আন্দোলনে নামার প্রস্তুতি নেওয়ার আহ্বান

পেঁয়াজ নিয়ে মশকরা করছে সরকার: আমীর খসরু

পেঁয়াজ নিয়ে মশকরা করছে সরকার: আমীর খসরু

বাংলাদেশে সব সময় দামি ফল হিসেবে পরিচিত আপেলের চেয়ে পেঁয়াজের দাম এখন বেশি দাবি করে বিএনপি নেতা আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, এই খাদ্যপণ্য নিয়ে জনগণের সঙ্গে ‘মশকরা’ করছে সরকার।

বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের মওলানা মোহাম্মদ আকরাম খাঁ হলে জাতীয়তাবাদী প্রজন্ম’৭১- এর উদ্যোগে ‘প্রতিহিংসার রাজনীতি ও দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া’ শীর্ষক এই আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, ‘আমরা আগে দেখেছি, কোরবানির পরে পেঁয়াজের দাম কমে যায় আর বাংলাদেশে উল্টা কারবার। বাংলাদেশে পেঁয়াজের দাম বাড়তে শুরু করেছে। প্রথমে ৬০ টাকার পেঁয়াজ দেখতে দেখতে ৭০ টাকা, ৮০ টাকা, ১০০ টাকা হয়ে এখন ১৪০ টাকায়। আজকে নাকি দেড়শ টাকা কেজি। আপেলের চেয়েও পেঁয়াজের দাম এখন বেশি। এটা তো মশকরা করা হচ্ছে।

‘পেঁয়াজের দাম যদি আপেলের চেয়ে বেশি হয় তাহলে তো মশকরার বিষয় হবেই এবং মশকরা হচ্ছে। দেশের প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে মন্ত্রীরা এটার (পেঁয়াজ) ওপর মশকরা করছেন। পেঁয়াজ খেতে মানা করছে- দাম এতো বেশি পেঁয়াজ খাইয়েন না।’

সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী আমীর খসরুর এই বক্তব্যের পর বাজারে খোঁজ নিয়ে দেখা যায়, দেশি পেঁয়াজের কেজি ১৫৮ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যেখানে দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে আমদানি করা আপেলের কেজি মিলছে ১৬৫ টাকায়।

জনগণকে তোয়াক্কা করলে কোনো মন্ত্রী পেঁয়াজ নিয়ে এভাবে কথা বলতে পারতেন না বলে মন্তব্য করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য।

তিনি বলেন, ‘কালকে ডিমের দাম বেড়ে যাবে আপনারা ডিমও খাবেন না, পরশু তেলের দাম বেড়ে যাবে তেলও খাবেন না, চালের দাম বাড়লে চাল খাবেন না। এর থেকে সহজ পন্থা দুনিয়াতে আর কোথাও আছে?

‘দাম বাড়লে দেশে সরকারের দায়িত্ব নাই? দেশে কর্মকর্তাদের দায়িত্ব নাই? আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর দায়িত্ব নাই? বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব নাই? দাম বেড়ে গেছে খাবেন না- সোজা উত্তর। দেশ কোথায় গিয়ে দাঁড়িয়েছে যে, জনগণকে তোয়াক্কা না করে এসব করছে। আমি-আমরা জনগণের তোয়াক্কা করি না, আমার জনগণের ভোটের দরকার নাই।

‘পেঁয়াজের দাম ১০০ টাকা বা ১৪০ টাকা হল তাতে কী? এটা বলতে সরকারের কোনো অসুবিধা নাই তো। যার জবাবদিহি নাই, যারা জনগণের মালিকানা কেড়ে নিয়ে নিজেরা মালিক হয়ে গেছে দেশের, তাদের তো কোনো চিন্তা নেই- কে পেঁয়াজ খেতে পারল, কে না পারল তাতে কী আছে? এটা হচ্ছে গোঁড়ার কথা। অন্য সরকারের সময় ১০ টাকা পেঁয়াজের দাম বাড়লে এটা বিরাট ইস্যু। ভারতে প্রায় সরকার পতন হয়ে যাচ্ছিল পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধির কারণে। আর এখানে মশকরা চলছে।”

পত্রিকায় খালেদা জিয়ার জামিন আবেদনের খবর প্রকাশ হলেও তা আর দেখেন না বলে জানান আমীর খসরু।

কারণ হিসেবে তিনি বলেন, ‘কোনো ফলাফল নাই বলে। কারণ দেশে আইনের শাসন নাই। সেখানে জামিনের আর্জি করা, জামিন চাওয়া বা পাওয়া বিশেষ করে বেগম খালেদা জিয়ার জন্য- হবে না। বেগম খালেদা জিয়ার জামিন আইনের মাধ্যমে হবে না। যেখানে আইনের শাসন নাই সেখানে আপনি কীভাবে জামিনটা পাবেন?

‘চোর-ডাকাতরা জামিন পেয়ে যায়, মার্ডার কেস, খুনের আসামি জামিন পেয়ে যায়। আমাদের একজন সাংসদ (হারুনুর রশীদ) জামিন পেয়ে গেছেন। আমি খুশি হয়েছি ওর জন্য, ও পাওয়ার যোগ্য। যেভাবে খালেদা জিয়াও জামিন পাওয়ার যোগ্য। কিন্তু উনি জামিন পাবেন না, উনাকে জামিন দেবে না, উনাকে চিকিৎসা দেবেন না, উনাকে তিলে তিলে জেলে মারার চেষ্টা করা হচ্ছে। এটা দিনের আলোর মতো মানুষের কাছে পরিষ্কার হয়ে গেছে।’

এই অবস্থা থেকে উত্তরণে ঐক্যবদ্ধ হয়ে আন্দোলনে নামার প্রস্তুতি নেওয়ার আহ্বান জানান আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।

সংগঠনের সভাপতি ঢালী আমিনুল ইসলাম রিপনের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক জিয়াউল হক জিয়ার পরিচালনায় আলোচনা সভায় বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ, নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ, নিপুণ রায় চৌধুরী, সাবিরা নাজমুল, কৃষক দলের ভিপি ইবরাহিম, তাঁতী দলের কাজী মনিরুজ্জামান মুনির প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

এমআই