ময়মনসিংহ, ২৯ জানুয়ারি (জাস্ট নিউজ) : ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জে উপজেলা যুবলীগের নবগঠিত আহ্বায়ক কমিটির বরণ অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে মঞ্চে আগুন ও দু'পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ১৪৪ ধারা জারি করে উপজেলা প্রশাসন। তবে এতেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না আসায় অন্তত ১০ রাউন্ড টিয়ার গ্যাসের শেল ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ এবং লাঠিচার্জ করে পুলিশ।
রবিবার দিনভর দফায় দফায় চলে এ সংঘর্ষ। এতে আহত হয়েছেন পথচারীসহ অন্তত ৩০ জন।
জানা গেছে, গত ২২ জানুয়ারি জেলা যুবলীগ মো. আবুল খায়েরকে আহ্বায়ক ও মো. আবদুছ ছালামকে এক নম্বর যুগ্ম আহ্বায়ক করে ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা যুবলীগের ৩৩ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটি অনুমোদন দেয়। নবগঠিত এ কমিটির আনন্দ শোভাযাত্রা ও স্মৃতিসৌধ চত্বরে বরণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয় রবিবার। কিন্তু এ কমিটির বিরোধিতা করে সদ্যবিলুপ্ত কমিটির আহ্বায়ক মো. মতিউর রহমান মতির ছোট ভাই উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মাহবুবুর রহমান, সদ্যবিলুপ্ত কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক কামরুল হাসান জুয়েল ও উপজেলা ছাত্রলীগের বর্তমান সভাপতি একেএম ফরিদ উল্লার নেতৃত্বে সকাল ১০টার দিকে একটি মিছিল বের করা হয়। মিছিল থেকে স্মৃতিসৌধে যুবলীগের বরণমঞ্চে পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। এ সময় অনুষ্ঠানের পক্ষ-বিপক্ষের লোকজনের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষ হয়। এতে পথচারী তারা মিয়া ও আকবর আলীসহ অন্তত ৩০ জন আহত হন। ঈশ্বরগঞ্জ কলেজ এলাকায় বেশ কয়েকটি মোটরসাইকেল ও ছাত্রলীগের মোটরসাইকেল শোভাযাত্রায় হামলা চালায় যুবলীগের বিলুপ্ত কমিটির পক্ষের নেতাকর্মীরা।
এ অবস্থায় বেলা সাড়ে ১২টার দিকে পৌর এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করে উপজেলা প্রশাসন; কিন্তু এর মধ্যেই নবগঠিত কমিটির শোভাযাত্রা শহরের সড়ক প্রদক্ষিণ করে। এ সময় সাবেক আহ্বায়ক মতিউর রহমান মতির নেতৃত্বে তার পক্ষের লোকজন প্রতিপক্ষের দিকে এগিয়ে যেতে শুরু করে। এ অবস্থায় দু'পক্ষ সংঘর্ষে জড়ানোর আশঙ্কায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ অন্তত ১০ রাউন্ড টিয়ার গ্যাসের শেল ও রাবার বুলেট ছোড়ে এবং লাঠিচার্জ করে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়।
উপজেলা যুবলীগের নবগঠিত কমিটির আহ্বায়ক মো. আবুল খায়ের বলেন, আগামী নির্বাচনে নৌকা প্রতীকের জয় নিশ্চিত করার জন্য তাদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে; কিন্তু বিতর্কিত লোকজন কর্মসূচি বানচালের চেষ্টা করে। তবে তারা সফলভাবেই তাদের কর্মসূচি পালন করেছেন।
সদ্যবিলুপ্ত কমিটির আহ্বায়ক মতিউর রহমান মতি বলেন, নতুন কমিটিতে আওয়ামী লীগ পরিবারের কেউ নেই। বিতর্কিত কমিটির বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে তারা প্রতিবাদ জানিয়েছেন। আওয়ামী পরিবারের বিক্ষুব্ধ লোকজন সভামঞ্চে আগুন দিয়েছে বলেও দাবি করেন তিনি।
ঈশ্বরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. বদরুল আলম খান বলেন, যুবলীগের অনুষ্ঠান সম্পর্কে পুলিশকে আগে জানানো হয়নি। সকালে একটি পক্ষ মঞ্চে আগুন ও হামলা চালালে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ মোতায়েন করা হয়।
ওসি আরো জানান, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সাত রাউন্ড টিয়ার গ্যাসের শেল নিক্ষেপ করা হয়েছে। এলাকায় পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।
(জাস্ট নিউজ/ওটি/১০ঘ.)