জলাবদ্ধতা সৃষ্টি সরকারের উন্নয়নের জোয়ারের ফসল: খন্দকার মোশাররফ

জলাবদ্ধতা সৃষ্টি সরকারের উন্নয়নের জোয়ারের ফসল: খন্দকার মোশাররফ

ঢাকা-চট্টগ্রামে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি সরকারের উন্নয়নের জোয়ারের ফসল বলে মন্তব্য করেছেন খন্দকার মোশাররফ হোসেন। রাজধানী ঢাকা ও বন্দর নগরী চট্টগ্রামে ব্যাপক জলাবদ্ধতার প্রসঙ্গ টেনে শনিবার দুপুরে এক আলোচনা সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য এ মন্তব্য করেন।

জাতীয় প্রেসক্লাবের মওলানা মোহাম্মদ আকরম খাঁ হলে নাগরিক অধিকার আন্দোলন ফোরামের উদ্যোগে ‘গুম-হত্যা-ধর্ষণের মহামারীর কবলে বাংলাদেশ আতঙ্কিত নাগরিক জীবন ও সরকারের ভূমিকা’ শীর্ষক এই আলোচনা সভা হয়।

সভায় খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘উন্নয়নের নজির তো আমরা দেখছি। ফ্লাইওভার ঠিকই হয়েছে কিন্তু ফ্লাইওভারের নিচে গত ক’দিনে দেখা গেল উন্নয়নের জোয়ার, পানির জোয়ার। উন্নয়নের জোয়ারে গত ক’দিন ঢাকা-চট্টগ্রামের যেভাবে জলাবদ্ধতার কারণে মানুষের যে পরিমাণ ক্ষতি এবং দুর্ভোগ হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘এত টাকা খরচ করেছেন উন্নয়নে, কার জন্য উন্নয়ন করলেন? এই জনগণের জন্য। আমরা বুঝি কাদের জন্য এই উন্নয়ন করেছেন।’

রাষ্ট্রপতির প্রতি আহ্বান
বিএনপির জ্যেষ্ঠ এই নেতা বলেন, ‘গুম-খুন-হত্যা-ধর্ষণ আজকে মহামারী আকার ধারণ করেছে। সমাজে মূল্যবোধের অবক্ষয় ঘটেছে, পচন ধরেছে। এই মহামারী থেকে দেশকে রক্ষা করতে হলে দেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে হবে, জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘আমরা মনে করি, গুম-খুন-ধর্ষণ যে আকার ধারণ করেছে, এই মহামারী থেকে দেশকে রক্ষা করার জন্য এখান থেকে মহামান্য রাষ্ট্রপতিকে বলতে পারি- যদিও তিনি আওয়ামী লীগের কিন্তু সংবিধান মোতাবেক তিনি দল-নিরপেক্ষ ব্যক্তি আজকে তিনি জাতীয় একটি সংলাপের আহ্বান করে শিগগিরই একটা উদ্যোগ গ্রহণ করতে পারেন।’

অর্থমন্ত্রী ধনিক ব্যবসায়ী
খন্দকার মোশাররফ বলেন, ‘এবারেরই অর্থমন্ত্রী (আ হ ম মুস্তফা কামাল) দেশের ১০ জন ধনী ব্যক্তির মধ্যে একজন। কোনোদিন ধনী ব্যবসায়ীদেরকে কোনো দেশের অর্থমন্ত্রী বানানো হয় না। আমাদের বাংলাদেশে এই প্রথম কিন্তু আজকের সরকারের অর্থমন্ত্রী একজন ধনিক ব্যবসায়ী। কোনো দেশে ধনীদেরকে অর্থমন্ত্রী বানানো হয় না। তাদের (ধনিক) মধ্য থেকে যদি অর্থমন্ত্রী হয় তাহলে তিনি তো তাদের স্বার্থই দেখবেন, জনগণের স্বার্থ দেখবেন না।’

তিনি বলেন, ‘ভ্যাটের পরিধি বৃদ্ধি- আপনারা জানেন আমরা যে মোবাইল ফোন ব্যবহার করি সেখানে জনসাধারণকে প্রায় ২৭% ট্যাক্স দিতে হচ্ছে। আজকে ভ্যাটের কারণে সকল প্রকার নিত্যপণ্যের দাম বেড়েছে। এটা কী জনগণের জন্য উপকার হয়েছে? প্রধানমন্ত্রী গতকাল (শুক্রবার) গণভবনে দলের একসভায় বলেছেন যে, আওয়ামী লীগ জনগণকে সঙ্গে নিয়ে দেশ চালায়, জনগণকে অবহেলা করে না। আমি বলতে চাই, মোবাইল ফোনে যে পরিমাণ ভ্যাট বসিয়েছেন, গ্যাসের দাম বৃদ্ধি করেছেন-এটা কী জনগণের পক্ষে না বিপক্ষে। অবশ্যই জনগণের বিপক্ষে। জনগণকে আপনারা অবহেলা করেন বলেই, জনগণের প্রতি জবাবদিহিতা নেই বলে আপনারা নির্দয়ভাবে এসব কর্মকাণ্ডগুলো করতে পারছেন। প্রধানমন্ত্রীর এই বক্তব্য সত্যের অপলাপ মাত্র।’

সরকারের অপপ্রচার
খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘সরকার প্রতিটি ক্ষেত্রে অপপ্রচার চালাচ্ছে। আপনারা দেখেন- পদ্মাসেতু কে বা কারা ফেসবুকে কী একটা কী লিখেছে- এখানে মাথার দরকার হবে ইত্যাদি। সেটা ব্যাপারে আমরা শুনছি যে, গ্রেপ্তারও হচ্ছে কয়েকজন। কিন্তু সরকার বলে দিলো এর পেছনে বিএনপি আছে। এই যে একটা অপপ্রচার সব কিছুতে।’

‘আমরা বলতে চাই, অপপ্রচার করে মিথ্যা বা অসত্য দাবি করে, উন্নয়নের মহাসোপানে বাংলাদেশ এসব বলে জনগণকে বিভ্রান্ত করা যাচ্ছে না। জনগণ এই সরকারের গৃহীত পদক্ষেপের কারণের প্রত্যেকে দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে, জনগণের পকেট থেকে টাকা দিতে হচ্ছে।’

সংগঠনের সিনিয়র সহ-সভাপতি মোজাম্মেল হক মিন্টুর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলমের পরিচালনায় আলোচনা সভায় আরো বক্তব্য দেন- বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আহমেদ আজম খান, নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ, বিলকিস ইসলাম, শাহ নেছারুল হক, ফরিদউদ্দিন, এলডিপির যুগ্ম মহাসচিব শাহাদাত হোসেন সেলিম, কল্যাণ পার্টির সাহিদুর রহমান তামান্না প্রমুখ।

এমআই