ভৈরবে বিএনপি নেতা-কর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ, আহত ১০

ভৈরবে বিএনপি নেতা-কর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ, আহত ১০

ভৈরব, ৫ ফেব্রুয়ারি (জাস্ট নিউজ) : সিলেট যাওয়ার পথে বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে স্বাগত জানাতে আসা ভৈরবের বিএনপি নেতা-কর্মীদের সঙ্গে পুলিশের কয়েক দফা সংঘর্ষ হয়েছে। এতে তিন পুলিশ কর্মকর্তাসহ বিএনপির কমপক্ষে ১০ নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন। এ সময় পুলিশ ১৭টি রাবার বুলেট ছুড়ে। গ্রেপ্তার করে পাঁচ নেতাকে।

এর আগে রবিবার রাতে অভিযান চালিয়ে ভৈরব থেকে যুবদলের এক নেতা এবং কুলিয়ারচর থেকে বিএনপির এক ও যুবদলের তিন নেতাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে বেগম খালেদা জিয়া ভৈরব অতিক্রম করে চলে যাওয়ার পর পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।

স্থানীয় লোকজন জানায়, বেগম খালেদা জিয়ার সফরকে কেন্দ্র করে রবিবার থেকেই পুলিশ বেশ তৎপর ছিল। রবিবার বিকাল থেকে রাতভর ভৈরব ও কুলিয়ারচরের বিএনপি ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীদের বাড়ি বাড়ি তল্লাশি চালায় পুলিশ। তল্লাশিকালে ভৈরব শহরের দড়িচণ্ডীবের এলাকার নিজবাড়ি থেকে যুবদল নেতা মাসুদ, কুলিয়ারচরের রামদি ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি হাজি মজনু মেম্বার, যুবদল নেতা পলাশ ও গোলাম রসুলকে ভৈরব-কিশোরগঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়কের কুলিয়ারচরের ছয়সূতি ইউনিয়নের নোয়াগাঁও বাসস্ট্যান্ড এলাকা এবং যুবদল নেতা ফজলু মিয়াকে কুলিয়ারচর থেকে গ্রেপ্তার করে।

এদিকে সোমবার সকাল থেকে ঢাকা-সিলেট ও ঢাকা-ভৈরব-ময়মনসিংহ মহাসড়কের ভৈরব বাসস্ট্যান্ড এলাকায় সব যানবাহন চলাচলসহ দোকানপাট বন্ধ করে দেয় পুলিশ। এতে পুরো এলাকায় হরতাল-অবরোধের আবহ তৈরি হয়। চরম ভোগান্তির মধ্যে পড়েন বিভিন্ন এলাকায় যাতায়াতকারী লোকজন। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মানুষের চলাচলও বন্ধ করে দেয় পুলিশ। শহরের বিভিন্ন প্রবেশমুখে বিপুল পুলিশ টহল দিতে থাকে।

পুলিশের এত নজরদারীর মধ্যেও সকাল ১০টার পর থেকে মহাসড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে ভৈরব উপজেলা বিএনপির সভাপতি মো. রফিকুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক মো. আরিফুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক ভিপি সাইফুল হক, বিএনপির সভাপতি, সাবেক পৌর মেয়র হাজি মো. শাহীনের নেতৃত্বে বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদল, স্বেচ্ছাসেবক দলের বিপুল সংখ্যক নেতা-কর্মী অবস্থান নেওয়ার চেষ্টা করে। এ সময় পুলিশের সঙ্গে তাঁদের বাগবিতণ্ডা থেকে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ার ঘটনা ঘটে। একপর্যায়ে পুলিশ লাঠিপেটা করে এবং রাবার বুলেট ছুড়ে মারে। এতে ক্ষুব্ধ নেতা-কর্মীরা বৃষ্টির মতো ইট-পাটকেল ছুড়ে মারে পুলিশের ওপর।

ইট-পাটকেলের আঘাতে এক নারী পথচারী এবং ভৈরব থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ, সার্জেন্ট শাহাদাৎ হোসেন, উপপরিদর্শক আজিজুল ইসলামসহ কমপক্ষে ১০ জন আহত হন।

এ সময় ঘটনাস্থল থেকে গ্রেপ্তার করা হয় কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মাজাহারুল ইসলাম, ভৈরব উপজেলা বিএনপির সভাপতি মো. রফিকুল ইসলাম, জেলা বিএনপির সহসাধারণ সম্পাদক এডভোকেট বদরুল মোমেন মিঠু, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক ভিপি বাহার উল ইসলাম বাহার ও জেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক তারিকুজ্জামান পার্নেলকে আটক করে পুলিশ। পরে তাদের পুলিশের কর্তব্য কাজে বাধা সৃষ্টির অভিযোগে মামলা দায়েরের পর কিশোরগঞ্জ জেলহাজতে পাঠানো হয়।

এদিকে নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে এবং অবিলম্বে মুক্তির দাবিতে সোমবার দুপুর ২টার দিকে বিক্ষোভ মিছিল করেছে ভৈরব উপজেলা বিএনপি। মিছিলটি শহরের মনামরা ব্রিজ এলাকা থেকে বের হয়ে শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে। ওই বিক্ষোভ মিছিলে বিএনপিসহ ছাত্রদল, যুবদল এবং অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা অংশ নেন।

(জাস্ট নিউজ/একে/১৮২৬ঘ.)