প্রমাণ করুন শেয়ারবাজার লুণ্ঠনকারীরা আপনার দলের কেউ নয় : ফারুক

প্রমাণ করুন শেয়ারবাজার লুণ্ঠনকারীরা আপনার দলের কেউ নয় : ফারুক

দেশে অর্থপাচার, লুট, দুর্নীতির ভয়াবহ চিত্র তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সাবেক বিরোধীদলীয় চিফ হুইফ জয়নুল আবদিন ফারুক বলেছেন, ‘জনগণের টাকা নিয়ে যারা হোলি খেলছে কেন তাদেরকে বিচারের আওতায় নিয়ে আসছেন না? আপনি তাদেরকে দল থেকে বের করে দিয়ে প্রমাণ করুন- আপনার সরকার বালিশের দ্বিগুণ দাম নেয় না। প্রমাণ করুন শেয়ারবাজার লুণ্ঠনকারীরা আপনার দলের কেউ নয়।’

তিনি আরো বলেন, ‘সেটি আপনি দেখাবেন না। প্রমাণও করবেন না। কারণ একটাই- আপনি জনগণের ভোটে নির্বাচিত নন। জনগণের কাছে আপনার কোনও দায় নেই। কারণ জনগণ আপনাকে ভোট দেয় নাই।’

বৃহস্পতিবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ‘দেশ বাঁচাও মানুষ বাঁচাও’ আন্দোলন কতৃক আয়োজিত শেয়ারবাজার লুটের প্রতিবাদে এক মানববন্ধনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

‘দেশ বাঁচাও মানুষ বাঁচাও’ এর সভাপতি কে এম রকিবুল ইসলাম রিপনের সভাপতিত্বে এবং সংগঠনের প্রচার সম্পাদক গোলাম সরোয়ার সরকারের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান হাবিব, লেবার পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, সহ-তথ্যবিষয়ক সম্পাদক কাদের গনি চৌধুরী, কৃষকদলের সদস্য মিয়া মো:আনোয়ার ও মৎস্যজীবী দলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ইসমাইল হোসেন সিরাজী প্রমুখ বক্তব্য দেন।

জয়নুল আবদিন ফারুক বলেন, শেয়ারবাজার লুণ্ঠণকারীদের বিরুদ্ধে জনগণ আন্দোলনের জন্য প্রস্তুত আছে। জনগণ ইতোমধ্যে সংঘটিত হচ্ছে। এই অবৈধ সরকারের বিরুদ্ধে লড়াই করতে হবে। লড়াই করেই ভোটাধিকার ফিরিয়ে আনতে হবে। যারা গরিবের সম্পদ লুণ্ঠন করে শীততাপ নিয়ন্ত্রণ কক্ষে বসে আছে, যারা হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছে তারা সবাই এই অবৈধ সরকারের, এই বিনাভোটের সরকারের, এই নির্যাতিত গুমকারী আওয়ামী সরকারের পরিবারের সদস্য।’

জয়নুল আবদিন ফারুক প্রশ্ন রেখে বলেন, ‘একদিনে যে দেশে তিন হাজার কোটি টাকা শেয়ারবাজার থেকে লুণ্ঠন হয়ে যায় সেখানে সরকার নিশ্চুপ কেন- আমি বুঝতে পারি না? বসে থাকার কারণ একটাই হতে পারে, আর সেটা হচ্ছে তারা কোন আইনকে তোয়াক্কা করে না, তারা গণতন্ত্রকে তোয়াক্কা করে না, বিরোধীদলকে তোয়াক্কা করে না। তারা বিরোধী দলকে সমাবেশ করতে দেয় না। এরা পুলিশ নিয়ন্ত্রিত সরকার।’

তিনি বলেন, ‘দেশের সম্পদ লুণ্ঠনকারী হিসেবে যারা চিহ্নিত সেই আওয়ামী লীগ সরকারের কাছে দাবি পেশ করে লাভ কি আমি ঠিক বুঝতে পারি না? আমি দীর্ঘদিন পার্লামেন্টে, প্রেসক্লাবের রাস্তায়, রাজপথে সব নেতার বক্তব্য শুনি। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের বক্তব্য শুনি, বিএনপি নেতাকর্মীদের বক্তব্যও শুনি। কিন্তু আমার বিবেকের কাছে আমি একটি প্রশ্নের উত্তর খুঁজে পাই না- এই গরিবের সম্পদ লুণ্ঠনকারীদের বিচার হয় না কেন?’

সাবেক এই বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ বলেন, ‘এরা তো আইনের শাসনের সরকার নয়। এরা তো রাতের ভোটে সরকার। এরা বিরোধীদল ছাড়া সরকার। যে সরকার বালিশ লুণ্ঠন করে তোষকের টাকা লুণ্ঠন করে যারা জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয় না তারা বিদ্যুতের দাম বাড়ালেই বা কি গ্যাসের দাম বাড়ালেই বা কি, কোনও কিছুই আসে যায় না। কারণ তাদের জনগণের কাছে কোনও জবাবদিহিতা নেই।’

শেয়ারবাজার লুণ্ঠকারীদের বিরুদ্ধে সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার ভূমিকার কথা উল্লেখ করে ফারুক বলেন, ‘আজকে যিনি (বেগম খালেদা জিয়া) মাত্র দুই কোটি টাকা আত্মসাতের কাল্পনিক মামলায় পিজি হাসপাতালের একটি ছোট্ট রুমে চিকিৎসাধীন ক্ষমতায় থাকার সময় এই নেত্রী সংসদে দাঁড়িয়ে বলেছিলেন- আমার দলের কেউ যদি এই গরিবের টাকা লুণ্ঠনের দায়ে অভিযুক্ত থাকে আমাকে তার তালিকা দিন। আমি তাদেরকে দল থেকে বের করে দেবো। তাদেরকে আইনের হাতে সোপর্দ করবো।’

সরকারকে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে জয়নাল আবেদীন বলেন, ‘জনগণ আপনাদের কাছে জিম্মি নয়। কিছু প্রশাসনের কাছে জিম্মি। তাই জনগণের দাবি নিয়ে আমাদেরকে রাজপথে নামতে হবে। কারণ এই দাবি শুধু বিএনপি নয়, শেয়ারবাজারের টাকা খুইয়ে যারা গলায় রশি দিয়ে আত্মহত্যা করেছে এই দাবি তাদেরও। সরকারের কাছে দাবি জানিয়ে কোনও লাভ নেই। যারা শেয়ারবাজার লুণ্ঠন করেছে তারা এখনও বহাল তবিয়তে জাতীয় সংসদের সদস্য। বহাল তবিয়তে ল্যান্ড ক্রুজার গাড়ি চালায়।’

এমজে/