১৮ জুলাই থেকে বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশ শুরু : মির্জা আলমগীর

১৮ জুলাই থেকে বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশ শুরু : মির্জা আলমগীর

বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম জিয়ার মুক্তির দাবিতে বিভাগীয় শহরে শিগগিরিই সমাবেশের কর্মসূচি শুরু হবে বলে জানিয়েছেন, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, আগামী ১৮ জুলাই বরিশালে, ২০ তারিখ চট্টগ্রাম ও ২৫ তারিখ খুলনায় সমাবেশ করবে বিএনপি। এই ৩ বিভাগে সমাবেশের তারিখ আমরা এখন পর্যন্ত কনফার্ম করেছি। আশা করছি আগামী ৩০ তারিখের মধ্যে বাকী বিভাগীয় শহরগুলো সমাবেশ করতে পারবো।

শনিবার রাতে গুলশানে বেগম খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক কার্যালয়ে স্থায়ী কমিটির বৈঠক শেষে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

বৈঠকে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মওদুদ আহমদ, জমিরউদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সেলিমা রহমান উপস্থিত ছিলেন। এসময় লন্ডন থেকে স্কাইপেতে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান যোগ দেন।

মির্জা আলমগীর বলেন, আমাদের দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া দীর্ঘকাল ধরে কারারুদ্ধ রয়েছেন এবং বর্তমানে তিনি চিকিৎসার জন্য এখন হাসপাতালে রয়েছেন। কিন্তু আমরা খোঁজ-খবর নিয়ে জেনেছি, তার স্বাস্থ্যের কোনো উল্লেখযোগ্য উন্নতি হয়নি। তার শারীরিক যেসব সমস্যা ছিলো তার কোনো সমাধানই হয়নি। উপরন্তু সমস্যা বেড়েই চলেছে।

তিনি বলেন, আমরা অবিলম্বে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি ও তার সুচিকিৎসার ব্যবস্থার জন্য জোর দাবি জানাচ্ছি। আর সেই লক্ষ্যে বিভাগীয় শহরগুলোতে সমাবেশ করা হবে। দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠকে দেশে চলমান বন্যায় দূর্গতদের পাশে দাঁড়াতে দলের সর্বস্তরের নেতা-কর্মীদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে বলে জানান বিএনপি মহাসচিব। তিনি বলেন, অতিসম্প্রতি বাংলাদেশে অতিবৃষ্টি ও ভারত থেকে ছেড়ে দেয়া পানির ফলে যে বন্যার সৃষ্টি হয়েছে সেই বিষয়ে স্থায়ী কমিটির বৈঠকে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। আমরা অবিলম্বে বন্যাপীড়িত দূর্গত মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য দলের সর্বস্তরেরে নেতা-কর্মীদের প্রতি আহবান জানাচ্ছি।

বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, দলের কেন্দ্রীয় ত্রাণ কমিটিকে সক্রিয় করে দূর্গত এলাকায় ত্রাণ সমাগ্রি পাঠানোর কার্য্ক্রম শুরু করাও সিদ্ধান্ত হয়েছে আজকের বৈঠকে।

রোহিঙ্গা সঙ্কটের কথা উল্লেখ করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, আপনারা জানেন যে, রোহিঙ্গা ইস্যুটি দেশের অর্থনীতি, দেশের স্বাধীনতার ওপরে বড় রকমের চাপ সৃষ্টি করেছে। এক্ষেত্রে সরকার সম্পূর্ণভাবে ব্যর্থ হয়েছে এই সমস্যা সমাধানে উপনীতি হয়ে একটা প্রক্রিয়া শুরু করতে। আমরা দেখতে পারছি রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে সরকার কোনো কার্যকরি উদ্যোগ নিতে পারছে না। তারা সম্পূর্ণভাবে ব্যর্থ হয়েছে।

মির্জা ফখরুল আরো বলেন, আমরা আশা করেছিলাম প্রধানমন্ত্রী চীন সফর থেকে একটা পজেটিভ কোনো উত্তর পাবো। কিন্তু সেটাও আমরা দেখতে পারছি না। আমরা দেখলাম চীন তার একই অবস্থানেই আছে এবং সেখানে কোনো কনক্রিট কিছু আমাদের জন্য চীনা কমপক্ষ থেকে পাইনি৷ এ বিষয়ে আমরা কুটনীতিকদের ব্রিফিং করবো এবং তার আগে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে দেশবাসীকে জানাবো।

সংবাদ সম্মেলনে দেশের ব্যাংকিক ব্যবস্থা নিয়েও কথা বলেন মির্জা ফখরুল। বলেন, আমরা উদ্বেগের সাথে লক্ষ্য করেছি সরকারের আর্থিক ব্যবস্থাপনা চরমভাবে ভেঙে পড়েছে। বিশেষ করে ব্যাংকিং সিস্টেমটা একেবারে ভেঙে পড়েছে। আপনারা দেখেছেন তিনদিন আগে পিপলস লিজিং ফাইন্যান্স কোম্পানিটিকে আমানতকারীদের ২৩৬ কোটি টাকা ফেরত না দিয়েই বাংলাদেশ ব্যাংক প্রতিষ্ঠানটিকে অবসান করেছে। সেটা নজিরবিহীন ঘটনা। এর ফলে প্রতিষ্ঠানটির কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারি ও আমানতকারীরা চরম অনিশ্চয়তা মধ্যে পড়েছে।

তিনি বলেন, আমরা মনে করি, এ বিষয়টি গোটা ব্যাংকিং সিস্টেমের একটা প্রতিকী ঘটনা। এইভাবে গোটা ব্যাংকিং সিস্টেম ভেঙে পড়েছে। আমরা বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক এককভাবে আমানতকারীদের টাকা ফেরত দেয়ার ব্যবস্থা না করে এবং ওই প্রতিষ্ঠানটি কর্মকর্তা-কর্মচারিদের বিকল্প কোনো ব্যবস্থা না করে বন্ধ করে দেয়ার ঘটনার আমরা তী্ব্র নিন্দা জানাচ্ছি এবং অবিলম্বে প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তা-কর্মচারি ও আমানতকারীদের অর্থ ফেরত দেয়ার কার্য্করী ব্যবস্থা গ্রহনের জোর দাবি জানাচ্ছি।

এমজে/