গুম হচ্ছে অপশাসনের নমুনা: মির্জা আলমগীর

গুম হচ্ছে অপশাসনের নমুনা: মির্জা আলমগীর

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, গুম হচ্ছে অপশাসনের নমুনা। বর্তমান শাসকগোষ্ঠী ক্ষমতাসীন হওয়ার পর বিরোধীদল শূন্য একদলীয় শাসন ব্যবস্থা কায়েম করার জন্য গুমকে ব্যবহার করছে।

আজ শুক্রবার ‘আন্তর্জাতিক গুম দিবস’ উপলক্ষে গণমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে তিনি এসব কথা বলেন।

মির্জা আলমগীর বলেন, আমি তাদের পরিবারের প্রতি আন্তরিক সমবেদনা জ্ঞাপন করছি। বাংলাদেশে গুমের আতঙ্ক এখন সর্বত্র পরিব্যাপ্ত। দুঃশাসন থেকে উৎপন্ন হয় গুম ও বিচার বহির্ভূত হত্যার মতো মানবতাবিরোধী হিংস্রতা। সরকারের গড়ে তোলা আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বিরোধীদলের প্রতিবাদী নেতাকর্মীদের ধরে নিয়ে অল্পদিন-দীর্ঘদিন অথবা চিরদিনের জন্যে নিখোঁজ করে দেয়।

মির্জা ফখরুল আরও বলেন, এ নৃশংস গুমের শিকার হয়েছেন সংসদ সদস্য ইলিয়াস আলী, সাইফুল ইসলাম হিরু ও চৌধুরী আলম, সুমনসহ অসংখ্য মানুষ। আরেকটি অভিনব গুমের শিকার হয়েছেন সাবেক মন্ত্রী ও দলের জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ। তাকে দুই মাস গুম করে রাখার পর পাচার করা হয়েছে অন্য দেশে। এ নতুন ধরনের ঘটনা দেশবাসীকে অজানা আতঙ্কে উদ্বিগ্ন করে তুলেছে।

তিনি বলেন, গুম করা হয়েছে বিএনপির অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের অসংখ্য নেতাকর্মীকে। তাদের বেদনার্ত পরিবাররা এখনও পথ চেয়ে বসে রয়েছে প্রিয়জনদের ফিরে আসার সম্ভাবনায়। রাষ্ট্র-সমাজে মানুষের মধ্যে নিরাপত্তাহীনতার বোধ সৃষ্টির জন্যই গুমকে কৌশল হিসেবে ব্যবহার করে নিষ্ঠুর শাসকগোষ্ঠী। তাদের মূল লক্ষ্য বিরোধীকণ্ঠকে নির্মূল করা।

তিনি আরও বলেন, গুমের অব্যাহত পরিস্থিতিতে দেশে সৃষ্টি হয়েছে এক ভয়ঙ্কর জটিল রাজনৈতিক সঙ্কট। জনসমর্থনহীন সরকারের টিকে থাকার অবলম্বনই হচ্ছে গুম। এ ধারা বয়ে চললে বাংলাদেশ এক ঘন অন্ধকারে ডুবে যাবে। মানুষের স্বাভাবিক জীবন-যাপন সম্পূর্ণভাবে বিপর্যস্ত হয়ে যাবে।

তিনি বলেন, আসুন, আমরা গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে ঐক্যবদ্ধ হই। কেবলমাত্র একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে প্রকৃত গণতান্ত্রিক সরকার গঠন হলেই গুম, অপহরণ, খুন ও বিচারবহির্ভূত হত্যার আতঙ্ক মানুষের মন থেকে দূর হবে।

২০০৬ সালের ২০ ডিসেম্বর গুম হওয়া থেকে সব ব্যক্তির সুরার জন্য আন্তর্জাতিক সনদ জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে গৃহীত হয়। ২০১০ সালের ডিসেম্বরে ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন ফর প্রটেকশন অব অল পারসন্স অ্যাগেইনস্ট এনফোর্সড ডিসঅ্যাপিয়্যারেন্স এই আন্তর্জাতিক সনদ কার্যকর হয়। তাতে ৩০ আগস্টকে আন্তর্জাতিক গুম প্রতিরোধ দিবস ঘোষণা করা হয়।

২০১১ সাল থেকে প্রতি বছর ৩০ আগস্ট গুম হওয়া মানুষগুলোকে স্মরণ এবং সেইসঙ্গে তাদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানানোর জন্য দিবসটি পালন করা হচ্ছে বিশ্বব্যাপী।

এমজে/