শিক্ষার্থীরা ঘুমান গণরুমে, ডাকসু জিএসের কক্ষে এসি

শিক্ষার্থীরা ঘুমান গণরুমে, ডাকসু জিএসের কক্ষে এসি

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের একটি বড় অংশের রাত কাটে গণরুমে। ঘিঞ্জি পরিবেশে ছারপোকার কামড় তাদের নিত্যসঙ্গী। এই পরিবেশে থেকে অনেকেই অসুস্থ হয়ে পড়েন। তবুও রেহাই নেই গণরুম থেকে। ছাত্রনেতারা দখল করে রাখেন আবাসিক হলের কক্ষগুলো। সেখানে ক্রীয়াশীল ছাত্রসংগঠনগুলোর প্রভাবশালী নেতা ও তাদের ভাবশীষ্যরা আয়েশী জীবন যাপন করেন। এদিকে গণরুমে সাধারণ শিক্ষার্থীদের প্রাণ যায় যায় অবস্থা।

এই পরিস্থিতি থেকে রেহাই দেয়ার প্রতিজ্ঞা করে ছাত্রসংসদ নির্বাচন করে ছাত্রলীগ। তিন দশক পর অনুষ্ঠিত ডাকসু নির্বাচনে দুই পদ ছাড়া বাকি পদগুলোতে জয় পায় ছাত্রলীগ। এরপর গণরুমে থাকা শিক্ষার্থীরা অভিশপ্ত গণরুম প্রথা থেকে মুক্তির স্বপ্ন দেখে। কিন্তু ডাকসু গঠন হওয়ার ছয় মাস পরও এ অভিশাপ থেকে মুক্ত হতে না পেরে শিক্ষার্থীরা হতাশ।

শিক্ষার্থীদের গণরুম সমস্যার সমাধানে কোনো উদ্যোগ নেয়নি ডাকসু। উল্টো দেখা যায়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) সাধারণ সম্পাদক (জিএস) গোলাম রাব্বানীর ডাকসুর নিজ অফিস কক্ষে কয়েক সপ্তাহ আগে নতুন শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত যন্ত্র (এসি) লাগানো হয়। এতে শিক্ষার্থী ও ছাত্রপ্রতিনিধিদের ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

সাধারণ শিক্ষার্থীদের ক্ষোভের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেছেন ডাকসু ভিপি নুরুল হক নুর। তিনি জিএসের রুমে এসি লাগানোর বিষয়ে বলেন, যেখানে ছাত্ররা গণরুমে পচে মরছে, একরুমে ঠাসাঠাসি করে ২০ জন থাকছে, কোনো সিলিং ফ্যান নেই। সেখানে একজন ছাত্র প্রতিনিধি হিসেবে জিএস রাব্বানী তার অফিস কক্ষে কোনোভাবেই এসি লাগাতে পারেন না। এটি আমি নৈতিকভাবে সমর্থন করি না।

এদিকে কিছুদিন আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) গণরুমে থাকা এক শিক্ষার্থীর ছারপোকার কামড়ে পিঠে ক্ষত সৃষ্টি হয়। ক্ষতের ছবি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফেসবুক গ্রুপে পোস্ট দেয়ার পর তা ভাইরাল হয়ে যায়। তোলপাড় সৃষ্টি হয় ক্যাম্পাসে। শিক্ষার্থীরা গণরুমের আরও নৃশংসতার কথা ও চিত্র তুলে ধরেন ফেসবুকে।

এ বিষয়ে জানতে নির্বাচনের আগে শিক্ষার্থীদের কাছে বিলি করা রাব্বানির নম্বরে ফোন করে কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি। তবে তার ঘনিষ্ঠ এক ছাত্রলীগ নেতা জানিয়েছেন, রাব্বানী বিশ্ববিদ্যালয় কিংবা ডাকসুর অর্থে এসি লাগাননি। জিএসের অফিস কক্ষে এসি লাগিয়েছেন একজনের গিফট পেয়ে।