৯ নেতা-কর্মীর ফাঁসির রায়ে জাতি বিস্মিত: মির্জা আলমগীর

৯ নেতা-কর্মীর ফাঁসির রায়ে জাতি বিস্মিত: মির্জা আলমগীর

বিএনপির ৯ জন নেতা-কর্মীকে ফাঁসির আদেশ দেওয়ায় হতাশা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের দ্বন্দ্বের ঘটনায় ১৯৯৪ সালে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বহনকারী ট্রেনে গুলির ঘটনায় ৯ নেতা-কর্মীকে ফাঁসির আদেশ দেওয়া হয়।

মির্জা আলমগীর বলেছেন, ‘পাবনায় যে রায় দেওয়া হয়েছে, এতে গোটা জাতি বিস্মিত হয়েছে। ৯৪ সালে ট্রেনে দুটি গুলি ছোড়ার ঘটনা ঘটেছে। কে ছুঁড়েছে। কয়টি ছুঁড়েছে তার কোনো প্রমাণ নেই। অথচ এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ৯ জন বিএনপি নেতাকর্মীকে ফাঁসির আদেশ দিয়েছে।’

বৃহস্পতিবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড্যাব) আয়োজিত এক সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।

মির্জা আলমগীর বলেন, ‘এই রায়ে আমরা শুধু হতাশ নই বিক্ষুব্ধও। এই রায়ের মাধ্যমে প্রমাণিত হয়েছে এ দেশে স্বাধীন বিচার ব্যবস্থা নেই। ট্রেনে গুলি ছোঁড়ার ঘটনায় বিএনপি নেতাদের সাজা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু ওইদিন আওয়ামী লীগের দুপক্ষের গোলাগুলির ঘটনার ট্রেনে গুলি লাগে।’

এ সময় প্রধানমন্ত্রীর চীন সফরের বিষয়ে সমালোচনা করেন বিএনপি মহাসচিব। তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী একটা অর্থনীতি ফোরামের দাওয়াতে গেছেন, চীনের সরকারের দাওয়াতে যান নাই। আমরা খুব খুশি হতাম তিনি যদি রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে চীনা প্রেসিডেন্টের সঙ্গে বসে প্রধান অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সমাধানের কাজটি করতেন। কিন্তু তিনি তা করছেন না। তিনি চুক্তি করেছেন, মেগাপ্রজেক্ট, মেগা দুর্নীতির চুক্তি। আমার বিশ্বাস বাংলাদেশের মানুষ তা মেনে নিবে না।’

মির্জা আলমগীর বলেন, ‘আওয়ামী লীগের নেতারা সব সময় বলে বিএনপির জন্ম ক্যান্টনমেন্টে। তারা ক্যান্টনমেন্টের দল। কিন্তু তারা একবারও বলে না এরশাদের আমলে দীর্ঘ ৯ বছর আন্দোলনের মধ্য দিয়ে বেগম খালেদা জিয়া রাজনীতিতে এসেছেন।’

এ সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘শেখ হাসিনা ঘোষণা করেছিলেন; এরশাদের অধীনে যে নির্বাচনে যাবে সে হবে জাতীয় বেঈমান। কয়েকদিন পরে তিনিই এরশাদের অধীনে নির্বাচনে গিয়েছেন। আমরা এগুলো ভুলে যাইনি। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া প্রতিটি সময়ে জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করেছেন। এখনও তিনি করে যাচ্ছেন। এখন যে কারাগারে আছেন এটাও জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য।’

বিএনপি মহাসচিব আরো বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সংবাদপত্রের স্বাধীনতা হরণ করে মাত্র ৪টি পত্রিকা রেখে আর সব বন্ধ করে দিয়েছিল। পরবর্তীতে জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় এসে সব পত্রিকা খুলে দিয়েছিলেন।’

বেগম খালেদা জিয়ার মামলার ব্যাপারে মির্জা আলমগীর বলেন, ‘এই ধরনের মামলায় সবাই জামিন পান। শুধু বেগম খালেদা জিয়া জামিন পাচ্ছেন না। এই ধরনের মামলায় জামিন পাওয়ার উদাহরণ আমাদের সামনেই আছে। ব্যারিস্টার মঈনুল জামিন পেয়েছেন। মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া জামিন পেয়েছেন। শুধু খালেদা জিয়া জামিন পাচ্ছেন না।’

নির্বাচন কমিশনের প্রতি মানুষের আর কোনো আস্থা নেই। একটা নির্বাচনও তারা সুষ্ঠু করতে পারেননি বলেও মন্তব্য করেন বিএনপি মহাসচিব।

ড্যাবের আহ্বায়ক প্রফেসর ডা. ফরহাদ হালিম ডোনারের সভাপতিত্বে আরো বক্তব্য রাখেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন, ড্যাবের নবনির্বাচিত সভাপতি হারুন আল রশীদ, মহাসচিব ডা. আবদুস সালাম, আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সচিব ডা. ওবায়দুল কবির খান, নবনির্বাচিত কোষাধ্যক্ষ ডা. জহিরুল ইসলাম শাকিল, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব ডা. মেহেদী হাসান প্রমুখ।

এমআই