংশোধনীর মাধ্যমে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি শাসিত সরকারের পরিবর্তে সংসদীয় সরকার ব্যবস্থ্যা প্রতিষ্ঠিত হয়। নতুন সরকার ব্যবস্থা অনুযায়ী বেগম খালেদা জিয়া ১৯৯১ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর শপথ গ্রহণ করেন।

তাহলে ‘প্রধানমন্ত্রীর আরফানেজ ট্রাস্ট’ একাউন্ট কিভাবে ১৯৯১ সালের ৯ জুন খোলা সম্ভব? বেগম খালেদা জিয়া প্রধামন্ত্রী হিসাবে শপথ নেওয়ার তিন মাস আগেই ‘প্রধানমন্ত্রীর আরফানেজ ট্রাস্ট’ একাউন্ট খুললেন? ১৯৯১ সালের ৯ই সেপ্টেম্বর পুর্ব পর্যন্ত বিচারপতি শাহাবুদ্দিন আহমদ ছিলেন সরকারের দায়িত্বে। তখন এ ধরনের হিসবা খোলা হলে তার নাম হতো ‘রাষ্ট্রপতির অরফানেজ ট্রাস্ট’ প্রধানমন্ত্রীর নামে হওয়ার সাংবিধানিকভাবে সুযোগ ছিল না। এরকম গাঁজাখোরী অকল্পনীয় নির্জলা মিথ্যা মামলায় ৮ ফেব্রুয়ারি রায় দিতে যাচ্ছে কোর্ট।

যারা নথি জালিয়াতি করছেন তারা কি বেগম খালেদা জিয়া কবে শপথ নিয়েছিলেন সেই ইতিহাস জানেন না? একটা মিথ্যাকে ঢাকতে আরো দশটা মিথ্যা বলতে হয়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত মিথ্যাটা ঢেকে রাখা যায় না। প্রধানমন্ত্রীকে অতীতে এদেশের কোনো সরকার সপ্তাহে তিন দিন কোর্টে হাজির হতে বাধ্য করেছে এমন নজির একটিও নেই।

আয়োজক সংগঠনের উপদেষ্টা নাসির উদ্দীন হাজারীর সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক এম জাহাঙ্গীর আলমের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় প্রমুখ।

(জাস্ট নিউজ/ওটি/১১০৪ঘ.)