বিএনপি'র ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান বলেছেন, মানববন্ধন, ছোটখাটো আন্দোলনে এই সরকারের পতন হবে না। জনগনণকে একত্রিত করে কঠিন আন্দোলনের মাধ্যমে সরকারকে ক্ষমতা থেকে সরে যেতে বাধ্য করতে হবে।
বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে দেশ বাঁচাও মানুষ বাঁচাও আন্দোলনের উদ্যোগে বিএনপি'র ভাইস চেয়ারম্যান ও কৃষকদলের আহ্বায়ক শামসুজ্জামান দুদুর বিরুদ্ধে দুদকের করা মিথ্যা মামলার প্রতিবাদে আয়োজিত মানববন্ধনে তিনি এসব কথা বলেন।
দেশ বাঁচাও মানুষ বাঁচাও আন্দোলনের সভাপতি কে এম রকিবুল ইসলাম রিপনের সভাপতিত্বে ও মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন কবিরের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে আরো উপস্থিত ছিলেন বিএনপি'র প্রশিক্ষণবিষয়ক সম্পাদক এ বি এম মোশাররফ হোসেন, মহিলা দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হেলেন জেরিন খান, মহানগর দক্ষিণ বিএনপি'র সহসভাপতি ফরিদ উদ্দিন, কৃষক দলের সদস্য মাইনুল ইসলাম, এস কে সাদী, লায়ন মিয়া মোঃ আনোয়ার, সাবেক ছাত্রদল নেত্রী আরিফা সুলতানা রুমা, পলাশ মন্ডল, মোক্তার আখন্দ প্রমুখ।
নোমান বলেন, ব্যক্তিগতভাবে মানববন্ধনে আসতে আমার মাথা নত হয়ে যায় কারণ মানববন্ধন, ছোটখাট আন্দোলনে এই সরকারের কার্যক্রম বন্ধ করা যাবে না। সরকারের পতন হবে না। কঠিন আন্দোলনের মাধ্যমে জনগণকে একত্রিত করে এই সরকারকে ক্ষমতা থেকে সরে যেতে বাধ্য করতে হবে।
বিএনপি'র ভাইস চেয়ারম্যান ও কৃষকদলের আহ্বায়ক শামসুজ্জামান দুদুর বিরুদ্ধে করা মামলার প্রতিবাদ জানিয়ে নোমান বলেন, শামসুজ্জামান দুদু জাতীয়তাবাদী দলের শুধু ভাইস চেয়ারম্যানই নন তিনি এক সময়ের তুখোড় ছাত্রনেতা এবং এই গণ আন্দোলনের সাহসী সৈনিক। তার বিরুদ্ধে দুদক মিথ্যা মামলা দিয়েছে। মিথ্যা মামলা দিয়ে তার যে গণতান্ত্রিক অধিকার তা ক্ষুন্ন করা হয়েছে। এই মিথ্যা মামলার প্রতিবাদ জানাই এবং সাথে সাথে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি চাই।
তিনি বলেন, বেগম খালেদা জিয়ার নামে যে মামলা করা হয়েছে তা রাজনৈতিক মামলা। তিনি হলেন দেশনেত্রী তার সাথে বাংলাদেশের গণতন্ত্র অতঃপ্রোতভাবে জড়িত। তিনি যাতে আবার গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত না করতে পারেন তার জন্য তাকে কারাগারে আটক করে রাখা হয়েছে । এই সরকার হচ্ছে একটি অমানবিক সরকার, এই সরকার জনগণের ভালো চায় না, এই সরকার জনগণের বিরুদ্ধে। তাই আমরা চাই দেশে জাতীয় ঐক্য গঠন করে '৭১ সালে যেভাবে ঐক্যবদ্ধ হয়েছিলাম সেভাবে ঐক্যবদ্ধ হয়ে এই সরকারের পতন করতে হবে। আর জাতি এই সরকারের পতন চায়।
তিনি আরো বলেন, এই দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে হলে একটি মধ্যবর্তী নির্বাচন ও মানুষের ভোটের অধিকার প্রয়োজন। তাই একাত্তর সালের মতো জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করে এই সরকারকে পতন করতে হবে। তাহলে দেশে গণতন্ত্র, মানুষের অধিকার, মানুষ তার স্বাধীনতা ফিরে পাবে।
বিএনপির এ ভাইস চেয়ারম্যান বলেন, বুলেটের চেয়ে শক্তিশালী ব্যালট পেপার আর সেই ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠা করার জন্য আরো কঠোর আন্দোলন করতে হবে। গণতন্ত্র মুক্তির আন্দোলনে বেগম খালেদা জিয়া নেতৃত্ব দিয়েছেন। তিনি আজ কারাগারে বন্দি তাই জাতীয়তাবাদী দল একটি সঙ্কুচিত হয়েছে। তবে যদি জাতীয়তাবাদী দল ও অন্যান্য দল জনগণকে একত্রিত করে আন্দোলন করে তাহলে মুক্তি গণতন্ত্র পাবে। তাই আসুন সকল রাজনৈতিক দল ও নেতৃবৃন্দ ছোটখাটো ভুল সংশোধন করে একত্রিত হয়ে এই সরকারের পতন ঘটাই।
নোমান বলেন, ক্যাসিনোর মাধ্যমে এ দেশে হাজার হাজার কোটি টাকা জুয়াড়িদের কাছে চলে গিয়েছে। কালো টাকায় পরিণত হয়েছে। আর এইসব টাকা জনগণের সাদা টাকা। যারা জনগণের এই সাদা টাকা কালো টাকায় পরিণত করেছে। যারা ক্যাসিনোর সাথে জড়িত তারা সবাই আওয়ামী লীগের,যুব লীগের নেতাকর্মী এটা সরকার নিজে বলেছে তাই যারা এই ক্যাসিনোর যারা প্রতিষ্ঠা করেছে যারা মূল হোতা তাদেরকে গ্রেফতার করা হোক বিচোরের আওতায় আনা হোক।
তিনি বলেন, র্যাব, পুলিশ কিছু জুয়াড়িদেরকে গ্রেফতার করে যারা মূল হোতা , যারা এ দেশের অর্থনীতিকে ধ্বংস করে দিয়েছে, দেশের রাজনৈতিক ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে দিয়েছে তাদের আড়াল করতে চাচ্ছে। এটা গণতন্ত্র হরণ করার একটি নমুনা। তিনি আরা বলেন, ছয় মাস পরে আরো হাজার হাজার গার্মেন্টস শ্রমিক বেকার হবে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ইতিমধ্যে ৫০ হাজারেরও বেশি গার্মেন্টস শ্রমিক বেকার হয়ে পড়েছে। গার্মেন্টস সেক্টর ধ্বংসের কিনারে এসে পৌঁছেছে ।এই গার্মেন্ট সেক্টরকে বাঁচাতে হলে দেশে গণতন্ত্র সরকার দরকার। গণতন্ত্র সরকার প্রতিষ্ঠা ছাড়া দেশে অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক সুষ্ঠুভাবে পরিচালিত হবে না।
এমজে/
