মাত্র তিন বছরেই ৩০টি বাড়ির মালিক আ.লীগ নেতা এনামুল!

মাত্র তিন বছরেই ৩০টি বাড়ির মালিক আ.লীগ নেতা এনামুল!

এনামুল হক এনু। তিনি পুরান ঢাকার গেন্ডারিয়া থানা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি। তার ভাই রুপন ভূঁইয়া। তিনি একই কমিটির যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক। এই দুই ভাইয়ের আরেক পরিচয় রয়েছে। তারা কাউন্সিলর এ কে এম মমিনুল হক সাঈদ ওরফে ক্যাসিনো সাঈদের ব্যবসায়িক পার্টনার।

ঢাকা ওয়ান্ডারার্স ক্লাবের ক্যাসিনোর অংশীদার। থানা পর্যায়ের আওয়ামী লীগের এই দুই নেতার টাকা রাখার জায়গা নেই। তাদের টাকায় ঠাসা একে একে পাঁচটি ভল্ট খুঁজে পেয়েছে র‌্যাব। আরো একটি ভল্টে মিলেছে স্বর্ণালঙ্কার। অত্যাধুনিক অস্ত্র আর গোলাবারুদও উদ্ধার হয়েছে তাদের বাসা থেকে।

শুধু তা-ই নয়, র‌্যাব ঢাকাতেই এনামুলের ১৫টি বাড়ির সন্ধান পেয়েছে। এনামুলের আরো অন্তত ৩০টি বাড়ি রয়েছে বলে তাদের কাছে সংবাদ রয়েছে। অভিযান পরিচালনাকারী র‌্যাব কর্মকর্তারা টাকা, অস্ত্র আর স্বর্ণালঙ্কার উদ্ধারের পর হতবাক।

স্থানীয়রা বলেছেন, আগে এই দুই ভাই ক্যাসিনোর খেলোয়াড় ছিলেন। কিন্তু পরবর্তী সময়ে তারা নিজেরাই মালিক বনে যান ক্যাসিনোর। যেন আলাদিনের চেরাগ চলে আসে হাতে। মাত্র তিন বছরেই হু হু করে বাড়তে থাকে তাদের বিত্তবৈভব। ঢাকায় একে একে বাড়ি কিনতে থাকেন তারা। মাত্র তিন বছরে এনামুল হক এনু ৩০টি বাড়ি মালিক বনে গেছেন। আজ সিঙ্গাপুর তো কাল ব্যাংকক। রাতারাতি ভাগ্যের পরিবর্তনের বিষয়টি এলাকার মানুষের চোখ এড়ায়নি।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সূত্রাপুরের বানিয়ানগরে তাদের বাড়িতে র‌্যাব অভিযান চালিয়ে তিনটি ভল্টে খুঁজে পায় ১ কোটি ৫ লাখ টাকা এবং ৭২০ ভরি স্বর্ণালঙ্কার। ছয়তলা ওই বাড়িতে অভিযান শেষে নারিন্দার লালমোহন সাহা স্ট্রিটে এনামুলের কর্মচারী আবুল কালাম কালু এবং শরৎগুপ্ত রোডে তার বন্ধু হারুনুর রশীদের বাসায় অভিযান চালায় র‌্যাব। এ সময় আরও দুটি ভল্ট থেকে মোট ৪ কোটি টাকা জব্দ করা হয়। এসব টাকা ক্যাসিনোর বলে র‌্যাবের ধারণা।

তবে র‌্যাব জানিয়েছে, অভিযুক্ত দুই ভাই, বন্ধু বা কর্মচারীদের গ্রেফতার করা যায়নি। র‌্যাবের কাছে খবর রয়েছে, ক্যাসিনোবিরোধী অভিযান শুরুর আগ মুহূর্তে কাউন্সিলর সাঈদের সঙ্গে সিঙ্গাপুর পাড়ি জমিয়েছেন তারা। আরেক ভাই রুপন দেশেই রয়েছেন। তাকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।

র‌্যাব কর্মকর্তারা বলেন, টাকা রাখার যায়গা না পেয়ে এ দুই ভাই সোনা কিনে রাখেন।

র‌্যাব জানায়, রাজধানীতে এনামুলের অন্তত ১৫টি বাসার সন্ধান পেয়েছে তারা। তবে ওয়ারী, সূত্রাপুর, গেণ্ডারিয়া, বংশাল, কোতোয়ালি এলাকায় এনামুল ও রুপনের আরো ৩০টি বাড়ি থাকার তথ্য পাওয়া গেছে। সপ্তাহখানেক আগে কাউন্সিলর এ কে এম মমিনুল হক সাঈদের সঙ্গে সিঙ্গাপুর হয়ে থাইল্যান্ড গেছেন এনামুল। তিনি সাঈদের ক্যাসিনো, চাঁদাবাজি ও বাড়ি দখল সিন্ডিকেটের অন্যতম সদস্য। তিন-চার বছর আগে তারা হঠাৎ করে ঢাকা শহরের বিভিন্ন এলাকায় বাড়ি কেনা শুরু করেন।

এমআই