খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে রাজধানীতে বিএনপির বিক্ষোভ

খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে রাজধানীতে বিএনপির বিক্ষোভ

বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার নি:শর্ত মুক্তির দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে দলটি। শুক্রবার সন্ধ্যায় কেরানীগঞ্জ দক্ষিণ থানা বিএনপি ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবদলের উদ্যোগে এই বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। মিছিলটি নয়াপল্টনস্থ বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে শুরু হয়ে নাইটিঙ্গেল মোড় ঘুরে আবারো বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এসে শেষ হয়। বিক্ষোভ মিছিলে নেতৃত্ব দেন বিএনপি সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব এ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী আহমেদ।

মিছিল শেষে বিএনপি’র সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব তার বক্তব্যে বলেন, বর্তমান সরকার রহস্যজনক কারনে গত দশদিন আগে ক্যাসিনো, জুয়া এবং মাদক বিরোধী অভিযান শুরুর পর আমরা বলেছিলাম এটা আইওয়াশ মাত্র। লোক দেখানোর জন্য এসব করা হচ্ছে। এখন সেটাই বাস্তবে দেখতে পাচ্ছেন আপনারা। ক্রমেই হাস্যকর হয়ে উঠেছে এই কথিত অভিযান। ঢাক-ঢোল-তবলা বাজিয়ে কয়েকটা ‘যদু-মধু’ আটক করার পর এখন মন্ত্রীরা চিৎকার দিয়ে বিএনপি’র ঘাড়ে দোষ চাপিয়ে জনগণকে বিভ্রান্ত করার অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে। পত্র-পত্রিকা-মিডিয়ায় যেসমস্ত গডফাদারদের নাম আসছে তারা বহাল তবিয়তেই রয়েছে, কারণ এই গডফাদারদের পৃষ্ঠপোষক বর্তমান মিডনাইট সরকার।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ অবৈধভাবে ক্ষমতাসীন হওয়ার পর থেকে দেশের উন্নয়ন ঘটেছে শুধুমাত্র মদ, জুয়া ক্যাসিনো, চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজির। ঢাকায় কয়েকটি লোক দেখানো অভিযানেই তারা সীমাবদ্ধ। এই সামান্য অভিযানেই জনগণ দেখতে পেয়েছে আওয়ামী লীগ-যুবলীগ চুনোপুটি নেতাদের ঘরে ঘরে অবৈধ টাকার খনি। কাড়িকাড়ি টাকা, সোনা-দানার খনি। এখন সবার কাছে এটি স্পষ্ট যে, ব্যাংকে কেন টাকা নাই। ভুয়া উন্নয়নের ঠেলায় তাদের প্রতিটি বাড়ীই এখন টাকশাল। আওয়ামী লীগের অনেক নেতা বাড়িতে এখন টাকা গোনার মেশিন বসিয়েছে, মানুষের সম্পদ লুট করে জমানো টাকা হাতে গোনা যায় না, তাই তাদের মেশিন লাগছে! এটা দশ বছরের শিশু থেকে শত বছরের বৃদ্ধ সবাই জেনে গেছে।

রিজভী আহমেদ বলেন, দেশের সব মানুষ এখনো ভাত পায় না, লাখ লাখ মানুষের জীবন অভাব অনটনে দুর্বিষহ আর আপনাদের হাজার হাজার নেতা বিদেশে লুটের টাকায় বাড়ি কিনছে। শুধু বিদেশেই নয়, দেশেও তারা অবৈধ ক্যাসিনো উৎসবে মেতে উঠেছে। বর্তমান মিড নাইট সরকার দেশটাকে জুয়াড়ীদের আড্ডাখানায় পরিণত করেছে। এখনও মূল অপরাধীরা অধরাই থেকে গেছে। এই দেশ বেশিদিন অনাচার-অবিচার-অন্যায়-দুর্নীতি সহ্য করেনি। এদের ভয়াবহ পরিণতি এগিয়ে আসছে। সাদ্দাতের বেহেশতের মতো এই দুরাচারদের স্বর্গ যেকোন মূহুর্তে ভেঙ্গে পড়বে।

বিএনপি’র এই সিনিয়র নেতা আরো বলেন, চার বারের সর্বাধিক জনপ্রিয় প্রধানমন্ত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার ভয়াবহ অসুস্থতার পরও এই মিডনাইটের সরকার তার প্রতি আরো হিংস্র হয়ে উঠেছে। জনগণের প্রিয় নেত্রীকে অন্যায় ও অবিচারমূলকভাবে কারাগারে বন্দী রাখা হয়েছে। ব্যক্তিগত আক্রোশের শিকার দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে কারান্তরীণ রেখে তিলে তিলে নি:শেষ করতে পারলেই সরকারের লক্ষ্য পূরণ নিশ্চিত হবে। কিন্তু দেশের জনগণসহ জাতীয়তাবাদী শক্তি দেশনেত্রীকে কারামুক্ত করতে প্রবল সাহস ও উদ্যম নিয়ে রাজপথে নেমে আসবে। এ সময় খালেদা জিয়ার নি:শর্ত মুক্তির দাবি জানান রিজভী।

মিছিলে বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য এ্যাডভোকেট নিপুণ রায়, ব্যারিস্টার মীর হেলাল উদ্দিন, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবদলের সাধারণ সম্পাদক গোলাম মাওলা শাহীনসহ বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের ৫ শতাধিক নেতা-কর্মী অংশ নেন।

এমআই