ভারতের যা দরকার সব দিয়েছে এই সরকার: অলি আহমদ

ভারতের যা দরকার সব দিয়েছে এই সরকার: অলি আহমদ

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফর প্রসঙ্গে ২০ দলীয় জোটের অন্যতম শীর্ষনেতা, লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) সভাপতি কর্নেল (অব.) অলি আহমদ বলেছেন, ‘সরকার বারবার ভারতের কাছে কূটনৈতিকভাবে পরাজিত হয়েছে। ভারতের যা কিছু দরকার সবকিছু দিয়ে দিয়েছে এই সরকার। দেশের স্বার্থ রক্ষায় সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে সরকার।’

বৃহস্পতিবার বিকেলে জাতীয় প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি।

অলি আহমদ বলেন, ‘ভারত জানে আওয়ামী লীগ সরকার নির্বাচিত নয়, অনেকটা দুর্বল সরকার, নতজানু সরকার। সুতরাং তাদের কাছে যেকোনো জিনিস আদায় করে নেয়া সম্ভব। ভারতের সঙ্গে অনেক অমিমাংসীত ইস্যু আছে, বিশেষ করে নদীর পানি। এই সরকার ২০০৮ সালের পর থেকে ক্ষমতায় আছে, কিন্তু কোনো নদীর পানি আনতে পারেনি। অন্যদিকে ভারতের যা দরকার সবকিছু দিয়ে দিয়েছে।’

দেশে ছাত্র রাজনীতির প্রসঙ্গে এলডিপি সভাপতি বলেন, ‘সরকার ছাত্রদের হাতে অস্ত্র দিয়েছে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোকে শায়েস্তা করার জন্য। এই অস্ত্র চাঁদাবাজি ও গুন্ডামি করার পরিবেশ সৃষ্টি করে দিয়েছে। অবুঝ ছেলেমেয়েরা রাজনৈতিক দলগুলোর হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে।’

‘একশ্রেণির শিক্ষকও তাদের সঠিক পথে রাখার পরিবর্তে বিপথগামী করার ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। ফলে নতুন প্রজন্ম যারা আগামীতে সরকার পরিচালনা করবে তাদের ধ্বংস করার নীলনকশা করা হয়েছে। লেখাপড়ার পরিবেশ নষ্ট করা হচ্ছে। মান নাই বললেই চলে। জাতি হিসেবে আমরা ক্ষতিগ্রস্ত।’

তিনি বলেন, বর্তমানে প্রায় ১৪ ভিসির দুর্নীতির অভিযোগ আমরা পেয়েছি। বিশ্ববিদ্যালয়গুলো অশান্ত। সমগ্র ছাত্র সমাজ অভিভাবক অস্থিরতার মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় মারামারি, হত্যাকাণ্ড, দুর্নীতি, চাঁদাবাজি নিত্যদিনের ঘটনায় পরিণত হয়েছে। এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণ প্রয়োজন। তাই আমরা মনে করি, অদক্ষ শিক্ষকদের চাকরি থেকে বের করে দিতে হবে। দুর্নীতিবাজ ভিসিদের শাস্তির আওতায় আনতে হবে। গ্রেফতার করতে হবে, অপসারণ করতে হবে। রাজনৈতিক দলের লেজুরবৃত্তিতে অবুঝ ছেলেমেয়েদের ব্যবহার বন্ধ করতে হবে। লেজুরবৃত্তির রাজনীতি পৃথিবীর কোথাও বর্তমানে নেই। এ ব্যাপারে সরকার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে। শুধু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ওপর ছেড়ে দিলে হবে না।

অলি আহমদ বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে হলে রেইড করা হবে। অর্থাৎ ছেলেদের বলা হয়েছে তোমাদের কাছে যদি কোনো মালামাল থাকে তাহলে দ্রুত সরিয়ে ফেল, পুলিশ যাবে। ক্যাসিনোর ক্ষেত্রেও তাই হয়েছে। এক জায়গায় রেইড হয়েছে, অন্য জায়গায় শতর্ক করা হয়েছে তোমরা পালাও। কেউ ভারতে পালিয়ে গেছে।

২০ দলীয় জোটের এই নেতা বলেন, বুয়েট শিক্ষার্থী হত্যাকাণ্ডের প্রকৃত হুকুমদাতা এখন পর্যন্ত গ্রেফতার হয়নি। অনুরূপভাবে ক্যাসিনো মাদক এবং মাদক অসামাজিক কার্যকলাপে লিপ্ত গডফাদারদের আড়াল করার পাঁয়তারা চলছে। সম্রাটকে ক্যাঙারুর চামড়া রাখার দায়ে ৬ মাসের জেল দিলেও দেড় হাজার পিস ইয়াবা রাখার জন্য কোনো মামলা দেয়া হয়নি।

সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির মিয়া গোলাম পারওয়ার, কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল অব. সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহীম, জাতীয় দলের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট সৈয়দ এহসানুল হুদা, জাগপার ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আসাদুর রহমান আসাদ, এলডিপির প্রেসিডিয়াম সদস্য ইসমাইল হোসেন বেঙ্গল, জমিয়তে ওলামায়ে ইসলামের একাংশের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মনির হোসেন কাসেমী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

এমআই