খালেদা জিয়াকে হত্যার জন্য আটকে রাখা হয়েছে: মির্জা আলমগীর

খালেদা জিয়াকে হত্যার জন্য আটকে রাখা হয়েছে: মির্জা আলমগীর

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অভিযোগ করেছেন, হত্যার জন্যই বেগম খালেদা জিয়াকে সরকার সুপরিকল্পিতভাবে কারাগারে আটকে রেখেছে। তিনি বলেন, যে মামলায় তাকে আটক করে রাখা হয়েছে, সাজা দেয়া হয়েছে এরকম মামলাতেই আওয়ামী লীগের বহু নেতা জামিন নিয়ে বাইরে আছেন। অথচ দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে জামিন দেয়া হচ্ছে না।

সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দল আয়োজিত মানববন্ধনে তিনি এসব কথা বলেন।

মির্জা আলমগীর বলেন, বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া যদি বের হয়ে আসেন তাহলে জনগণকে সংগঠিত করে এই অপশাসন, অন্যায়-অত্যাচার, গণতন্ত্রহীনতার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলবেন, তা মোকাবেলা করার মতো ক্ষমতা তাদের নেই বলেই তাকে জেলখানায় বন্দি করে রাখা হয়েছে।

মির্জা আলমগীর আরো বলেন, এ সরকারের জনগণের সাথে কোনো সম্পর্ক নেই। এ সরকার জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন বলেই শুধুমাত্র রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে ভোটের আগের রাতে ভোট ডাকাতি করে তাদেরকে ক্ষমতায় ফিরে আসতে হয় এবং ক্ষমতায় টিকে থাকতে হয়। তারা ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্যই দমন-পীড়ন ও নিপীড়নের পথ বেছে নেয়।

তিনি বলেন, গত কয়েক বছরে ভৌতিক মামলা দেয়া হয়েছে এবং এসব মামলা কাজে লাগিয়ে তারা নির্বাচনের আগে নেতা-কর্মীদেরকে গ্রেফতার করছে ও বাড়িঘরে থাকতে দেয়া হয়নি।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, এ সরকার বিরোধী নেতাকর্মীদের উপর এক লাখ মামলা দিয়েছে, যেসব মামলায় আসামি ২৬ লাখ। পৃথিবীর ইতিহাসে কোনো গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দলকে এ রকম নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছে বলে আমার জানা নেই।

তিনি আরো বলেন, আজকে এই সরকার সুপরিকল্পিতভাবে বাংলাদেশের ভীতটাকেই নষ্ট করছে। সরকার গণতন্ত্রকে ধ্বংস করেছে, সকল গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে ধ্বংস করেছে এবং বিচার বিভাগকে দলীয়করণ করার চেষ্টা চালাচ্ছে। তারা প্রশাসনকে সম্পূর্ণ দলীয়করণ করে ফেলেছে। আজকে গণতন্ত্রের প্রধান বিবেক যাকে বলা হয় সেই মিডিয়াকে তারা দলীয়করণ করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন এবং তারা অনেকটা সফলও হয়েছে।

মির্জা আলমগীর বলেন, আজকে ভয়ে কেউ মুখ খুলতে চায় না কিসের ভয়? ফ্যাসিবাদের ভয়। কথা বললেই তুলে নিয়ে যাওয়া হবে, কথা বললেই মামলা হবে।

তিনি বলেন, যারা আমাদের দেশের বুদ্ধিজীবী আছেন, অধ্যাপক আছেন কথা বলেন, বিভিন্ন জায়গায় যান, তারা আজকে কথা বলার কোনো সাহস করতে পারছেন না। কারণ তাদের কখন রাতে তুলে নিয়ে যাওয়া হবে তারা জানেন না।

মির্জা আলমগীর আরো বলেন, এটি একটি ফ্যাসিবাদী রাষ্ট্র এই রাষ্ট্রকে শুধু স্বৈরাচারের সাথে তুলনা দেয়া চলে, অন্য কিছুর সাথে নয়। সেদিন সেলিম সাহেব খুব সুন্দর একটা কথা বলেছেন- এখন রাজনীতিবিদরা রাষ্ট্র পরিচালনা করছেন না, রাষ্ট্রই রাজনীতিবিদদের পরিচালনা করছেন। এটা একটি সত্য কথা পলিটিক্স এখন রাজনীতিবিদরা চালান না, রাষ্ট্রের বিভিন্ন সংগঠন ও সংস্থা তারা এখন রাজনীতি পরিচালনা করেন।

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের সহ-সভাপতি মিজানুর রহমানের (বীর প্রতীক) সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক সাদেক খানের সঞ্চলনায় মানববন্ধনে আরো উপস্থিত ছিলেন, বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট ফজলুর রহমান, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, বিএনপির মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক সম্পাদক জয়নুল আবেদীন, বিএনপির স্বনির্ভর বিষয়ক সম্পাদক শিরীন সুলতানা প্রমুখ।

এমআই