শুধু ছাত্রলীগ-যুবলীগই নয়

আ’লীগেরও অনেকেই নজরদারিতে, সময়মত ব্যবস্থা: ওবায়দুল কাদের

আ’লীগেরও অনেকেই নজরদারিতে, সময়মত ব্যবস্থা: ওবায়দুল কাদের

শুধু ছাত্রলীগ-যুবলীগই নয়, আওয়ামী লীগেরও যারা অপকর্মে জড়িত তাদের বিরুদ্ধেও সময়মত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন দলটির সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

শুক্রবার আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি একথা বলেন।

কাদের বলেন, এখানে ঢালাওভাবে ছাত্রলীগ-যুবলীগের প্রশ্ন নয়, আওয়ামী লীগেও এসব অপকর্ম যদি কেউ করে সেটাও খোঁজ খবর তিনি (আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা) নিচ্ছেন। দুর্নীতি, অপকর্ম, শৃঙ্খলা ভঙ্গ; এসবের জন্য কিন্তু অনেকেই নজরদারিতে আছেন এবং সময়মত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

তিনি বলেন, যত বড় রাঘব-বোয়াল, গডফাদারই হোক না কেন কাউকে ছাড় দেয়া হবে না। আমাদের নেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অপকর্মের বিরুদ্ধে অন্যায়, অনিয়ম, দুর্নীতি ও অপকর্মের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি নিয়েই অগ্রসর হচ্ছেন। অনেকে বলতে পারেন যে, সরকার আসার পর তো আট মাস সময় গেল! কিন্তু আসলে কাজের প্রথম দিকেই তো অ্যাকশনটা শুরু হয়ে গেছে।

শুধুমাত্র ঢাকার নেতাদের বিরুদ্ধে এমন ব্যবস্থা কি না- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, শুধু রাজধানী কেন্দ্রিক এটা ঠিক নয়, সারাদেশে যেখানেই অপকর্ম, দুর্নীতি, অনিয়ম হবে, শৃঙ্খলা ভঙ্গ হবে, সর্বত্রই একই নিয়মে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা কার্যকর হবে। এখন যুবলীগ-ছাত্রলীগ বিচ্ছিন্ন কিছু নয়। ছাত্রলীগের দুই জনকে অব্যাহতি দেয়া, যুবলীগের একজনকে গ্রেফতার করা, ক্যাসিনো কেন্দ্রিক যে অভিযান এটা ঢালাওভাবে ছাত্রলীগ আর যুবলীগের বিরুদ্ধে নয়। ছাত্রলীগ-যুবলীগে বহু ত্যাগী নেতাকর্মী আছে, তারা অনেক ভালো কাজও করছে। এখানে দুর্নীতি, অনিময়, বিশৃঙ্খলার সঙ্গে যারা জড়িত, যাদের আচরণে পার্টি এবং সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হচ্ছে, ঠিক তাদের বিরুদ্ধেই ‘কেইস টু কেইস’ খোঁজ-খবর নিয়ে ‘অ্যাকশন’ নেয়া হচ্ছে। এটা আগেও নেয়া হয়েছে।

সেতুমন্ত্রী বলেন, এদিকে দুদকও অনেকের বিরুদ্ধে ‘অ্যাকশন’ নিতে শুরু করেছে। দুর্নীতির অভিযোগ থাকলে কারও কারও বিরুদ্ধে চার্জশিটও দেয়া হয়েছে। কারও কারও কনভিকশনও হয়ে গেছে। কাজেই সরকার এই প্রথম শুদ্ধি অভিযানে নেমেছে, তা তো না। শেখ হাসিনার সরকার প্রথম থেকেই ‘জিরো টলারেন্স’ নিয়েই অপকর্ম, দুর্নীতি, অনিয়মের বিরুদ্ধে একই মনোভাব প্রদর্শন করছে। এটা শুরু মুখের কথা নয়, আমরা ‘অ্যাকশনেই’ তা দেখাচ্ছি।

এ সময় নিজ দলের লোকদের বিরুদ্ধে শাস্তির ঘটনা বিএনপিতে নেই বলেও দাবি করেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক।

এতদিন প্রশাসন থেকে কেন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি- সংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, কেউ মদদ দিয়ে থাকলে কিংবা আশ্রয়-প্রশয় দিয়ে থাকলে পুলিশ কমিশনার বলেছেন, পুলিশের মধ্যেও যদি কেউ এসব অপকর্মের সঙ্গে জড়িত থাকে তবে পুলিশও নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করবে না। এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নিতে তাদেরও পরিকল্পনা আছে। কোন গডফাদারেরই রেহাই পাওয়ার কোনও কারণ নেই। যেই হোক তার পরিচয় গডফাদার হলেও তার রেহাই নেই।

তিনি বলেন, গুটি কয়েক মানুষের জন্য গোটা পার্টি তো বদনামের ভাগিদার হবে না। এসব অকর্ম করছে গুটি কয়েক লোক। তারা ছাত্রলীগের, যুবলীগের কিংবা আওয়ামী লীগের হোক গুটি কয়েক লোক। যারা দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করছে অপকর্ম করে। যাতে জনগণের কাছে দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হচ্ছে। অনেকেই নীরবে হয়তো অনেক কিছু হজম করছে। কিন্তু এই ‘অ্যাকশনটা’ হওয়ার পর সারাদেশে সাধারণ মানুষ খুব খুশি। যারা এমন কর্মকাণ্ড করবে, সতর্ক হবে না, প্রত্যেকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

সহযোগী সংগঠনের এমন কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ায় আওয়ামী লীগ বিব্রত কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘ইউ আর ভেরি হ্যাপী’। আমাদের সরকার প্রধানের ওপর আমরা খুব খুশি। তিনিই ‘অ্যাকশন’ নিতে পারেন, কাজেই সরকার প্রধানের ইমেজ বাড়লে আমাদের পার্টিরও ইমেজ বাড়বে।

এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন- আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও পানিসম্পদ উপমন্ত্রী একেএম এনামুল হক শামীম, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, দফতর সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপ প্রমুখ।